গরীব হওয়ায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, কক্সবাজারঃ টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের মধ্যম হ্নীলা নাছরপাড়ার অপহৃত স্থানীয় আনন্দ স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী নাছিমা খাতুন দীর্ঘ দুই মাসেও উদ্ধার হয়নি। সে জীবিত নাকি মৃত এই খবরটিও জানেন না তার পরিবার। নিরূপায় পিতা প্রথমে থানায় এজাহার দিয়েছিল। অসহায় আর গরীব হওয়ায় পুলিশ আইনগত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। শেষ পর্যন্ত আদালতে মামলা দায়ের করেছে পিতা। ঘটনার তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য থানাকে নির্দেশ দিলেও পুলিশ বরাবরই নিশ্চুপ। আর রহস্যজনক ভূমিকা পালন করায় এখন পরিবারে বিরাজ করছে কন্যা হারানোর শোক। গত ১৪ জানুয়ারি রাতে এই অপহরণের ঘটনাটি ঘটে।
কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে দায়েরকৃত মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ জানুয়ারি রাত আনুমানিক ৮টার দিকে হোয়াইক্যং ইউনিয়নের মধ্যম হ্নীলা নাছরপাড়ার গ্রামের ছৈয়দ আলমের শিশু কন্যা ও স্থানীয় আনন্দ স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী নাছিমা খাতুনকে বাড়ির উঠান থেকে জোরপূর্বক সিএনজিতে তুলে কমান্ডো স্টাইলে অপহরণ করে নিয়ে যায়। ওই দিন রাতে পিতাসহ পরিবারের সদস্যরা সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজাখুঁজি করে অপহৃতা নাছিমা খাতুনের সন্ধান না পেয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে।
সূত্রে আরো প্রকাশ, পরদিন ১৫ জানুয়ারি পিতা ছৈয়দ আলম বাদী হয়ে স্থানীয় নুরুল ইসলামের ছেলে নুর নবী, মৃত সিদ্দিক আহমদের ছেলে বাদশা মিয়া, জার আলীর পুত্র মো. ইসমাইল, মৃত কবির হোছনের ছেলে মমতাজ ও মৃত আবদুল খালেকের ছেলে নুর কামালের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় থানা পুলিশ এ বিষয়ে কোন ধরনের আইনানুগ পদক্ষেপ নেয়নি। এমনকি অপহৃতা ছাত্রীকে উদ্ধারের কোন ব্যবস্থাও প্রয়োজন মনে না করায় আরো অসহায় হয়ে পড়ে পরিবারটি।
শেষ পর্যন্ত থানা পুলিশ, জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন মহলে ধর্না দেয়ার পর কোন উপায় না পেয়ে ছৈয়দ আলম বাদী হয়ে একই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে গত ৯ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি (সিপি-১০৫/১৪) মামলা দায়ের করেন। মামলাটি আদালত আমলে নিয়ে ঘটনার তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য টেকনাফ থানাকে নির্দেশ দেন।
অপহৃতা নাছিমার পিতা জানান, আদালত থানাকে নির্দেশ দিলেও পুলিশ বরাবরই নিশ্চুপ রয়েছে। এই ঘটনার পর থেকে সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ইনচার্জ বদলী হয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোন সুরাহা করতে পারেনি পুলিশ।
তিনি আরো জানান, আমার মেয়ে জীবিত নাকি মৃত এ খবরটিও পাচ্ছি না। পুলিশও কোন অদৃশ্য শক্তির ইশারায় আমার মেয়েকে উদ্ধারের তৎপরতা চালাচ্ছে না তাও বুঝা মুশকিল হয়ে পড়েছে।