সংরক্ষিত নারী আসনে অধিকাংশই নতুন মুখ
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ দশম জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে নবম সংসদের অধিকাংশ সদস্যদের বাদ দিয়ে নতুনদেরই মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দশম জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসনে নির্বাচনে ৩৯ জনের মনোনয়নপত্র ইসিতে জমা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। নবম জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য সংখ্যা ছিল ৪১। এদের মধ্যে গত ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিনাপ্রতিদ্বন্দিতায় নির্বাচিত হয়েছেন কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম। বাকি ৪০ নারী সংসদ সদস্যের মধ্যে ৩৬ জনই এবার মনোনয়নবঞ্চিত হয়েছেন। অর্থাৎ নতুন ৩৬ জনকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। আর নবম জাতীয় সংসদের মাত্র ৪ জন মহিলা এমপি অ্যাডভোকেট তারানা হালিম, ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পী, পিনু খান এবং ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা দশম জাতীয় সংসদে পুনরায় মনোনয়ন পেয়েছেন। এবার মনোনয়নের জন্য আবেদন করেছিলেন মোট ৮২২ জন।
সংসদে প্রতিনিধিত্বের আনুপাতিক হার অনুযায়ী আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট সংরক্ষিত আসনের মধ্যে ৪১টি পাবে। এছাড়া বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ছয়টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জোট পাবে তিনটি আসন।
গত ৫ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ডে সংরক্ষিত নারী আসনের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। ৬ মার্চ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মনোনীতদের নাম ঘোষণা করা হয়। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ৯ মার্চ দল মনোনীত মহিলা এমপি প্রার্থীদের তালিকা নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দেন। এর পরই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তাদের এমপি ঘোষণা ও গেজেট প্রকাশের পর স্পিকার এ সব নারী এমপিদের শপথ গ্রহণ করাবেন। চলতি অধিবেশনেই মহিলা এমপিরা দায়িত্ব পালন করতে পারবেন বলে জানা গেছে।
দলীয় সূত্রে আরো জানা গেছে, সংরক্ষিত নারী আসনে এবার আওয়ামী লীগের মনোনীতদের অধিকাংশই নতুন মুখ। মূলত তৃণমূল আওয়ামী লীগকে আরো শক্তিশালী করার জন্য সাংগঠনিকভাবে যারা সফল, দলের জন্য যারা ত্যাগী, যারা বিএনপি সরকার আমলে কারাবরণকারী এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আহত হয়েছেন তারাই এ তালিকায় স্থান পেয়েছেন।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিম এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, যারা বাদ পড়েছেন তারা একবার করে হলেও এমপি ছিলেন, কাজ করেছেন। বার বার একজনকে এমপি বানাতে হবে এমন কোনো কথা নেই। সারা দেশ থেকেই আমরা এবার সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের জন্য মনোনয়ন দিয়েছি। এবার নতুনরা কাজ করবে। যারা বাদ পড়েছেন তারা যখন মনোনয়ন পেয়েছিলেন তারাও তো নতুনই ছিলেন। তাই নতুনদের কাজ করার সুযোগ করে দেবার জন্যই নতুনদের সামনে আনা। তবে যারা বাদ পড়েছেন তাদের বিরুদ্ধে সমালোচিত বা বিতর্কিত বলার কোনো সুযোগ নেই। এটা সম্পূর্ণ দলীয় সিদ্ধান্ত।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী সংরক্ষিত নারী আসনে ভোটগ্রহণের দিন আগামী ৩ এপ্রিল। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিল গত ৯ মার্চ, যাচাই বাছাইয়ের দিন ১১ মার্চ এবং মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ মার্চ।
দশম জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রাপ্তরা হলেন- মোছা. সেলিনা জাহান লিটা, সফুরা বেগম রুমী, হোসেনে আরা লুৎফা ডালিয়া, উম্মে কুলসুম স্মৃতি, বেগম আখতার জাহান, সেলিনা বেগম স্বপ্না, সেলিনা আখতার বানু, লায়লা আরজুমান বানু, শিরিন নাঈম (পুনম), কামরুল লায়লা জলি, হেপী বড়াল, রিফাত আমিন, নাসিমা ফেরদৌসী, আলহাজ মিসেস লুৎফুন্নেছা, মমতাজ বেগম, তারানা হালিম, মনোয়ারা বেগম, মাহজাবিন খালেদ, ফাতেমা জোহরা রানী, দিলারা মাহবুব আসমা, ফাতেমা-তুজ জহুরা, ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা, পিনু খান, সানজিদা খানম, সাবিনা আক্তার তুহিন, রহিমা আক্তার, হোসনে আরা (বাবলী), কামরুন নাহার চৌধুরী (লাভলী), নীলুফার জাফর উল্লাহ, রোখসানা ইয়াসমিন ছুটি, নাভানা আক্তার, আসমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী, শামছুন নাহার বেগম, ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পী, ওয়াসিফা আয়শা খান, জাহানারা বেগম সুরমা, সাবিহা নাহার বেগম (সাবিহা মুসা), ফিরোজা বেগম চিনু ও সুচিত্র তংঞ্চঙ্গ্যাঁ।