শ্বশুরের কবজি কাটলেন জামাতা
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, কিশোরগঞ্জঃ কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার জারইতলা বাজারে শ্বশুরের ডান হাতের কবজি কেটে নিয়েছেন তাঁরই মেয়ের জামাই। পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, নেশার টাকা চেয়ে না পাওয়ায় গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জামাতা তাহের আলী তাঁর বৃদ্ধ শ্বশুর সেকেন্দর আলীর (৭০) হাতের কবজি কেটে ফেলেন।
পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকেলে তাহের আলী তাঁর শ্বশুরবাড়ি জারইতলা ইউনিয়নের সাজনপুর গ্রামে যান। সেখানে গিয়ে স্ত্রী পারভিনকে না পেয়ে সন্ধ্যায় জারইতলা বাজারে লবণ ব্যবসায়ী শ্বশুর সেকেন্দর আলীর কাছে যান। এ সময় তাহের আলী তাঁর শ্বশুর সেকেন্দরের কাছে মদ কেনার টাকা চান। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় তাহের আলী তাঁর হাতে থাকা দা দিয়ে শ্বশুরের ডান হাতের কবজির ওপর কোপ দেন। এতে সেকেন্দরের হাতটি কেটে গিয়ে ঝুলে থাকে। পরে বাজারের ব্যবসায়ীরা গুরুতর আহত সেকেন্দর আলীকে বাজিতপুর উপজেলার জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে কর্তব্যরত চিকিত্সক সেকেন্দর আলীর হাতটি কেটে আলাদা করে সেলাই করেন।
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, জারইতলা ইউনিয়নের সাজনপুর বড়হাটি গ্রামের আবু মিয়ার ছেলে তাহের আলীর (৪৫) সঙ্গে ২৫ বছর আগে বিয়ে হয় একই এলাকার মাইজহাটি গ্রামের সেকেন্দর আলীর মেয়ে পারভিনের (৪০)। বিয়ের পর থেকে তাহের আলী মদ-গাঁজায় আসক্ত হয়ে পড়েন। নেশার টাকা না থাকলে স্ত্রীকে মারধর করে তাঁর বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে বলতেন তিনি। স্ত্রী মারের ভয়ে বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতেন। দুই ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে এভাবে চলছিল পারভিনের সংসার। দুই বছর ধরে স্বামীর নির্যাতন সহ্য না করতে পেরে পারভিন চলে যান তাঁর বাবার বাড়ি মাইজহাটিতে। কিন্তু সেখানেও তাহের আলী মদের টাকার জন্য যেতেন। তিনি বাড়িতে গিয়ে পারভিনকেও মারধর করতেন। কিছু টাকা দিলে চলে যেতেন তাহের।
আজ বুধবার সকালে সেকেন্দর আলীর বাড়িতে গেলে তাঁর মেয়ে পারভিন বলেন, ‘এত জ্বালার পরও আমি কিছু বলিনি। শেষ পর্যন্ত মদের টাকার জন্য আমার বৃদ্ধ বাবার ডান হাতটি কেটে ফেলল। কাটা হাতটি দেখিয়ে বলে আমার বাবা এখন কোন হাতে ব্যবসা করবে। আমি এর বিচার চাই। আমি এমন স্বামী চাই না।’ নিকলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুল আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মামলাটি প্রক্রিয়াধীন। আসামি তাহের আলী পলাতক। তবে তাঁকে ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।