সাগর-রুনি হত্যার তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট প্রকাশের দাবি
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ তলব পেয়ে হাইকোর্টে হাজির হয়ে সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে সোমবার রিপোর্ট দিয়েছেন ব়্যাবের তদন্ত কর্মকর্তা৷ তিন আসামির জামিনের আবেদনের শুনানি হলেও আদালত তা মঞ্জুর করেনি৷
আদালত বলেছেন, এই রিপোর্ট এখন প্রকাশ করা হবে না৷ আর সাগর-রুনির পরিবারের সদস্যরা বলেছেন, তদন্ত নিয়ে তারা অন্ধকারে আছেন৷
সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ব়্যাবের সিনিয়র এএসপি মো. জাফর উল্লাহ গত ৫ই মার্চ প্রতিবেদন জমা দিতে এলেও জামিন শুনানির এখতিয়ার না থাকায় বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর বেঞ্চ তা ফিরিয়ে দেয়৷ এরপর বিষয়টি বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহমেদের বেঞ্চে এলে সোমবার হাজির হয়ে তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন দেন জাফর উল্লাহ৷
আদালত প্রতিবেদন গ্রহণ করে জানিয়েছে, বিষয়টি যেহেতু তদন্তাধীন, তাই ওই প্রতিবেদনের তথ্য প্রকাশ করা হবে না৷ আর যে আসামিদের জামিনের আবেদন পেয়ে আদালত তদন্ত কর্মকর্তার কাছে অগ্রগতি জানতে চেয়েছিল, তাদের শুনানি শেষে তাদের জামিন আবেদন নাকচ করে দেয়া হয়৷
আদালতে আসামিপক্ষের শুনানি করেন এসএম মাসুদ হোসেন দোলন, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট গাজী মো. মামুনুর রশীদ৷
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ভোর রাতে ঢাকার পূর্ব রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর ও এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার রুনি৷ হত্যারহস্যের কিনারা করতে না পারায় হাইকোর্টের নির্দেশেই ২০১২ সালের ১৮ই এপ্রিল মামলাটি’র তদন্তের ভার ব়্যাবকে দেয়া হয়৷ ব়্যাব তদন্তের দায়িত্ব নেয়ার পর সন্দেহভাজন ১৬ জনের ডিএনএ নমুনা পরীক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাঠায়৷ আলামত হিসেবে জব্দকৃত ছুরি ও পোশাকের নমুনাও পাঠানো হয়৷ কিন্তু তাতেও খুনি শনাক্ত করা যায়নি৷
হত্যাকাণ্ডের এক বছর আট মাস পর ঘটনায় ‘জড়িত’ সন্দেহে ৮ জনকে চিহ্নিত করার পর ৭ জনকে গ্রেফতার করে ব়্যাব৷ তাদের ৫ জনই আবার চিকিত্সক নেতা ডা. নারায়ণ চন্দ্র দত্ত নিতাই হত্যা মামলার আসামি৷ ১৮ই ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে আটক আসামিদের মধ্যে বকুল মিয়া, রফিকুল ইসলাম ও কামরুল হাসান অরুণের জামিনের আবেদন জানানো হয়৷ পৰে তাঁদের আইনজীবী বলেন,’দুই বছর পেরিয়ে গেলেও এ মামলায় অভিযোগপত্র হয়নি৷ মামলার তদন্তে অগ্রগতি না হওয়ার পরও আসামিদের আটকে রাখা হয়েছে৷’
মেহেরুন রুনির ভাই নওশের রোমান ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘ব়্যাব আদালতে তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন দিলেও তাঁরা অন্ধকারে আছেন৷ এই মামলার তদন্ত নিয়ে কী হচ্ছে তাঁরা তার কিছুই জানেন না৷ এমনকি এ মাসেই তাঁরা ব়্যাবের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন, কিন্তু ব়্যাব কিছু জানায়নি৷ বরং অনেকটা এড়িয়ে গেছে৷’ নওশের রোমান বলেন, ‘আদালত তদন্তের স্বার্থে রিপোর্ট এখন প্রকাশ না করার কথা বলেছেন৷ কিন্তু তাতে হতাশা কাটছেনা৷” তিনি বলেন, তাঁরা চান মামলার তদন্ত কোন পর্যায়ে আছে তা যেন স্পষ্ট করা হয়৷