শিক্ষক, মিস্ত্রি, ব্যাংকাররাও খেলবেন বিশ্বকাপে!

T20 worldcup cricket

স্পোর্টস ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ অবাক হলেও সত্যি, বাংলাদেশে অনুষ্টেয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এমন ক্রিকেটাররাও আছেন, যারা খেলতেই এসেছেন অফিস থেকে ছুটি নিয়ে! বিক্রান্ত শেঠি কাজ করেন একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থার জনসংযোগ বিভাগে। তার আরও একটি পরিচয়, তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাত দলের একজন ক্রিকেটার। বিশ্বকাপ খেলতে অফিস থেকে পাওনা বার্ষিক ছুটি নিয়েই তিনি এসেছেন বাংলাদেশে।

শুধু বিক্রান্ত নন, তার দলের অধিনায়ক খুররম খানও এমিরেটস বিমান সংস্থার পুরোদস্তুর চাকুরে! আজ দুবাই, কাল নিউ ইয়র্ক করে বেড়ানো খুররমও ছুটি নিয়ে এসেছেন বিশ্বকাপ খেলবেন বলে।

শুধু আরব আমিরাত দলেই নয়, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশ নিতে আসা অন্য দলগুলোতেও আছেন এমন অনেক ক্রিকেটার, যারা অন্য কোনো পেশায় জড়িত, খেলছেন স্রেফ শখের বশে কিংবা ভালোবাসা থেকে। তাদের কেউ শিক্ষক, কেউ ব্যাংকার তো কেউ কলের মিস্ত্রি।

২০০৩ বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে হারিয়ে দেওয়ার নায়ক কানাডার অস্টিন কডরিংটন ছিলেন পানির কলের মিস্ত্রি, কেনিয়ার একসময়ের অধিনায়ক আসিফ করিমও ক্রিকেট খেলার পাশাপাশি জীবিকা নির্বাহের জন্য বীমা কম্পানির ব্যবসা করতেন। টেস্ট পরিবারের বাইরের দলগুলোর জন্য ক্রিকেটকে পেশা হিসেবে নেওয়াটা কঠিনই, তাই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশ নিতে আসা আরব আমিরাত, নেপাল ও হংকংয়ের মতো দেশগুলোতে এমন অনেক ক্রিকেটারই আছেন, যাদের বিশ্বকাপ খেলতে আসতে হয়েছে নিজস্ব পেশা থেকে ছুটি নিয়ে।

নেপাল দলের অধিনায়ক পরশ খাড়কা খোলাখুলিই বলে দিলেন, ‘এখনো নেপালে পেশাদার ক্রিকেটার হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি, তবে বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পাওয়ার পর আমাদের সরকার খুব আশাবাদী।’

নেপাল ক্রিকেট দলের আরেক সদস্য রাহুল বিশ্বকর্মা, তিনি আবার জড়িত নেপালের সেনাবাহিনীর সঙ্গে। সেনা প্রশিক্ষণ নিতে হয় না যদিও, ক্রিকেটটাই খেলেন সেনাবাহিনীর হয়ে। তার কাছ থেকেই জানা গেল নেপালের সামরিক ও আধা সামরিক বাহিনী এবং করপোরেট হাউজগুলোই দল গড়ে খেলছে নেপালের ঘরোয়া ক্রিকেট প্রতিযোগিতায়। সেই সুবাদেই ক্রিকেটারদের মিলছে চাকরি। যেমনটা হচ্ছে বাংলাদেশেও, যদিও ক্রিকেটে নয় বাস্কেটবল, সাঁতারসহ বেশ কিছু খেলায়।

নেপালের চাইতে আরব আমিরাতের অর্থনৈতিক অবস্থা ভিন্ন। চাকরিসূত্রে দুবাই বা আবুধাবিতে থাকা ভারতীয় ও পাকিস্তানিরাই মেতেছেন ক্রিকেটে। অধিনায়ক খুররম খানের জন্ম পাকিস্তানে, সেখানে পিআইএ-র (পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনস) হয়ে খেলতেন। পরে চাকরি বদল করে যোগ দেন এমিরেটসে, চলে আসেন দুবাই।

সবচাইতে মজার অভিজ্ঞতাটা মনে হয় বিক্রান্তেরই। নিজে জনসংযোগ কর্মকর্তা, গণমাধ্যমের সঙ্গেই কাজকারবার। সাংবাদিক সম্মেলন আয়োজন করার অভিজ্ঞতা অনেক, তবে নিজে সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তরের সামনে এবারই প্রথম, অদল-বদলটা বেশ উপভোগই করছেন তিনি, ‘বেশির ভাগ সময় আমিই এরকম সংবাদ সম্মেলন আয়োজনের সঙ্গে জড়িত থাকি, এবারে আমিই প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছি, অভিজ্ঞতাটা নতুন ও মজার।’

উদ্যান নগরী বেঙ্গালুরুর ছেলে বিক্রান্ত পড়ালেখার সূত্রে দুবাইতে এসে থিতু হয়ে গেছেন মরু শহর দুবাইতেই। এরপর পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন জনসংযোগ, পাশাপাশি থেকে গেছে ছোটবেলার প্রেম ক্রিকেট, ‘আমি বিজ্ঞাপনী সংস্থায় কাজ করি। দিনে অফিস করে সন্ধ্যায় ক্রিকেট খেলার সময় বের করি, সেই হিসেবে আমাদের অপেশাদারই বলতে পারেন।’

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ