ওঝা ইব্রাহিম দেবেন বিমানের খোঁজ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ পাঁচ দিন ধরে নিখোঁজ বিমানের সন্ধান পেতে দশ দেশের নৌ ও বিমানবাহিনী যখন বিস্তীর্ণ সাগরে তল্লাশিতে ব্যস্ত, ঠিক তখনই দুটো ডাব, ‘জাদুর’ গালিচা আর ছড়ি হাতে কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে হাজির ‘বোমোহ’ ইব্রাহিম মাত জিন।
মালয়ে ওঝা আর জরিবুটির কবিরাজদের বলা হয় বোমোহ। আর কুয়ালালামপুরের এই ওঝা নিজের পরিচয় দেন রাজা বোমোহ সেদুনিয়া নুজুম ভিআইপি বলে। নিজের নামের সঙ্গে তিনি ‘দাতুক মহাগুরু’ পদবীও যোগ করেছেন।
মালয়েশিয়ার স্টার অনলাইনের খবরে বলা হয়, তিন অনুসারীকে নিয়ে বুধবার দ্বিতীয়বারের মতো কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে আসেন ‘বোমোহ’ ইব্রাহীম। সঙ্গীদের নিয়ে ‘জাদুর’ গালিচায় বসে জমজমের পানি ছিটিয়ে চলে তার মন্ত্রপাঠ।
ইব্রাহিমের দাবি, তার এই আয়োজনের উদ্দেশ্য হলো ‘অশুভ শক্তির প্রভাব’ দুর্বল করে দেয়া, যাতে উদ্ধারকর্মীরা মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের নিখোঁজ এমএইচ৩৭০ ফ্লাইটের অবস্থান সনাক্ত করতে পারেন।
বোমোহর এই কেরামতি দেখতে ছোটখাট ভিড় জমে ওঠে কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে। ‘জাদুর গলিচায়’ বসা ইব্রাহিমকে এ সময় দেখা যায় হাতে তালি দিয়ে মন্ত্র পড়ছেন। তার এক সঙ্গী দুই হাতে দুটো ডাব, আরেকজন একটি বাঁশের ডুলি এবং তৃতীয় জন ‘জাদুর ছড়ি’ তুলে ধরে ‘দাতুক মহাগুরুর’ সঙ্গে সঙ্গত দিচ্ছেন।
ইব্রাহিম সাংবাদিকদের বলেন, হারিয়ে যাওয়া জিনিসের সন্ধান পেতে যুগ যুগ ধরে তারা ঝাড়ফুঁক চালিয়ে আসছেন। বিমানটির কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে তিনি নিজে থেকেই বিমানবন্দরে এসেছেন।
এর আগে গত সোমবার বাঁশের তৈরি একটি দুরবিন এবং মাছ ধরার বড়শি নিয়ে এসে বিমানবন্দরে ঝাড়ফুঁক চালান ‘বোমোহ’ ইব্রাহিম।
মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বারনামার প্রতিবেদনে বলা হয়, এই ‘লাইনে’ ওঝা ইব্রাহিমের অভিজ্ঞতা ৫০ বছরের। ১৯৯৩ সালে হাইল্যান্ড টাওয়ার্স ধসের পর নিখোঁজদের সন্ধান পেতেও তিনি ‘কেরামতি’ দেখাতে আসেন এবং আলোচিত হন।
গত শনিবার প্রথম প্রহরে ক্রুসহ ২৩৯জন আরোহী নিয়ে কুয়ালালামপুর থেকে বেইজিংয়ের উদ্দেশ্যে উড্ডয়নের ঘণ্টাখানেক পর বোয়িং ৭৭৭ বিমানটি ‘উধাও’ হয়ে যায়। গত পাঁচ দিনেও ওই বিমানের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।