মধ্যপ্রাচ্যে কাতার কি একঘরে হয়ে পড়বে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ কেবল মধ্যপ্রাচ্যের নয়, বিশ্বের অন্যতম ধনী দেশ কাতার। পেট্রাডলারের দেশটি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মিলিয়নিয়ারের বসবাসের স্থান। মাথাপিছু আয়েও অনেক উপরের দিকে এর অবস্থান। অর্থের জোরের কারণে ক্ষুদ্র দেশ হয়েও বিশ্ব কূটনীতিতে নিজেদের অবস্থান পাকা করার চষ্টো করে যাচ্ছে দোহা।

তালেবান-যুক্তরাষ্ট্র আলোচনায় মধ্যস্ততা করা ছাড়াও বিভিন্ন মুসলিম দেশের সমস্যা সমাধানে এগিয়ে এসেছে কাতার। মিসরের মুসলিম ব্রাদারহুডকে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়ে আসছে দেশটি। পাশাপাশি সিরিয়ার ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশ থেকে ভিন্ন অবস্থান গ্রহণ করে আসছে তারা। মুসলিম ব্রাদারহুডের সদস্যদের আশ্রয়ের পাশপাশি সৌদি ও আমিরাতের সমালোচকদের স্থান দিয়ে আসছে দোহা।

মাঝে অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের চাপের কারণে পরিবর্তন এসেছে দেশটির ক্ষমতায়। নিজ ছেলে শেখ তামিমের কাছে ক্ষমতা দিয়ে ২০১৩ সালের মাঝামাঝি বিদায় নিয়েছেন শেখ হামাদ বিন খলিফা আল থানি। তবে পরিবর্তন আসেনি তাদের নীতিতে। পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলোর নিজেদের মধ্যে কিছুটা মতবিরোধ থাকলে মার্কিন বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে সবাই শক্ত অবস্থানে রয়েছে।

এরই মধ্যে ২০২২ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজক হওয়ার মতো গৌরবান্নিত দায়িত্ব পেয়েছে কাতার। ফলে মধ্যপ্রাচ্যে তাদের অবস্থান আরও দৃঢ় হওয়ার দিকেই যাচ্ছিল। তবে এরই মধ্যে সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে পারস্য উপসাগরীয় কয়েকটি দেশ কাতারের বিরুদ্ধে নিজেদের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের মতো ইঙ্গিত করায়।

সৌদি আরব, আরব আমিরাত ও বাহরাইন কাতার থেকে নিজেদের রাষ্ট্রদূতদেরকে প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। দেশগুলোর দাবি পরস্পরের নিরাপত্তা ও অপরাধীদের বিষয়ে তথ্য বিনিময়ের বিষয়ে পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলোর সহায়তা সংস্থার (জিসিসি) এক চুক্তিতে স্বাক্ষর করছে না কাতার। ফলে নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়ায় কাতার থেকে নিজেদের রাষ্ট্রদূত সরিয়ে নেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়।

প্রভাবশালী এ তিনটি দেশ কাতার থেকে রাষ্ট্রদূত সরিয়ে নেয়ার ঘোষণা দেয়ায় বিস্মিত দেশটি। কিন্তু দোহা এসব দেশের কথা মেনে তার পররাষ্ট্রনীতিতে কোন পরিবর্তন আনবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে কাতারের মন্ত্রিসভা। একইসঙ্গে এসব দেশ থেকে নিজেদের রাষ্ট্রদূতও প্রত্যাহার করবে না বলেও জানিয়েছে কাতার।

এদিকে সৌদি আরব, আরব আমিরাত ও বাহরাইনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে কাতারে নিজেদের রাষ্ট্রদূত ফেরত না পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে সেনা সমর্থিত মিসর। তবে যে যাই বলুক নিজেদের নীতি থেকে সরবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে কাতার। দেশটি কারো তাবেদারি করবে না বলে মন্ত্রিসভা সূত্রে আভাস পাওয়া গেছে। তবে কি মধ্যপ্রাচ্যে একঘরে হয়ে পড়তে যাচ্ছে কাতার।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ