বাঘের আক্রমনে ঘায়েল হল নেপাল

স্পোর্টস ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ খাঁচাবন্দী হয়ে পড়েছিল মুশফিকুর রহিমের দল। আফগানিস্তানকে ৯ উইকেটে হারানোর পর তারা আবারও রক্তের গন্ধ পাওয়া বাঘ। সেই ক্ষুধার্ত বাঘের আক্রমণে ছিন্নভিন্ন হল  নেপালও। চট্টগ্রামে বিশ্ব টি-টোয়েন্টির দ্বিতীয় ম্যাচে নেপালের ১২৬ রানের চ্যালেঞ্জ ২৭ বল বাকি থাকতে পেরিয়ে যায় বাংলাদেশ। ৮ উইকেটের জয়ে সুপার টেনে খেলাটাও একপ্রকার নিশ্চিত করে ফেলল মুশফিকুর রহিমের দল।

ওপেনারের দৃঢ়তায় পাওয়ার প্লে’র  ৬ ওভারে বাংলাদেশ করে ৫৩ রান।  আরও একটা দাপুটে জয়ে সুপার টেনে খেলার পথে তখন ভালোভাবেই এগিয়ে যায় বাংলাদেশের গাড়িটা।

উড়ন্ত সূচনা এনে দেয়ার পর  ফিরে গেছেন তামিম ইকবাল। ২২ বলে ২ বাউন্ডারি ১ ছক্কায় ৩০ করে বসন্তের বলে সাগরকে ক্যাচ দিয়ে ফিনে তামিম। এরপর ৩৩ বলে ৫ বাউন্ডারি ২ ছক্কায় ৪২ করে  দূর্ভাগ্যজনক রানআউট হন সাব্বির। এরপর সাব্বির ২০ বলে ২১ ও সাকিবের ১৮ বলে ৩৭-এ ঝড়ো ইনিংসে সহজ জয় এনে দেন বাংলাদেশকে।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৪৪ রানে অপরাজিত ছিলেন এনামুল। চট্টগ্রামে নেপালের সাথে ইনিংসটা শুরু করেছিলেন যেন সেখান থেকেই। প্রথম ওভারেই একটি বাউন্ডারি আর একটি ছক্কা আসে তার উইলো থেকে। এনামুলকে সাচ্ছন্দ্যে খেলতে দেখে তামিমও ফিরেন ছন্দে। পাওয়ার প্লে’র শেষ ওভারে পরশ খড়কাকে একটি বাউন্ডারি ও ছক্কা মারেন তামিম। আরও একটা বিগ শট নিতে গিয়েই অবশ্য অষ্টম ওভারে ফিরেন তিনি।

বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলাটাই নেপালের জন্য রোমাঞ্চ। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে অবশ্য সেই মুগ্ধতায় উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসেনি নেপাল। ৩৯ রানে ৩ উইকেট হারিয়েও শেষ পর্যন্ত ৫ উইকেটে ১২৬ করেছে তারা।

এর আগে আল আমিনের এক ওভারে জোড়া আঘাতে ৩৯ রানে ৩ উইকেটে  পরিণত হয়েছিল নেপাল। এরপর শক্ত হাতেই দলের হালটা ধরেন অধিনায়ক পরশ খড়কা ও শারদ। তাদের দৃঢ়তায় ১৭ ওভারে ১০০ পেরোয় নেপাল। ১৯তম ওভারে অধিনায়ক পরশকে বোল্ড করে জুটিটা ভাঙ্গেন মাশরাফি। ৩৫ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ৪১ করে ফিরেন নেপালি অধিনায়ক। শেষ বলে রান আউট হওয়া শারদ করেন ৪৩ বলে ৪০ রান। ২ উইকেট নেয়ার পাশাপাশি শেষ ওভারে মাত্র ২ রান দেন আল আমিন। ৪ ওভারে মাত্র ১৭ রানে ২ উইকেট নেন এই তরুণ পেসার। এছাড়া মাশরাফি ২৩ রানে ১টি ও ফরহাদ রেজা নেন ২৭ রানে ১ উইকেট। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হওয়া সাকিবকে উকেটহীন রাখাটা বড় সাফল্য নেপালি ব্যাটসম্যানদের।

শিশিরের জন্য টস জিতে বোলিং নিতে দ্বিতীয়বার ভাবেননি মুশফিকুর রহিম। আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম বলে উইকেট নিয়েছিলেন মাশরাফি। তবে নেপালের সাথে পারেননি।  দ্বিতীয় বলেই ক্যাচ উঠেছিল সুবাস খকুরেলের। মাহমুদুল্লাহ মিস করেন সেটা। প্রথম ওভারে তিন রান দেন মাশরাফি।  চতুর্থ ওভারের শেষ বলে ফরহাদ রেজা এনে দেন প্রথম সাফল্য। ৮ রান করা সুবাস রেজাকে তুলে মারতে গেলে মিডঅফে ক্যাচ দেন রাজ্জাককে। এরপর সপ্তম ওভারের প্রথম বলে আঘাত আনেন আল আমিন। ১২ রান করা সাগরকে সাকিবের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান তিনি। সেই ওভারের তৃতীয় বলে জোড়া আঘাতে আল আমিন ফেরান মারকুটে ব্যাটসম্যান গায়েনন্দর মালাকে। ১৩ রান করে এলবি হন তিনি। ১ উইকেটে ৩৮ থেকে ৩ উইকেটে ৩৯ রানে পরিণত হয় নেপাল। ১৪ রানে থাকার সময় শারদের স্টাম্পিং অবশ্য মিস করেন মুশফিক। সাকিবের বল গ্রিপবন্দী করতে না পারায় জীবন পান শারদ। তাই আগের ম্যাচে ৮ রানে ৩ উইকেট নেয়া সাকিব ৪ ওভারে ২২ রান দিয়ে থাকেন উইকেটহীন। মাশরাফি নেন ১ উইকেট।

চট্টগ্রামের আজকের উইকেটটা মিরপুরের মত বুকে টেনে নিবে না স্পিনারদের। এটা পেস সহায়ক উইকেট। তাই তিন পেসারে খেলার পরিকল্পনা ছিল মুশফিকের। তবে শেষ পর্যন্ত আফগানিস্তানকে হারানো দলে কোন পরিবর্তন আনেনি বাংলাদেশ। হংকংয়ের সাথে জেতা ম্যাচের দল অপরিবর্তিত রেখে খেলেছে নেপালও।

বাংলাদেশ দল : মুশফিক,তামিম,এনামুল,সাকিব,নাসির,মাহমুদুল্লাহ,মাশরাফি,সাব্বির,রাজ্জাক,আল আমিন ও ফরহাদ রেজা

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ