কেজরিওয়ালের গাড়িতে হামলা বিজেপির সঙ্গে সংঘর্ষ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ গুজরাট সফররত আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গাড়িবহরে হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার রাতে গুজরাটের খারোহিতে কেজরিওয়ালের গাড়ির কাঁচ ভেঙে দিয়েছে হামলাকারীরা। আপের স্বেচ্ছাসেবকদের ওপরেও হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় আহত একাধিক আপ সমর্থককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আপ নেতারা এ হামলার জন্য বিজেপিকে দায়ী করেছে। এছাড়া, পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আপ নেতা প্রশান্ত ভূষণ।
গুজরাটকে ‘উন্নয়নের মডেল’ হিসেবে বরাবরই দাবি করে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর সেই দাবির সত্যতা যাচাই করতে ৪ দিনের গুজরাট সফরে গেছেন কেজরিওয়াল। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে কৃষক ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে তার। সেই পরিকল্পনার প্রথম পর্বে আহমেদাবাদ থেকে সড়ক পথে ভুজে যাওয়ার কথা ছিল কেজরিওয়ালের। রাধানপুরে আম আদমি পার্টির কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে মিছিল করার সময় গতকাল কেজরিওয়ালকে বাধা দেয় পুলিশ। পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। এরপর অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে রাধানপুর থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। যদিও কিছুক্ষণ পর তাঁকে ছেড়ে দেয়া হয়।
এ সময় গুজরাট সরকারের সমালোচনা করে আপ নেতা বলেন, এখানে কোনো উন্নয়ন হয়নি। মোদী কৃষক ও জনবিরোধী নেতা। গুজরাটে শুধুই শিল্পপতিরা লাভবান হয়েছেন। মোদী সারা দেশে প্রচার মিছিলে গুজরাটের উন্নয়ন সম্পর্কে অবাস্তব দাবি করেছেন বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
কেজরিওয়ালকে আটক করা নিয়ে গুজরাট পুলিশের দাবি- তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনী আচরণ বিধি থেকে কার্যকর হয়ে গেছে। তাই পদযাত্রার বিষয়ে পুলিশের কাছে অনুমতি নেয়ার দরকার ছিল আপের। কিন্তু পুলিশের কাছ থেকে অনুমতি নেননি আপ নেতৃত্ব। তাই কেজরিওয়ালকে আটক করা হয়েছে। পরে অবশ্য পুলিশ জানায়, কেজরিওয়ালের রোড শো-এর ফলে ব্যাপক যানজট হয়েছিল। তাই কেজরিওয়ালের শোভাযাত্রাকে পথ দেখিয়ে নিয়ে যেতে চায় প্রশাসন। তাকে আটক করা হয়নি।
পুলিশ ওই দাবি করলেও এ নিয়ে বিক্ষোভের রেশ পড়ে দিল্লিতেও। দিল্লিতে অশোকা রোডে বিজেপির পার্টি অফিসে হামলা করে আপ সমর্থকরা। পাল্টা প্রতিবাদ জানানো হয় বিজেপির পক্ষ থেকেও। শুরু হয় দু’পক্ষের মধ্যে ইট ও চেয়ার ছোড়াছুড়ি। অশোক রোডে দু’পক্ষের সমর্থকদের লাঠি হাতে মারপিট করতেও দেখা যায়। প্রথম দফায় অল্প সংখ্যায় পুলিশ পাঠানোয় তারা পরিস্থিতি সামলাতে পারেনি। পরে বিশাল পুলিশবাহিনী পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দিল্লিতে সংঘর্ষের জেরে দু’পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হন। কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনায় দিল্লি পুলিশের কাছে রিপোর্ট চেয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন।
দিল্লির পাশাপাশি লখনৌতেও সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন দু’দলের সমর্থকরা। দিল্লিতে বিজেপি সমর্থকরা বেকায়দায় পড়লেও লখনৌতে বিজেপি সমর্থকদের হাতে বেধড়ক মার খায় আপ সমর্থকরা। এছাড়া, কানপুর ও এলহাবাদেও বিজিবি কার্যালয় ঘেরাও করে আপ সমর্থকরা। ঘটনার পর কেজরিওয়াল তাঁর সমর্থক ও স্বেচ্ছাসেবকদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘জীবন বিলিয়ে দাও, তবু হাত তুলো না।’ সহিংস ঘটনার জন্য ক্ষমাও চেয়েছেন কেজরিওয়াল।