ক্যান্সার হাসপাতালের সামনেই অবৈধ ক্যান্সার হাসপাতাল

Cancer Hospital ক্যান্সার হাসপাতালরিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ রাজধানীতে ক্যান্সার হাসপাতালে সামনেই অবৈধ ক্যান্সার হাসপাতাল সন্ধান পাওয়া গেছে। অবৈধ ওই হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে সেটি সিলগালা করা ছাড়াও ২ জনকে দুই বৎসর করে কারাদণ্ড দিয়েছে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

বুধবার সকালে রাজধানীর মহাখালীস্থ ৩২/৬ টিবি গেইটে অবৈধ এই ক্যান্সার হাসপাতালে র‌্যাব-১ এর একটি টিম অভিযান চালায়।

নিকটবর্তী ক্যান্সার ইন্সটিটিউট থেকে রোগী ভাগিয়ে এনে জীর্ণশীর্ণ পরিবেশে ডাক্তার ও দক্ষ ব্যক্তি ছাড়াই ঝুঁকিপূর্ণভাবে ক্যান্সার রোগের চিকিৎসা করার অপরাধে দুই জনকে হাতে নাতে আটক করে তাৎক্ষনিকভাবে ২ বৎসর করে কারাদণ্ড দিয়েছে র‌্যাবের মোবাইল কোর্ট। পাশাপাশি দুই লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৩ মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত।

র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এইচ এম আনোয়ার পাশা এবিসি নিউজ বিডিকে জানান, মহাখালী টিবি গেইটের ৩২/৬ এর চিশতিয়া হোটেলের উপর টিনের ছাপড়া ঘরে হার্ডবোর্ডের পার্টিশন দিয়ে অত্যন্ত নোংরা ও অমানবিক পরিবেশে ক্যান্সারের চিকিৎসা কেন্দ্র গড়ে তোল হয়। এখানে হার্ডবোর্ডের তৈরি চারটি ক্যাবিনসহ ঠাসাঠাসি করে মোট ১৮টি বেড রয়েছে। অভিযানের সময় ১২ জন ক্যান্সার রোগী চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। রোগীদের ক্যামো থেরাপি দেয়ার সময় ২ জনকে হাতে নাতে ধরা হয়। এখানে কোনো সার্বক্ষণিক ডাক্তার, নার্স বা দক্ষ টেকনিশিয়ান পাওয়া যায়নি।

তিনি জানান, মাত্র ৩ জন অদক্ষ ব্যক্তি সার্বক্ষণিকভাবে এ অবৈধ হাসপাতালের চিকিৎসা কর্ম সম্পাদন করেন। অভিযুক্তরা জানান, জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইন্সটিটিউটে আসা রোগীদের নানা কৌশলে এখানে ভাগিয়ে এনে ভর্তি করা হয়। কোনো কোনো রোগী ১ বছরের অধিককাল এখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং লাখ লাখ টাকা বিল আদায় করছেন মর্মে ভুক্তভোগী রোগীগণ জানান।

আবুল হাশেম নামে এক রোগী জানান, তারা নিকটবর্তী সরকারি ক্যান্সার হাসপাতালে ভর্তি হতে এসেছিলেন। সেখানে দালালের মাধ্যমে তাকে এখানে আনা হয় এবং ক্যান্সার রোগের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল। অভিযানের সময় অভিযুক্ত বিউটি বেগম (৩৮) এখানে ভর্তি হওয়া রোগী কবির হোসেন (৪০)কে ক্যামো ইনজেকশন দিচ্ছিলেন।

অভিযুক্ত বিউটি জানান, তিনি এখানকার সকল রোগীর চিকিৎসা দেন। রোগীদের স্যালাইন, রক্ত ও ক্যামো ইনজেকশন তিনি দিয়ে থাকেন। তিনি এ বিষয়ে দক্ষ না হয়েও দুই বৎসর যাবত এখানে এই কাজ করে যাচ্ছেন। অপর অভিযুক্ত মো. শাহাদত হোসেন (২৪) তাকে এই কাজে সহযোগিতা করেন এবং রোগী ভর্তিসহ সকল কাজ তদারকি করেন।

এছাড়া এখানে একজন বুয়া কাজ করেন। মাত্র তিনজন ব্যক্তি ক্যান্সার হাসপাতাল চালাচ্ছিলেন। ১০ শয্যার হাসপাতালে তিনজন ডাক্তার ৬ জন নার্স ও ৩ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মী থাকা বাধ্যতামূলক হলেও ২০ শয্যার এ হাসপাতালে রয়েছে মাত্র ৩ জন অদক্ষ ব্যক্তি। এ হাসপাতালের সরকারি অনুমোদন নেই বলে আনোয়ার পাশা জানান।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ