প্রার্থিতা ২০ অযোগ্যতায় বাতিল হবে
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পঞ্চম ধাপে ২০টি কারণে প্রার্থীদের অযোগ্য ঘোষণা করা যাবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখা।
ইতোমধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতেও নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন(ইসি)।
সহকারি সচিব আশফাকুর রহমান স্বাক্ষরিত জারি করা এক পরিপত্রেও এ নির্দেশনা দিয়েছে ইসি।
এতে বলা হয়েছে ১৯৯৮ সালের উপজেলা পরিষদ আইনের ৮ ধারা অনুসারে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অযোগ্যতা ২০টি। এর মধ্যে রয়েছে যদি কোনো সম্ভাব্য প্রার্থী বাংলাদেশের নাগরিকত্ব হারান বা পরিত্যাগ করেন, বয়স ২৫ বছর পূর্ণ না হয়, উপযুক্ত আদালত কর্তৃক অপ্রকৃতিস্থ বলে ঘোষিত হন, দেউলিয়া ঘোষিত হন বা দেউলিয়া ঘোষিত হওয়ার পর অব্যাহতি লাভ না করেন, কোনো নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অন্যূন দুই বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং মুক্তিলাভের পর যদি পাঁচ বছর অতিবাহিত না হয়, প্রজাতন্ত্রের বা পরিষদের অন্য কোনো স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কোনো লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত থাকেন, জাতীয় সংসদের সদস্য বা অন্য কোনো স্থানীয় কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বা সদস্য হন।
সম্ভাব্য প্রার্থী নির্বাচনের যোগ্যতা হারাবেন যদি তিনি বিদেশি কোনো রাষ্ট্র হতে অনুদান বা তহবিল গ্রহণ করে এ রূপ বেসরকারি সংস্থার প্রধান নির্বাহী পদ থেকে পদত্যাগ বা অবসর গ্রহণ বা পদচ্যুতির পর এক বছর অতিবাহিত না হয়।
এ ছাড়া প্রার্থী যদি সমবায় সমিতি এবং সরকারের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি ব্যতীত সংশ্লিষ্ট উপজেলা এলাকায় সরকারকে পণ্য সরবরাহের জন্য বা সরকার কর্তৃক গৃহীত কোনো চুক্তির বাস্তবায়ন বা সেবা কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য তার নিজ নামে বা তার ট্রাস্টি হিসেবে কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের নামে বা তার সুবিধার্থে বা তার উপলক্ষে বা কোনো হিন্দু যৌথ পরিবারের সদস্য হিসেবে তার কোনো অংশ বা স্বার্থ বা আছে এ রূপ চুক্তিতে আবদ্ধ হন।
তবে সম্ভাব্য প্রার্থী অযোগ্য হবেন না, যদি চুক্তির অংশ বা স্বার্থ তার উত্তরাধিকারসূত্রে বা উইলসূত্রে প্রাপক, নির্বাহক বা ব্যবস্থাপক হিসেবে হস্তান্তরিত হয় এবং স্থানান্তরিত হওয়ার পর ছয় মাস সময় অতিবাহিত হয়, কোম্পানি আইন ১৯৯৪ অনুসারে কোনো পাবলিক কোম্পানির দ্বারা বা পক্ষে চুক্তিটি সম্পাদিত হয়েছে, যাতে তিনি একজন শেয়ারহোল্ডার মাত্র, তবে এর অধীন কোনো লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত পরিচালকও নন বা ম্যানেজিং এজেন্টও নন অথবা তিনি কোনো যৌথ হিন্দু পরিবারের সদস্য হিসেবে চুক্তিটিতে তার অংশ বা স্বার্থ নেই এ রূপ কোনো স্বতন্ত্র ব্যবসা পরিচালনাকালে পরিবারের অন্য কোনো সদস্য কর্তৃক চুক্তি সম্পাদিত হয়ে থাকে।
সম্ভাব্য প্রার্থীর পরিবারের কোনো সদস্য সংশ্লিষ্ট উপজেলার কার্য সম্পাদনে বা মালামাল সরবরাহের জন্য ঠিকাদার নিযুক্ত হন বা এর জন্য নিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অংশীদার হন বা উপজেলার কোনো বিষয়ে কোনো প্রকার আর্থিক স্বার্থ থাকে, তবে ওই প্রার্থী নির্বাচনের অযোগ্য হবেন। এখানে পরিবার বলতে প্রার্থীর ওপর নির্ভরশীল তার পিতা, মাতা, ভাই, বোন, স্ত্রী, পুত্র ও কন্যাকে বোঝানো হয়েছে।
সম্ভাব্য প্রার্থী নিজস্ব বসবাসের জন্য গৃহনির্মাণের ঋণ বা ক্ষুদ্র কৃষি ঋণ ছাড়া মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার তারিখে কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে গৃহীত কোনো ঋণ মেয়াদোত্তীর্ণ অবস্থায় যদি অনাদায়ী রাখেন, তবে তিনি যোগ্যতা হারাবেন।
যদি প্রার্থী এমন কোনো কোম্পানির পরিচালক বা ফার্মের অংশীদার হন, যার কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হতে গৃহীত কোনো ঋণ বা কোনো কিস্তি, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার তারিখে পরিশোধে খেলাপী হন, তবে তিনি প্রার্থী হতে পারবেন না।
অন্যদিকে পরিষদ হতে কোনো ঋণগ্রহণ করে তা অনাদায় হলে, দায়কৃত অর্থ পরিষদকে পরিশোধ না করলে, উপজেলা পরিষদের তহবিল তসরূফের কারণে দণ্ডপ্রাপ্ত হন, যদি বিগত পাঁচ বছরের মধ্যে দণ্ডবিধির ১৮৯, ১৯২, ২১৩, ৩৩২, ৩৩৩ ও ৩৫৩ ধারার অধীনে দোষী সাব্যস্ত হয়ে সাজাপ্রাপ্ত হন, জাতীয় বা আন্তর্জাতিক আদালত বা ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে দোষী সাব্যস্ত হন এবং কোনো আদালত কর্তৃক ফেরারি আসামি হিসেবে ঘোষিত হলেও কোনো ব্যক্তি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা হারাবেন।
এদিকে কোনো সরকারি বা আধা-সরকারি দপ্তর, কোনো সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, সমবায় সমিতি বা প্রতিরক্ষা কর্ম বিভাগের চাকরি থেকে নৈতিক স্খলন, দুর্নীতি, আসদাচরণ ইত্যাদি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে চাকরিচ্যুত বা অপসারিত বা বাধ্যতামূলকভাবে অবসরপ্রাপ্ত হন এবং তার চাকরিচ্যুতি, অপসারিত হওয়ার বা বাধ্যতামূলকভাবে অবসরপ্রাপ্ত হওয়ার পর পাঁচ বছর অতিবাহিত না হয়, তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিও উপজেলা পরিষদের ওই দুই গুরুত্বপূর্ণ পদে নির্বাচন করতে পারবেন না।
ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার এক কর্মকর্তা এ বিষয়ে বলেছেন, ইতোমধ্যে কমিশনের এ বিষয়গুলোর আলোকে রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের সম্ভাব্য প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমেই প্রার্থীতা বাতিল করে চূড়ান্ত প্রার্থী নির্ধারিত করেছিল। এবারও একইভাবে পঞ্চম ধাপের চূড়ান্ত প্রার্থী বাছাই করা হবে।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয় নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার সিনিয়র সহকারি সচিব বলেন, আজ ৫ মার্চ্ পঞ্চম ধাপের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের শেষ দিন, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১২ মার্চ এবং ভোট ৩১ মার্চ্।
সচিব আরো বলেন, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে প্রার্থীদের ২০টি অযোগ্যতার কারণেই সম্ভাব্য প্রার্থীদের অযোগ্য করা হবে। এতে প্রার্থীর সংখ্যা কমে আসবে।