সোনালী ব্যাংকের ভল্টে সিসি ক্যামেরা বসাচ্ছে

sonali bank সোনালি ব্যাংকরিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ চুরি ঠেকাতে বিশেষ ব্যবস্থা নিচ্ছে সোনালী ব্যাংক। এ লক্ষ্যে ব্যাংকের সবগুলো শাখার ভল্ট এবং ব্যাংক ভবনের ভেতরে ও বাইরে নাইট ভিশন সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। পাশাপাশি সার্বক্ষণিক সিকিউরিটি অ্যালার্ম সিস্টেম চালু করবে ব্যাংকটি।

এছাড়া অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী ১৫ দিনের মধ্যে সবগুলো ভল্টে কংক্রিটের দেওয়াল নির্মাণ ও মেঝে ঢালাই করে স্টিল প্লেট সংযুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও প্রদীপ কুমার দত্ত ভল্টের সার্বিক পরিস্থিতি ও ইতিমধ্যে নেওয়া উদ্যোগ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সূর চৌধুরীর কাছে জমা দেন।

গত ১১ মার্চ মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক সোনালী ব্যাংকের এমডির কাছে একের পর এক সুড়ঙ্গ খুঁড়ে অর্থ চুরির ব্যাখ্যা চায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দায়িত্বে অবহেলার কারণে ব্যাংকের প্রধান শাথার মহাব্যবস্থাপক (জিএম) হাসান ইকবাল, রাজশাহী বিভাগের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ডি এম আফজাল হোসেন, বগুড়ার উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) আব্দুস সামাদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এর আগে বগুড়ার আদমদীঘি শাখা ব্যবস্থাপক ও ক্যাশিয়ারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

প্রতিবেদন উল্লেখ করা হয়, প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশনা সত্ত্বেও ভল্টের সার্বিক পরিস্থিতি সর্ম্পকে অবহিত করেনি সোনালী ব্যাংকের বগুড়ার আদমদিঘী শাখা সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া কিশোরগঞ্জ শাখায় সুড়ঙ্গ কেটে টাকা চুরির ঘটনার দশ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রীয় খাতের এ ব্যাংকটি তার সব শাখাকে ভল্টের সার্বিক অবস্থার তথ্য পাঠানোর নির্দেশনা দিয়েছিল। তবুও সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে কোনো প্রতিবেদন জমা দেয়নি। এ কারণে ইতোমধ্যে প্রধান শাখার একজন মহাব্যবস্থাপকসহ কয়েকজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

সোনালী ব্যাংক চিঠিতে ভল্টের নিরাপত্তার কথা উল্লেখ করে বলেছে, কিশোরগঞ্জ ও বগুড়ার আদমদিঘী দু’টি শাখায় সুড়ঙ্গ খুঁড়ে ভল্ট থেকে টাকা চুরির ঘটনায় ভল্টের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। ব্যাংকের সবগুলো শাখার ভল্ট এবং ব্যাংক ভবনের ভেতরে ও বাইরে নাইট ভিশন সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। পাশাপাশি ভল্টে সার্বক্ষণিক সিকিউরিটি অ্যালার্ম সিস্টেম চালু থাকবে। এছাড়া অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী ১৫ দিনের মধ্যে সবগুলো ভল্টে কংক্রিটের দেয়াল নির্মাণ ও মেঝে ঢালাই করে স্টিল প্লেট সংযুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তা বাস্তবায়নের পথে।

প্রতিটি শাখার নিরাপত্তা বাড়াতে জনবল বৃদ্ধির জন্য কয়েকটি বেসরকারি সিকিউরিটি কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়া ব্যাংকের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা তদারকির জন্য চীফ সিকিউরিটি অফিসার হিসেবে একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা নিয়োগের বিষয়টিও আমলে নেওয়া হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়েছে, এরই মধ্যে ব্যাংকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সব শাখায় সতর্কতামূলক চিঠি পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও সব শাখার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য ইতোমধ্যেই ৬১টি টিম গঠন করা হয়েছে। ৬১টি প্রিন্সিপাল অফিস ও রিজিওনাল অফিসকে কেন্দ্র করে এসব পরিদর্শন টিম কার্যক্রম শুরু করেছে এবং পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দেবে।

কিশোরগঞ্জ ও আদমদীঘি শাখার বিচ্ছিন্ন দুটি ঘটনার পর অন্য যেকোনো ধরণের চুরি বা অর্থ লুটের ঘটনা প্রতিরোধে সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সবগুলো শাখার নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়ে তা দ্রুত বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু করেছে বলে এতে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রদীপ কুমার দত্ত এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পাঠানো কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দেওয়ার শেষ দিন ছিল রোববার। নিয়ম অনুযায়ী সোনালী ব্যাংক ভল্ট বিষয়ক তার নেওয়া সকল উদ্যোগগুলো জানিয়েছে। একইসঙ্গে কিশোরগঞ্জের ঘটনার পর ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় থেকে সব শাখায় ভল্টের বর্তমান অবস্থা সর্ম্পকে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হলেও আদমদিঘি শাখা যে তা দেয় নি তাও বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করা হয়েছে। এখন বাংলাদেশ ব্যাংক সার্বিক অবস্থা বুঝে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে।’

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ