ভারতের নির্বাচনে দুর্নীতিই প্রধান ইস্যু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ ভারতে লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘন্ট ঘোষিত হওয়ার পরে অনেক দলই তাদের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে প্রচার শুরু করে দিয়েছে আজ থেকেই।

দুর্নীতি আর সুশাসন ও উন্নয়ন – এই প্রশ্নই এবারের নির্বাচনে কেন্দ্রীয় ইস্যু হয়ে উঠতে চলেছে। অন্যদিকে এখনও চলছে জোট গড়া আর আসন ভাগাভাগির আলোচনা।

আঞ্চলিক দলগুলো এবারের নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ নির্নায়কের ভূমিকা নেবে, কিন্তু জাতীয় স্তরে জোটের ছবিটা এখনও অস্পষ্ট।

“দুর্নীতিই এই নির্বাচনে সবথেকে বড় জাতীয় ইস্যু হয়ে উঠেছে। ”

অধ্যাপক সব্যসাচী বসুরায়চৌধুরী, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য

ভারতীয় জনতা পার্টির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী ও গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অথবা কংগ্রেস দলের প্রচারাভিযানের প্রধান মুখ রাহুল গান্ধী – গত কয়েক মাসে সারা দেশে ঘুরে ঘুরে যেসব জনসভা বা দলীয় সভা করছেন, সেগুলোতে প্রায় একই ধরনের বক্তব্য উঠে আসছে।

বি জে পি তুলে ধরছে গত দশ বছর ধরে ক্ষমতাসীন কংগ্রেসের একের পর এক দুর্নীতি আর কেলেঙ্কারী, অন্য দিকে গুজরাতের উদাহরণ তুলে ধরে বলা হচ্ছে তারা কত ভাল শাসন ব্যবস্থা দিতে পারবে।

কংগ্রেসও দশ বছর ধরে তাদের আমলে যেসব জাতীয় স্তরে উন্নয়ন প্রকল্প গড়েছে – যেমন গ্রামীন রোজগার যোজনা বা স্কুল পড়ুয়াদের জন্য দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা – এসব তুলে ধরছে।

রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক সব্যসাচী বসুরায়চৌধুরী বিবিসিকে বলছিলেন দুর্নীতিই এই নির্বাচনে সবথেকে বড় জাতীয় ইস্যু হয়ে উঠেছে।

তাঁর কথায়, “গত দশ বছর ধরে ইউ পি এ ক্ষমতায় ছিল আর বারে বারেই দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তাই দুর্নীতিটা একটা বড় ইস্যু। এছাড়াও সুশাসন আর উন্নয়ন এটাও একটা ইস্যু।“

“আঞ্চলিক দলগুলো নির্বাচনের সময়ে খুব গুরুত্ব পাচ্ছে।”

রজত রায়, রাজনৈতিক বিশ্লেষক

আশির দশকের শেষভাগ থেকেই ভারতে জোটবদ্ধ হয়েই জাতীয় দলগুলোকে ক্ষমতায় যেতে হয়েছে – আর সেই জোটের ছবিটা অনেক আগে থেকেই স্পষ্ট হয়ে যেত।

কিন্তু বিশ্লেষকেরা বলছেন আঞ্চলিক দলগুলে যত শক্তিশালী হয়েছে, ততই ভোটের আগে কে কোন পক্ষে থাকছে, সেটা অস্পষ্ট হতে শুরু করে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক রজত রায়ের কথায়, “দেখা যাচ্ছে আঞ্চলিক দলগুলো নির্বাচনের সময়ে খুব গুরুত্ব পাচ্ছে। পাঁচজন সংসদ সদস্য থাকলেও তাদের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, অথবা তিনজন সদস্য আছে এমন দলও মন্ত্রী পেয়ে যাচ্ছে। তাই দুটো বড় জোট থাকা স্বত্ত্বেও পুরো অবয়বটা স্পষ্ট হচ্ছে না।“

জাতীয় স্তরে এই জোট রাজনীতিতে জড়িয়ে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের দুই প্রধান প্রতিপক্ষ – তৃণমূল কংগ্রেস আর বামফ্রন্ট।

অ-কংগ্রেসী ও অ-বি জে পি শক্তিকে জোটবদ্ধ করতে চেষ্টা করছে সি পি আই এম আর মমতা ব্যানার্জী দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলনের নেতা আন্না হাজারেকে সঙ্গে নিয়ে ছোট আঞ্চলিক দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে এগতে চাইছেন।

পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মেরুকরণ স্পষ্ট হলেও জাতীয় স্তরে সেই মেরুকরণ ভোটের আগে স্পষ্ট হবেও না। কে কার সঙ্গে থাকবে, তা চূড়ান্ত রূপ পাবে ফল ঘোষণা পরেই – এমনটাই বলছেন বিশ্লেষকরা।

নিজের শক্তি যাচাই করে নিয়েই জাতীয় স্তরের দলগুলোর সঙ্গে দর কষাকষিতে যাবে আঞ্চলিক দলগুলো।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ