পাকিস্তান সমর্থক ৬৭ ছাত্রের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের মামলা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচে পাকিস্তানকে সমর্থন করার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার হওয়া ৬৭ জন কাশ্মীরি ছাত্রের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের মামলা করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। খবর দৈনিক আনন্দবাজার।
শুক্রবার পত্রিকাটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জামিন অযোগ্য ধারায় অভিযুক্ত ওই ছাত্ররা। দেশদ্রোহে অভিযুক্তদের সর্বনিম্ন শাস্তি তিন বছরের কারাদণ্ড, যাবজ্জীবনও হতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত রোববার ক্রিকেট ম্যাচ চলার সময় পাকিস্তানের সমর্থনে গলা ফাটানো কাশ্মীরি ছাত্রদের ওপর হামলা করে মেরঠের স্বামী বিবেকানন্দ শুভার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য ছাত্ররা। দুই পক্ষের মারামারি, ভাঙচুরে অভিযোগ ওঠে ৬৭ ছাত্রের বিরুদ্ধে। তাদের ৩ দিনের জন্য বহিষ্কারও করা হয়।
এতে বলা হয়, তাদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের মামলা আনা হলে এই পদক্ষেপের নিন্দায় সরব হয়েছে জম্মু ও কাশ্মীরের রাজনৈতিক দলগুলি।
মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা জানান, এ শাস্তি মোটেই বাঞ্ছনীয় নয়। ছাত্রদের ভবিষ্যত শেষ হয়ে যাবে। বিষয়টি নিয়ে অখিলেশ যাদবের সঙ্গেও কথা হয়েছে।
আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে জম্মু ও কাশ্মীরের পিপল্স ডেমোক্র্যাটিক পার্টিও। দলের প্রধান মুখপাত্র নঈম আখতার বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শুধু কাশ্মীরি ছাত্রদেরকেই অভিযুক্ত সাব্যস্ত করেছেন। ঘটনার সম্পূর্ণ তদন্ত না করেই ছাত্রদের পুরো দলটিকে সাসপেন্ড করে দিয়েছেন। এটা ফাসিস্ট মনোভাবের পরিচয়। …আর এই ঘটনায় কাশ্মীরি ছাত্রদের বিরোধিতা করে রাজনৈতিক ফায়দা তুলছে সমাজবাদী পার্টি ও বিজেপি।
একই বক্তব্য শাসক দল ন্যাশনাল কনফারেন্সেরও। দলের সাধারণ সম্পাদক শেখ মুস্তাফা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, ছাত্রদের অবিলম্বে ফিরিয়ে নিতে।
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পাকিস্তানও। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তনসিম আসলাম জানিয়েছেন, কিছু কাশ্মীরি ভারত-পাক ক্রিকেট ম্যাচে পাকিস্তানকেই সমর্থন করে। এটা নতুন কিছু নয়। তার জন্য ছাত্রদের বহিষ্কার করে দেয়া ঠিক নয়।
ক্রিকেট ম্যাচে একটা দলকে সমর্থন করলে যদি দেশদ্রোহিতা করা হয়- তবে তা দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেন তিনি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মুখ খুলেছেন অভিযুক্ত ছাত্ররাও। গুলজার ও মাতিফ নামে দুই ছাত্র জানিয়েছেন, নিরাপত্তার নিশ্চয়তা না পেলে মেরঠে ফিরতে রাজি নন তারা। খেলায় একটা ভাল দলকে সমর্থন করায় বেআইনিভাবে অভিযোগ এনেছে পুলিশ।
অন্যদের বক্তব্য, আমরা কোনও অন্যায় করিনি। আমরা জঙ্গি নই। কাশ্মীরি এবং ক্রিকেট ম্যাচে পাকিস্তানকে সমর্থন করি। এই কারণে হেনস্থা করা হচ্ছে আমাদের।