জঙ্গিবাদ থেকে জাতিকে দূরে রাখতে চাই: প্রধানমন্ত্রী
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও মাদকদ্রব্য জীবনকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সকলকে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও মাদককে না বলতে হবে। আমরা চাই শিশুরা নিরাপদ জীবন পাবে। সেজন্য জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও মাদকদ্রব্য থেকে জাতিকে দূরে রাখতে চাই।’
জাতির জনকের জন্মবার্ষিকীতে সোমবার সকালে টুঙ্গীপাড়ায় তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বঙ্গবন্ধু সমাধি কমপ্লেক্সে শিশু সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।
এ সময় জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের পাশাপাশি মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমি ছোট্ট শিশুদের বক্তৃতা শুনে নিশ্চিন্তে বলতে পারি, ভবিষ্যতে তারা আরো ভালো বক্তৃতা দিতে পারবে। তারাই তো মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী হবে।’
এ সময় উপস্থিত শিশুদের পড়াশোনায় মনোযোগ দিয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে দেশ গঠনে আত্মনিয়োগের পরামর্শ দেন হাসিনা। খেলাধুলা এবং সংস্কৃতি ও শরীর চর্চায় মনোযোগী হওয়ার আহ্বানও জানান তিনি।
মার্চকে বাংলাদেশের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ মাস উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৭ মার্চ জাতির পিতা তার ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন। ১৭ মার্চ জাতির পিতাকে আমরা পেয়েছি। ২৬ মার্চ জাতির পিতা স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যান।’
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের দেশ গড়তে সরকার সচেষ্ট জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা চাইতেন, বাংলাদেশের মানুষ দরিদ্র থাকবে না। বাংলাদেশ উন্নত হবে। কোনো শিশু না খেয়ে মারা যাবে না। কোনো শিশু নিরক্ষর থাকবে না। সকলে শিক্ষা পাবে।’
সে লক্ষ্যে শিশুদের জন্য প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা, বিদ্যালয়ে প্রয়োজনীয় খেলার সরঞ্জাম ও বিনোদনের ব্যবস্থা করা, বছরের প্রথম দিনে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ, বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়া রোধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের সব বই ই-বুকে রূপান্তর এবং মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ও আইসিটি ল্যাব প্রতিষ্ঠার কথা বলেন তিনি।
পড়াশোনার পাশাপাশি শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্রদের জন্য বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ এবং ছাত্রীদের জন্য বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট চালু করার কথাও বলেন হাসিনা।
বঙ্গবন্ধুর জীবন থেকে সবাইকে শিক্ষা নেওয়ার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, ‘ভোগে নয়, ত্যাগেই মহত্ব, মানুষের প্রতি জাতির পিতার যে দরদ, তার থেকে আমাদের শেখার আছে।’
বক্তৃতার পর প্রধানমন্ত্রী শিশুদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখেন। বঙ্গবন্ধুর সমাধি কমপ্লেক্সে বইমেলা উদ্বোধনও করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন নারী ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকী। নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব তরিকুল ইসলাম, ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার জিল্লার রহমান এবং গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক খলিলুর রহমান মঞ্চে ছিলেন।
এছাড়া ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়া, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নৌমন্ত্রী শাজাহান খান, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমত আরা সাদেক, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসেন ভূইয়া, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আব্দুস সোবহান শিকদার, তিনবাহিনীর প্রধান, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিল অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।