আজ ঐশীকে প্রধান আসামি করে চার্জশিট দাখিল হচ্ছে

রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ পুলিশ (সিআইডি) কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান দম্পতি হত্যার দায়ে মেয়ে ঐশী রহমানকে প্রধান আসামি করে রোববার দুটি চার্জশিট আদালতে দাখিল করা হচ্ছে। এবিসি নিউজ বিডিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তারা।

আদালতে দাখিল হতে যাওয়া দুটি চার্জশিটেই ঐশীকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।এছাড়া তার বন্ধু জনি, রনি ও গৃহকর্মী সুমীকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে।

চার্জশিটে বলা হয়েছে, ঐশী একাই তার বাবা-মাকে হত্যা করেছে। ঘটনার আগে ঐশী তাদের ৬০টি ঘুমের ট্যাবলেট মিশ্রিত কফি খাইয়েছিল। রাসায়নিক পরীক্ষায় ঘুমের ওষুধে নাইট্রাস, টেনিন ও ট্রমাজিপাম-৩ থাকার প্রমাণ মিলেছে। কফি খাওয়ানোর মগটিও জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া স্বপ্না রহমানের চুড়ি ও ঐশীর রক্তমাখা কাপড়ের সঙ্গে তার রক্তের মিল পাওয়া গেছে। মামলার বিভিন্ন আলামত সংগ্রহে আটটি জব্দ তালিকা করা হয়েছে।

গৃহকর্মী সুমী ছাড়া ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নিহত দম্পতির ছোট ছেলে ঐহী রহমানের সাক্ষ্যও নেয়া হয়। মামলার একমাত্র সাক্ষীই ঐহী।

সূত্র আরো জানায়, গৃহকর্মী সুমী এ হত্যায় প্রধান সহায়তাকারী ও মামলার অন্যতম সাক্ষী। অন্যদিকে ঐশীর বন্ধু জনি প্ররোচনাকারী ও রনি আশ্রয়দাতা বলে অভিযুক্ত হয়েছে। তারা সরাসরি এ হত্যায় জড়িত ছিল না।

গত বছর ২৪ অক্টোবর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে ঐশী ও সুমী।এছাড়া ডিএনএ টেস্ট ও রাসায়নিক পরীক্ষায় এ হত্যার সঙ্গে ঐশীর সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মিলেছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ডিবি পুলিশ পরিদর্শক আবুল খায়ের জানান, দীর্ঘ তদন্ত শেষে রোববার আদালতে দুটি চার্জশিট জমা দেয়া হচ্ছে। এ হত্যায় প্রধান অভিযুক্ত হচ্ছে- নিহত পুলিশ দম্পতির একমাত্র মেয়ে ঐশী রহমান। অন্যদিকে হত্যায় সরাসরি জড়িত না থাকলেও বিভিন্নভাবে তাকে সহায়তা করায় দুই বন্ধু ও গৃহকর্মী সুমীকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ১৪ আগস্ট পুলিশ (সিআইডি) কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও স্ত্রী স্বপ্না রহমান রাজধানীর চামেলীবাগের নিজ বাসায় নৃশংসভাবে খুন হন। ১৬ আগস্ট সন্ধ্যায় তাদের  ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে তাদের একমাত্র মেয়ে ঐশী রহমান নিখোঁজ ছিল।পরে ১৭ আগস্ট মা-বাবাকে হত্যার দায় স্বীকার করে পল্টন থানায় আত্মসমর্পণ করে সে। ঐশী ছাড়াও মাহফুজ-স্বপ্না দম্পতির ঐহী রহমান নামে একটি ছেলেও রয়েছে।

জানা গেছে, ঐশী ও তার দুই বন্ধু ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছেন। অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় গৃহকর্মী সুমীকে গাজীপুরের কাশিমপুর কিশোর সংশোধনী কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। ঐশী ধানমন্ডির অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ‘ও’ লেভেলের ছাত্রী ছিল।ঐশীর ছোট ভাই ঐহী রাজধানীর উত্তরায় তাদের চাচার হেফাজতে রয়েছে।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ