আগের রাতেই সিল মেরে বাক্সভর্তি হয়েছে
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ মঙ্গলবার রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন এই অভিযোগ করেন।
উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপে সহিংসতা কম থাকলেও দ্বিতীয় ধাপের ভোটে সহিংসতা বেড়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “গতকাল ( সোমবার) স্থগিত কয়েকটি কেন্দ্রে নির্বাচন ছিল। সেখানে দেখা গেছে, আগের রাতেই সিল মেরে ব্যালট ভোটের বাক্সে ঢুকিয়ে রাখা হয়েছে।”
তিনি বলেন, “ভোট কেন্দ্র দখল ও অস্ত্র হাতে ক্ষমতাসীনদের তাণ্ডবের প্রকাশিত সংবাদে এটা স্পষ্ট হয়ে গেছে, ক্ষমতাসীনরা আজ বেপোরোয়া হয়ে উঠেছে। প্রশাসনকে ব্যবহার করে উপজেলা নির্বাচনে সরকার নগ্ন হস্তক্ষেপ করছে।”
এভাবে চলতে থাকলে আগামী ১৫ মার্চ তৃতীয়, ২৭ মার্চ চতুর্থ ও ৩১ মার্চ পঞ্চম ধাপে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ‘সহিংসতা’ বাড়বে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, “ভোট কেন্দ্র দখল ও সংহিসতার মাত্রা বৃদ্ধি থেকে এটা প্রমাণিত, আওয়ামী লীগ সরকার ও তার আজ্ঞাবহ বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে পারে না।”
জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী যুবদলের উদ্যোগে বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ‘অষ্টম কারাবন্দি দিবস’ উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়।
২০০৭ সালে ৭ মার্চ ঢাকা সেনানিবাসে শহীদ মইনুল সড়কের বাসা থেকে খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেককে গ্রেপ্তার করা হয়। দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা হয়। পরে চিকিৎসার জন্য জামিন নিয়ে তিনি বিদেশ চলে যান।
এরপর থেকে ৭ মার্চকে তারেক রহমানের ‘কারাবন্দি দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে বিএনপি।
দলীয়ভাবে স্থানীয় নির্বাচন করার বিষয়ে সম্প্রতি স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের বক্তব্যের সমালোচনা করেন সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
“স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার নির্বাচন সবসময় নির্দলীয়ভাবে হয়ে আসছে। একে ধ্বংস করার জন্যই আজ সৈয়দ আশরাফ সাহেব নতুন এই ফর্মূলার কথা বলছেন,” বলেন তিনি।
বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রেস্তাবের বিরোধিতা করেন তিনি।
“কুইক কমিশন হাতিয়ে নিতেই সরকার দেশে কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন করে এখন জনগণের পকেট থেকে অর্থ তুলে নিতে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করতে যাচ্ছে,” বলেন বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ।
সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকার ফন্দি-ফিকির করছে সরকার। ৫ জানুয়ারির আগে তারা বলেছিল- নিয়ম রক্ষার জন্য নির্বাচন করেছে। ভোটারবিহীন নির্বাচনের পর এখন তারা বলছে, পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকবে। ১৯৭৫ সালে আওয়ামী লীগ বাকশালের শাসন ও আজকের শাসনের মধ্যে কোনো তফাৎ নেই।”
নেতাকর্মীদের প্রতি আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, “আলোচনা সভার বক্তৃতার মঞ্চে শ্লোগানে ঝড় তুলে কিংবা শুধু নেতাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পদ-পদবীর প্রত্যাশায় কাজ করলে চলবে না, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আন্দোলনে রাস্তায় নামতে হবে।”
আগামীতে রাজধানীতে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার ডাক দিয়ে তিনি বলেন, “৫ জানুয়ারির নির্বাচনে সারা দেশে তৃণমূলরা যেভাবে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, ঢাকার অধিবাসী হিসেবে আমরা তা পারিনি। আগামীতে ঢাকায় আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।”
সংগঠনের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে যুব দলের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবদুস সালাম আজাদ, সহসভাপতি কে এম আই খলিল, আব্দুল খালেক, এ টি এম আব্দুল বারী ড্যানী, ফারুক আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী, জোবায়ের এজাজ, আলী আকবর চুন্নু, এস এম জাহাঙ্গীর, কাজী রফিক, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ক ম মোজাম্মেল হক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।