এসপির জামিন বাতিল

High-Court-sm20130120092335রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ দুর্নীতির মামলায় নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন ও ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্ত রেলওয়ে পুলিশের সাবেক এসপি বর্তমানে পুলিশ হেডকোয়াটার্সে দায়িত্বরত মোস্তফা কামালকে জামিন দিয়ে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ বাতিল করেছে আপিল বিভাগ।

একই সঙ্গে দুই সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ৫ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।

এছাড়া তিন মাসের মধ্যে এ মামলাটির আপিল শুনানি হাইকোর্টে নিষ্পত্তি করতে উভয়পক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে ছিলেন- অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। অপরদিকে আসামিপক্ষে আদালতে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ।

এর আগে ২২ জানুয়ারি মোস্তফা কামালকে জামিন দিয়ে বিচারিক আদালতের দেয়া রায় সাময়িকভাবে স্থগিত করে জামিন দিয়েছিলেন বিচারপতি বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহমেদের হা‌ইকোর্ট বেঞ্চ।

গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর রেলওয়ে পুলিশের এসপি মোস্তফা কামালকে একটি দুর্নীতি মামলায় যাবজ্জীবন ও ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন ঢাকার ৩ নম্বর বিশেষ জজ আদালত।

এসএ পরিবহনের স্বত্ত্বাধিকারী সালাহ উদ্দিন আহমদকে অবৈধভাবে আটক করে ৫০ লাখ টাকা ঘুষ আদায়ের চেষ্টার অভিযোগে দায়ের করা দুর্নীতি মামলার রায়ে মোস্তফা কামালকে এ দণ্ডাদেশ দেয়া হয়।

দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারায় সরকারি কর্মকর্তা হয়েও বিশ্বাস ভঙ্গের অভিযোগে তাকে যাবজ্জীবন এবং দণ্ডবিধির ১৬১ ও ১৬৭ ও দুর্নীতি দমন আইনের ৫(২) প্রমাণিত হওয়ায় আরও ৫ বছরের সাজা দেয়া হয়।

হবিগঞ্জের তৎকালীন এসপি মোস্তফা কামালকে কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৩০ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত। জরিমানার টাকার মধ্যে ৫ লাখ টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা ও বাকি ২৫ লাখ টাকা মামলার বাদীকে দেয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

হবিগঞ্জের মাধবপুর থানার অবসরপ্রাপ্ত এসআই ওয়াহেদ মিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস প্রদান করেছেন আদালত।

প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালের ২০ নভেম্বর এস এ পরিবহনের স্বত্ত্বাধিকারী সালাহ উদ্দিন আহমদ পুলিশ কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল ও হবিগঞ্জের মাধবপুর থানার এসআই ওয়াহেদ মিয়ার বিরুদ্ধে এ মামলাটি দায়ের করেছিলেন।

বাদী মামলায় অভিযোগ করেন, ২০০২ সালের ২২ ডিসেম্বর তিনি নিজ গাড়িতে ২০ লাখ টাকা নিয়ে সিলেট যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে হবিগঞ্জের মাধবপুরে তল্লাশির নাম করে পুলিশ গাড়িটি আটক করে।

বাদী তার পরিচয় দিলে রাতে টাকা নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে থানায় জিডি করতে বলে পুলিশ।

জিডি করতে থানায় গেলে হবিগঞ্জের তৎকালীন এসপি মোস্তফা কামাল এসএ পরিবহনের স্বত্ত্বাধিকারী সালাহ উদ্দিন আহমেদসহ অন্যান্যদের হাজতে ঢোকাতে ওয়্যারলেসে থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।

মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, এরপর তাকে আটক করে তার নামে মানিলন্ডারিং, মাদক ও নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে পৃথক ৩টি মামলা করে পুলিশ।

মামলায় আরো বলা হয়, পরবর্তীতে আসামিরা বাদীর হেড অফিসে খবর পাঠান, আটককৃত ২০ লাখ টাকাসহ ৫০ লাখ টাকা দিলে সকলকে ম্যানেজ করে মামলাগুলো থেকে অব্যাহতি দেয়া হবে।

২০১০ সালের ৪ এপ্রিল আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ)গঠন করা হয়। গত ৩ ডিসেম্বর মামলাটির যুক্তিতর্ক শেষে রায়ের জন্য ১৯ ডিসেম্বর রায় ঘোষণা করা হয়।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ