প্রতি ১৪ নারীর একজন যৌন হয়রানির শিকার
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ আগের বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, নারীদের প্রেমিক বা স্বামীরা যৌন নির্যাতন করে থাকে৷ কিন্তু নতুন এক গবেষণা বলছে, এরা ছাড়া পরিবারের অন্য ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের হাতেও যৌন হয়রানির ঘটনা বহু নারীর জীবনে ঘটে থাকে৷
এ প্রথম পুরো বিশ্বে নারীর যৌন হয়রানি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে বুধবার৷ প্রতিবেদনের লেখকেরা বলেছেন, তথ্যভাণ্ডারে গুরুত্বপূর্ণ কিছু ফাঁক থাকা সত্ত্বেও একটা ব্যাপার পরিষ্কার৷ আর তা হলো, নারীদের যৌন হয়রানির বিষয়টি এমন একটি সমস্যা যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে এবং হচ্ছে৷
৫৬ দেশের নারীদের সাক্ষাৎকার এবং বিভিন্ন ঘটনা তদন্ত করে গবেষকেরা এ প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন৷ ৭ দশমিক ২ শতাংশ নারী যাদের বয়স ১৫ বছরের বেশি, তারা সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে, জীবনে অন্তত একবার তারা যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন এবং সেই জঘণ্য কাজটি হয়েছে প্রেমিক বা স্বামী ছাড়াও পরিবারের অন্য আত্মীয়দের হাতে৷
যৌন হয়রানির ঘটনা সবচেয়ে বেশি দেখা যায় সাহারা অধ্যুষিত আফ্রিকায়৷ মহাদেশের মধ্যাঞ্চলে ২১ শতাংশ এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় ১৭ দশমিক ৪ শতাংশ যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটে৷ তবে আফ্রিকার এ হার আপনাকে বিস্মিত না করলেও উন্নত দেশ, যেমন অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডেরে পরিসংখ্যান চমকে দেবে৷ সেখানে নারীদের প্রতি যৌন হয়রানির হার ১৬ দশমিক ৪ শতাংশ৷
গবেষকেরা দক্ষিণ এশিয়া, অর্থাৎ বাংলাদেশ ও ভারতে এ হার অত্যন্ত কম দেখেছেন, মাত্র ৩ দশমিক ৩ শতাংশ এবং উত্তর আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যে এ হার ৪ দশমিক ৫ শতাংশ৷ এছাড়া পূর্ব ইউরোপের তিনটি দেশে যৌন হয়রানির মাত্রা কম৷ লিথুয়ানিয়া, ইউক্রেন এবং আজারবাইজানে এ হার ৬দশমিক ৯ শতাংশ৷ পশ্চিমে এ মাত্রা অনেক বেশি, প্রায় ১১ দশমিক ৫ শতাংশ৷ আর উত্তর অ্যামেরিকায় যৌন হয়রানির মাত্রা আরো বিস্ময়কর, ১৩ শতাংশ৷
সাউথ আফ্রিকান মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিলের সদস্য এবং এ প্রতিবেদনের প্রধান গবেষক নাঈমা আব্রাহাম জানান, গবেষণা থেকে এটাই বোঝা যাচ্ছে যে পুরো বিশ্বে নারীদের ক্ষেত্রে যৌন হয়রানি একটা নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে৷
তিনি আরো জানান, ‘‘সঠিক তথ্য পেলে হয়ত দেখা যাবে কয়েকটি অঞ্চল, যেমন দক্ষিণ এশিয়ায় যৌন হয়রানি বা সহিংসতার মাত্রা আরো বেশি৷’
সংবাদ সংস্থা এএফপিকে একটি ই-মেলে গবেষণার সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে জানিয়েছেন নাঈমা৷
তিনি বলেছেন, ইউরোপ, ওশেনিয়া, অস্ট্রেলিয়া, নর্থ অ্যামেরিকা এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার তথ্য সঠিক হলেও দক্ষিণ এশিয়া, উত্তর ও মধ্য আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের তথ্যগুলোতে অবশ্যই ফাঁক রয়েছে৷