হাসিনা ও খালেদাকে সমকক্ষ করলে ব্যথা পাই : ফরাস উদ্দিন
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফরাস উদ্দিন বলেছেন, খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনাকে যখন সমকক্ষ করা হয় তখন খুব ব্যাথা পাই। দুজনই উত্তরাধিকার সূত্রে রাজনীতিতে এসেছেন এমন বক্তব্যেরও তীব্র সমালোচনা করেন তিনি।
মঙ্গলবার সেগুনবাগিচায় কেন্দ্রীয় কচি-কাঁচার মেলা মিলনায়তনে খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের রচিত ‘জীবন যখন যেমন’ বই এর প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. ফরাস উদ্দিন বলেন, আমরা যতটুকু জানি খালেদা জিয়া ক্লাস এইট কিংবা টেন পর্যন্ত পরাশুনা করেছেন। ম্যাট্রিক পাশ করেননি। আর খালেদা জিয়া তৎকালিন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর আগে কোনো ধরনের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন না।
অপরপক্ষে শেখ হাসিনা হচ্ছেন, জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা। তিনি ছাত্র জীবনে রাজনীতি করেছিলেন। সেই সময় ইডেন কলেজের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। কাজেই দুজন কোনোভাবেই সমকক্ষ হতে পারেন না।
রাজনৈতিক দলের সমঝোতা সম্পর্কে ফরাস উদ্দিন বলেন, রাজনৈতিক দলের সমঝোতা সবার কাম্য। কিন্তু যারা দেশের স্বাধীনতার সঙ্গে বিরোধীতা করেছে তাদের সাথে সম্পর্কিত কোনো দলের সাথে সমঝোতা নয়। তিনি বলেন, ৭১ এর স্বাধীনতার বিরোধীরাই ৭৫ এর ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবর রহমানকে হত্যা, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ও ২০১৩ সালে বাসে আগুণ দিয়ে মানুষ হত্যা করেছে।
তিনি আরও বলেন, ৮১ সালে গোলাম আযমের নাগরিকত্ব যে বিচারপতি (মরহুম হাবিবুর রহমান) ফিরিয়ে দিয়েছেন তার শেষ কৃত্যে আমি যাইনি। কারণ আমার বিবেকে বাধা দিয়েছে।
প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বইটি নিয়ে আলোচনা করেন সাবেক প্রধান বিচারপতি এ.বি.এম খায়রুল হক, কেন্দ্রীয় কচি-কাঁচার মেলার সহ-সভাপতি ড. রওশন আরা ফিরোজ, কবি রুবী রহমান, দিল মনোয়ারা মনু, সাবেক সাংসদ নাজমা আক্তার, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব খোন্দকার মো. আসাদুজ্জামান প্রমুখ।
শেয়ারবাজার ধসের পিছনে বাংলাদেশ ব্যাংকের দুর্বলতা ছিলো উল্লেখ করে সাবেক এই গভর্নর বলেন, ২০০৯-১০ সালে ঋণ বিতরণ ও আমানত সংগ্রহের ব্যবধান(ক্রেডিট ডিপোজিট রেশিও_সিডিআর)ছিলো ১:.৭০ অর্থ্যাৎ ১০০ টাকার আমানতের বিপরীতে ৭০ টাকা ঋণ দিতে পারত। সেই সময়ে এই রেশিও বাড়িয়ে ১:.৮৫ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কিন্তু ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সেই নির্দেশনা না মেনে ১:১.১০ রেশিওতে(অর্থ্যাৎ ১০০ টাকার আমানতের বিপরীতে ঋণ বিতরণ করে ১১০ টাকা পর্যন্ত) পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে। যার কারণে তুলনামূলক খারাপ ও অনুউৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগ করে। এর কারণে সঠিক জয়গায় বিনিয়োগ না হওয়ায় পুঁজিবাজারে ধ্বস নামে। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সব বিষয়ে তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।