গেজেটের ৩ দিনের মধ্যে নারী এমপিদের শপথ

সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া সংরক্ষিত নারী আসনের ৫০ প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকলে বাছাইয়ের পরপরই নির্বাচিতদের নাম ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। একই সঙ্গে গেজেট প্রকাশের তিন দিনের মধ্যেই তাদের শপথ পড়ানো হবে।

রোববার দশম জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচনে দল ও জোট থেকে মোট ৫০ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়েছে নির্বাচন কমিশনে। রিটার্নিং কর্মকর্তা জেসমিন টুলী দলের ও জোটের প্রতিনিধিদের কাছ থেকে এই মনোনয়নপত্র গ্রহণ করেন।

ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখা থেকে জানানো হয়, আইন অনুযায়ী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল গেজেটে প্রকাশের ৯০ দিনের মধ্যে সংরক্ষিত ৫০টি নারী আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা আছে। তাই ৯ এপ্রিলের মধ্যেই এ নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা থাকায় সংরক্ষিত নারী আসনের ভোট ৩ এপ্রিল হবে।

আইন অনুসারে, সংরক্ষিত মহিলা আসনে জয়ী সংসদ সদস্যদের নামের প্রকাশিত গেজেট অনুযায়ী ২৯৭টি আসনের আনুপাতিক হারে আওয়ামী লীগ ও তার জোট ৪১টি, জাতীয় পার্টি ছয়টি ও স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচিত জোট তিনটি সংরক্ষিত নারী আসন পাবে।

রোববার আওয়ামী লীগ ও তার জোটের পক্ষ থেকে দলটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ৪১ জনের, বিরোধী দলের চিফ হুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরী জাতীয় পার্টির ছয় জনের মনোনয়নপত্র জমা দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা জেসমিন টুলীর কাছে।

রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেছেন, সংরক্ষিত মহিলা আসনের নির্ধারিত ৫০টি আসনের ৪৭টি মনোনয়নপত্র জমা হয়েছে।

ইসি ঘোষিত তফসিল আনুযায়ী, ১১ মার্চ এসব মনোনয়নপত্র বাছাই করা হবে। প্রর্থীতা প্রত্যাহার ১৮ মার্চ্ এবং ভোট ৩ এপ্রিল।

নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবাররক জানান, নিয়ম অনুসারে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর অভাব হলে বাছাইয়ের পরপরই নির্বাচিতেদর নাম ঘোষণা করে নির্বাচিতদের গেজেট প্রকাশের তিন দিনের মধ্যে তাদের শপথগ্রহণের আয়োজন করতে হবে।

সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচন নিয়ে কমিশনার মো. আবদুল মোবাররক এবিসি নিউজ বিডিকে আরও জানান, সংরক্ষিত নারী আসনের মনোনয়নপত্র জমাদানের আজ শেষ দিন। অফিসিয়াল কাজের সুবিধার্থেই আগের সময়সূচিতে পরিবর্তন এনে ৩ এপ্রিল এ নির্বাচনের ভোটের দিন ঠিক করা হয়েছে। এছাড়া আইন অনুসারে, ৯ এপ্রিলের মধ্যে সংরক্ষিত নারী আসনে ভোট করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

ইসি প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, আওয়ামী লীগ থেকে যাদের মনোনয়নপত্র দাখিল হয়েছে তারা হলেন, তারানা হালিম, ফজিলাতুন নেসা বাপ্পী, ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, আমিনা আহমেদ, পিনু খান, সানজিদা খানম ও নীলুফার জাফরউল্যাহ, সেলিনা জাহান লিটা, সফুরা বেগম রুমী, হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, উম্মে কুলসুম স্মৃতি, বেগম আখতার জাহান, সেলিনা বেগম স্বপ্না, সেলিনা আখতার বানু, লায়লা আরজুমান বানু, শিরিন নাঈম পুনম, কামরুল লায়লা জলি, হেপী বড়াল, রিফাত আমিন, নাসিমা ফেরদৌসী, লুৎফুন্নেছা, মমতাজ বেগম, মনোয়ারা বেগম, মাহজাবিন খালেদ, ফাতেমা জোহরা রানী, দিলারা মাহবুব আসমা, ফাতেমা তুজ্জহুরা, সাবিনা আক্তার তুহিন, রহিমা আক্তার, হোসনে আরা বাবলী, কামরুন নাহার চৌধুরী লাভলী, রোখসানা ইয়াসমিন ছুটি, নাভানা আক্তার, আসমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী, শামছুন নাহার বেগম, ওয়াসিফা আয়শা খান, জাহানারা বেগম সুরমা, সাবিহা নাহার বেগম (সাবিহা মুসা), ফিরোজা বেগম চিনু ও আমিনা আহমেদ।

জাসদ মনোনয়ন দিয়েছে কর্নেল তাহেরের স্ত্রী লুৎফা তাহেরকে। ওয়ার্কার্স পার্টি মনোনয়ন দিয়েছে হাজেরা খাতুনকে। প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি নুর-ই হাসনা লিলি চৌধুরী, মাহজাবীন মোরশেদ, মেরিনা রহমান, শাহানারা বেগম, রওশন আরা মান্নান ও খুরশীদ আরা হকের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে।

এছাড়া স্বতন্ত্রদের জোট কাজী রোজি, অ্যাডভোকেট নূর জাহান বেগম (মুক্তা) ও অ্যাডভোকেট উম্মে রাজিয়া কাজলের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে।

ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ৮২২ নারী সংরক্ষিত আসনের জন্য আবেদন করেছিলেন। দলের সংসদীয় বোর্ডের সভায় চূড়ান্ত ৩৯ জনের নামের তালিকা দপ্তর থেকে প্রকাশ করা হয়। তবে এর মধ্যে ৩৫ জনই নতুন মুখ।

উল্লেখ্য, ২০০৪ সালেন সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনীর মাধ্যমে ৪৫টি নারী আসন ১০ বছরের জন্য সংরক্ষণ করা হয়। এর আগে সংসদে সংরক্ষিত আসন ছিল ৩০টি। নবম সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনীতে সংশোধন করে ৫০টি সংরক্ষিত আসন করা হয়।

ইসি সচিবালয় জানায়, সংক্ষিত নারী আসনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের ঋণ খেলাপির বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য ১১ মার্চের মধ্যে প্রার্থীদের তথ্য চেয়ে গত বৃহস্পতিবার ইসিতে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো (সিআইবি)।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ