টাকা পুরস্কার ঘোষণার ১ মাস পরও গ্রেফতার হয়নি ২ জেএমবি

JMB 2 জেএমবিসিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ দশ লাখ টাকা পুরষ্কার ঘোষণার পরও গত এক মাসে গ্রেফতার হয়নি ময়মনসিংহের ত্রিশাল থেকে ছিনতাই হওয়া দুই জেএমবি সদস্য। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বলছে বিষয়টি চলমান প্রক্রিয়া।

২৩ ফেব্রুয়ারি জেএমবির মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাকিব হাসান, হাফেজ মাহমুদ, রাসেল, সালাউদ্দিন সালেহীন ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বোমারু মিজানকে ত্রিশালের আমিরাবাড়ী সাইনবোর্ড এলাকা থেকে ছিনতাই করে জঙ্গিরা। এ সময় তারা আসামিবাহী প্রিজন ভ্যানের গতিরোধ করে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের উপর এলোপাথাড়ি গুলি বর্ষণ করে। এ ঘটনায় কর্তব্যরত পুলিশ সদস্য আতিক নিহত এবং এসআই হাবিবুর রহমান ও কনেস্টেবল সোহেল মিয়া গুরুতর আহত হন।

ওই দিন টাঙ্গাইল এলাকা থেকে ছিনতাইকৃত আসামি রাকিব হাসান, রাসেল, হাফেজ মাহমুদকে আটক করা হয়।

গোয়েন্দা সূত্র জানায়, জঙ্গি সদস্য ছিনতাইয়ের মূল পরিকল্পিনাকারী ছিলেন কারাবন্দি জঙ্গি হাফেজ মোহাম্মদ রাকিব। অল্প সময়ের মধ্যে জামিন পেতে যাচ্ছে এমন কয়েকজন জঙ্গি সদস্যদের সহযোগিতায় কারাবন্দি জঙ্গি ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেন তিনি। পরিকল্পনা মাফিক বেশ কয়েকজন জঙ্গি সদস্য জামিনে বের হয়ে এসে অভিযানের জন্য অর্থ এবং শক্তি সঞ্চারের যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে। তারা গত আট মাস ধরে কাশিমপুর, কোনাবাড়ী, গাজীপুর এলাকায় একাধিক বাসা ভাড়া নিয়ে জঙ্গি ছিনতাই করার জন্য সুবিধাজনক একটি স্থান খুঁজতে থাকে। তবে তারা নির্ভরযোগ্য কোনো স্থান না পাওয়ায় গত পাঁচ মাস আগে অপরাধ স্থান পরিবর্তন করে ভালুকা-ত্রিশাল এলাকা বেছে নেয়। তারা ওই এলাকায় পরিকল্পনা মাফিক একাধিক বাসা ভাড়া নিয়ে সেখানে দীর্ঘদিন যাবত অবস্থান করে। কেউ কেউ সপরিবারে সেখানে অবস্থান করে।

এ সময় তারা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিস্ফোরক, বোমা তৈরির নানা সরঞ্জামাদী, কাটার, অস্ত্র-গুলি, প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিভিন্ন যানবাহন সংগ্রহ এবং মওজুদ করতে থাকে।

ঘটনায় সরাসরি জড়িত গ্রেপ্তারকৃত একাধিক জঙ্গি সদস্যদের বক্তব্য থেকে জানা যায়, এ ঘটনায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রায় ১০/১৫ জন জঙ্গি সদস্য অংশগ্রহণ করে। অভিযানে দুটি মাইক্রোবাস, একটি ট্রাক, একটি সিডান টাইপ (প্রাইভেট) কার, চারটি মোটরসাইকেল, বোমা, নয়টি বিদেশি পিস্তল (৭.৬৫মিমি), ডাণ্ডাবেড়ি ভাঙ্গার বিশেষ ধরনের কাটার প্রভৃতি ব্যবহার করা হয়।

ঘটনার পরের দিন পুলিশ সদর দফতর ছিনতাই হওয়া জেএমবির অপর দুই সদস্য সালাউদ্দীন ওরফে সালেহিন, জাহিদুল ইসলাম ওরফে বোমা মিজানকে ধরিয়ে দিতে পারলে দুই লাখ টাকা পুরষ্কার ঘোষণা করা হয়। পরে তা বাড়িয়ে পাঁচ লাখ টাকা করে দুই জেএমবি সন্ধানদাতাকে ১০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেন মহাপুলিশ পরিদর্শক হাসান মাহমুদ খন্দকার।

নিষিদ্ধ জঙ্গি সংঘঠন জামাতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) সদস্যদের ধরতে ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে বিমানবন্দর এবং সীমান্তে সর্তক পাহারার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এ ব্যাপারে পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপুলিশ পরিদর্শক (মিডিয়া) জালাল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরি জানান, ছিনতাই হওয়া আসামিদের গ্রেফতারের বিষয়টি একটি চলমান প্রক্রিয়া। তাদের গ্রেফতারের সব ধরনের চেষ্টা চলছেও বলে তিনি জানান।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ