বিশ্বকাপটা কঠিন হবে
স্পোর্টস ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ টানা ৭ ওয়ানডে হেরে বিশ্বকাপের মতো বড় টুর্নামেন্টে অংশ নিচ্ছে সাকিব-মুশফিকরা। তবে টোয়েন্টি-২০ বিশ্বকাপে ফিরে আসা নিয়ে আত্মবিশ্বাসের কমতি নেই মুশফিকবাহিনীর।
এমন হারের পর কেমন অবস্থায় টোয়েন্টি-২০ বিশ্বকাপ খেলতে নামবে বাংলাদেশ?
এমন বাজেভাবে বিশ্বকাপ খেলতে নামব এমন কখনও আশা করিনি। যদিও এটা অন্য ফরম্যাটের খেলা। তারপরও জয়ের মধ্যে থাকলে টোয়েন্টি-২০ ফরম্যাটে একটু সুবিধা হয়। অনেক স্বাধীনতা ও রিস্ক নিয়ে টোয়েন্টি-২০ খেলতে হয়। কেননা আত্মবিশ্বাস না থাকলে বিষয়গুলো ক্লিক করে না। তামিম-মাশরাফি-সাকিব-গাজীদের নিয়ে মাঠে নামব। আমাদের হাতে ১০ দিন সময় আছে। এর মধ্যে কিছু কাজ আছে যা আমাদের শেষ করতে হবে। আমাদের মানসিক-শারীরিক-টেকনিক্যাল সবদিক মিলে যেন আমরা প্রস্তুতি নিতে পারি। কারণ বিশ্বকাপটা আমাদের জন্য সহজ হবে না।
টানা খেলার কারণে কি কোনো সমস্যা হচ্ছে?
ক্লান্তি তেমন না। আমি মনে করি, শারীরিক ক্লান্তি থেকে মানসিক ক্লান্তিটাই একটু বেশি। বার বার এত কাছে গিয়ে হেরে যাচ্ছি; মানসিক এ বাধাটা আমরা ওভার কাম করতে পারছি না। এটাও একটি শিক্ষা আমাদের জন্য।
এত কাছে গিয়ে হেরে আমরা কি শিখছি?
কাছে গিয়ে হারটা খুবই দুঃখজনক। তবে আমরা ধারাবাহিক পারফরম্যান্স করছি। আমাদের দলের এর চেয়ে আরও ভালো পারফরম্যান্স করার ক্ষমতা ছিল। যে জায়গায় গিয়ে আমরা; যে কয়টা ম্যাচ হেরেছি সেটা মানসিক শক্তির কারণেই। তবে এত ক্লোজ ম্যাচ খেলে মানসিক শক্তি বাড়ছে আমাদের।
এভাবে হারের পর কি আমরা আগের অবস্থায় ফিরে যাচ্ছি?
এ চিন্তা কখনই করিনি। আমরা এখন এমন শক্তিশালী; আমাদের ঘরের মাটিতে যে কোনো দেশের বিপক্ষে লড়াই করার ক্ষমতা রয়েছে। আমরা জেতার জন্য পুরোপুরিই চেষ্টা করি। হয়ত আমাদের ফল আসছে না। এটার কারণও আছে। কেউ ইনজুরিতে, আবার কেউ ফর্মে নেই। আমি মনে করি একটা খারাপ কম্বিনেশনের মধ্য দিয়ে; সাথে কিছু ভুল এবং দুর্ভাগ্য এ কারণেই দল হিসেবে আমরা ভালো পারফরম্যান্স করতে পারিনি।
দ্রুত উইকেট পড়ে যাওয়ার পরও আমরা পরের উইকেটগুলো নিতে পারছি না; সেটা প্রতিপক্ষ দলের জন্য সহজ হচ্ছে কিনা?
তাদেরকে গিভ আপ করার মতো তো কোনো বিষয় নয়। প্রতিপক্ষ দল তো এখানে খেলতে এসেছে। আমাদের মতো উইকেট বিলিয়ে দিতে আসেনি। আমার মনে হয় জুটি হতেই পারে। আমরা চেষ্টা করছি কিনা সেটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। পুরো ৪টি ম্যাচই আমরা আমাদের সামর্থ্য্ অনুযায়ী চেষ্টা করেছি কিন্তু দুভ্যার্গবশত হয়নি। জুটি হতেই পারে। হয়ত সঠিক সময়ে ব্রেকথ্রোটা আসেনি।
ক্যারিয়ারের বাজে সময় কিনা?
ফলাফলের দিক দিয়ে বলতে পারেন বাজে। একটা ম্যাচও আমরা জিতিনি। আফগানিস্তানের সঙ্গে হারের পর আমরা যেভাবে ২টি ম্যাচ ব্যাটিংসহ অন্য বিষয়গুলো উন্নতি করেছি। এটা প্রমাণ করে আমরা হয়ত আরও কঠিন পরিশ্রম করলে, মানসিকভাবে শক্তিশালী হলে, সবাই সহযোগিতা করলে ভালো খেলতে পারি। আমি বলব আমরা আনলাকি। আমার মনে হয় আমরা শতভাগ খেলতে পারিনি। গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে আমরা যে ভুলগুলো করেছি বড় দলের সঙ্গে, সেখান থেকে ক্যামব্যাক করাটা খুব কঠিন। ব্যাটিংয়ে আমাদের ভুল ছিল, ফিল্ডিংয়েও ছিল। আর বোলিংয়ে কিছু মিসটেক ছিল। সামনে টোয়েন্টি-২০ বিশ্বকাপ। আমাদের হাতে ১০টি উইকেট আছে। আশা করছি এর ভেতরে যতটুকু সম্ভব ক্যামব্যাক করার।
৪৯তম ওভার সানিকে না করিয়ে মাহমুদুল্লাহকে না দেওয়ার কারণ কি ছিল?
রিয়াদ ভাই তো জেনুইন বোলার না। আপনারা জানেন সানি মূল বোলার। রাজ ভাইয়ের চেয়ে অনেক ভালো বল করছে ও। তার তো অবশ্যই দায়িত্ব যে তিনি পাওয়ার প্লেতে বল করবেন। আমি যা করেছি বলব সেটা শতভাগ সঠিক। রিয়াদ ভাই ভালো বল করেছিল। আমার মনে হয়েছিল রিয়াদ ভাইয়ের জন্য অনেক বেশি রিস্ক। পাওয়ার প্লেতে অনিয়মিত বোলার দিয়ে কেউ বল করায় না।
কাছাকাছি গিয়ে হেরে খারাপ লাগাটা আসলে কেমন?
খারাপ তো অবশ্যই লাগে। এত কাছে গিয়ে হার এর চেয়ে মনে হয় খারাপ আর কিছু হতে পারে না। দল হিসেবে আমাদের ক্ষমতা আরও বেশি ছিল। যদি এমন হতো আমাদের কোনো ক্ষমতাই নাই ওদের সঙ্গে শেষ করার, তবে এতটা কষ্ট লাগত না। খারাপ লাগাটা অনেক বেশি ও দ্বিগুন। আমরা কিছু কিছু ক্ষেত্রে আনলাকি ছিলাম। কিছু কিছু জায়গায় আমাদের ফিল্ডিংয়ে একটু মিসটেক হয়ে গেছে। কিছু জায়গায় আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত আমাদের পক্ষেও আসেনি। আমাদের ব্যাটসম্যানদেরও কিছু ভুল ছিল। ওভারঅল বলব খুব খারাপ লাগছে। ৪টি ম্যাচে একটু এদিক সেদিক হলে আমাদের পক্ষে ৩টি রেজাল্ট আসতে পারত। কমিটমেন্টের কথা বললে বলব খেলোয়াড়রা শতভাগ চেষ্টা করেছে। আমি অধিনায়ক হিসেবে খুশি। আমার মনে হয় মাঠের বাইরে মাঠের ভেতরে যারা পরিশ্রম করেছে, সবারই খারাপ লাগে তবে খেলোয়াড়দের চেয়ে বেশি খারাপ কারো লাগে না। আমরা জানি আমাদের দিকে পুরো দেশ তাকিয়ে আছে। আমি বলব, বোর্ডের সাপোর্ট আমাদের পক্ষেই ছিল। শুধুমাত্র আমাদের ফলাফল হয়নি। এ জন্য মনে হচ্ছে আমাদের সবকিছু এলোমেলো হয়ে গেছে। একটা ফল আমাদের পক্ষে আসলেই সব ঠিক হয়ে যাবে।