দুদক ভূয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ যারা অনিয়ম করে প্লট বরাদ্দ নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। পাশাপাশি যারা ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ নিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছে তাদের খুঁজে বের করা হবে। তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে আরো সোচ্ছার হতে হবে।
বুধবার সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুর্নীতি দমন কার্যালয়ের প্রধান কার্যালয়ের মিডিয়া সেন্টারে মাসিক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কমিশন সচিব মো. ফয়জুর রহমান চৌধুরী এসব কথা জানান।
তিনি বলেন, প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মঙ্গলবার একজন সচিবের নামে মামলা করা হয়েছে। তদন্ত করে যদি অন্য কারো বিরুদ্ধে এমন অনিয়ম প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ভূয়া মক্তিযোদ্ধাদের সম্পর্কে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করেছেন এক লাখ মুক্তিযোদ্ধা। এখন মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা দুই লাখ। কিভাবে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা বেড়ে গেল তা খতিয়ে দেখবে দুদক। ভূয়া মক্তিযোদ্ধা প্রমাণ হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এসব বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের আরো সোচ্ছার হওয়ার আহবান জানান তিনি।
রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানার সম্পদ বিবরণী সম্পর্কে তিনি বলেন, সোহেল রানা জেলে থাকায় তার সম্পদ বিবরণী এখনো দুদকে দাখিল করেনি। তবে তার পিতার সম্পদ বিবরণী দুদকে দাখিল করেছে। রানা প্লাজার তদন্ত প্রতিবেদন অচিরেই দেয়া হবে। অবৈধ সম্পদ ও ক্ষমতার অপব্যহারের সূত্র ধরেই তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
কমিশনের কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তারা কিভাবে দুর্নীতি কমাবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে দুদক সচিব বলেন, দুদক কর্মকর্তারা ধুয়া তুলসি পাতা নয়। যদি কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির তথ্য উপাত্তসহ প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। অতীতেও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
প্রেস বিফিংয়ে জানানো হয়েছে, মার্চ মাসে ৭৪৪টি অভিযোগ কমিশনে জমা পড়েছে। যাচাই-বাছাই করে ৯ টি প্রতিবেদন অনুসন্ধানের জন্য গ্রহণ করা হয়েছে। জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত মোট দুই হাজার ১৭০টি অভিযোগ কমিশনে জমা পড়ে। এসব অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে ৪২টি প্রতিবেদন অনুসন্ধানের জন্য গ্রহণ করা হয়েছে।
মার্চ মাসে ৩৭টি মামলা দায়েরের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে ৩৭টি এবং ৪১টি চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত মোট ৭৬টি মামলা দায়েরের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ১২৩টি চার্জশিট দাখিল এবং ১১৭টি চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি মার্চ মাসে দুদকের দায়ের করা ৭ টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। এর মধ্যে দুটি মামলায় সাজা এবং ৫টি মামলায় আসামিরা খালাস পেয়েছে। জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত মোট ২৩টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। এর মধ্যে ৬ টি মামলায় সাজা এবং ১৭টি মামলায় আসামিরা খালাস পেয়েছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে অন্যান্যের মধ্যে কমিশনের উপ-পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য উপস্থিত ছিলেন।