শীঘ্রই ব্যাংকের স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন : অর্থমন্ত্রী
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ ব্যাংকের স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো অচিরেই বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁ হোটেলে জনতা ব্যাংকের বার্ষিক সম্মেলন ২০১৪ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ব্যাংকিং খাতকে আরও আদর্শ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য শিগগিরই ব্যাংকগুলোর আলাদা বেতন কাঠামো অনুমোদন করা হবে। এবিষয়ে প্রায় সব কাজই ইতোমধ্যে গুছিয়ে আনা হয়েছে।’
আবদুল মুহিত বলেন, ‘হলমার্কের ঘটনার পর দেশের ব্যাংকিং খাতের উপর নজরদারি বেড়েছে। যা এই সেক্টরে উন্নয়নে সাহায্য করবে।’
রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকগুলোতে বেসরকারি অংশিদারিত্ব বাড়ানোর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকগুলোর মধ্যে একমাত্র রূপালি ব্যাংক বাদে আর সব ব্যাংকের বেসরকারি অংশিদারিত্ব কম। এ কারণে রাষ্ট্রীয় মালিকানার ব্যাংকগুলোকে বেসরকারি অংশগ্রহন বাড়ানো হবে। এবং সেটা এ সরকারের আমলেই করা হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘ব্যাংকিং খাত প্রসারিত হওয়ার মানে হচ্ছে অলস সম্পদের ব্যবহার বাড়ছে। ব্যাংকিং খাতে জালিয়াতি চুরি আছে আর সেগুলো প্রতিরোধের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’
ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় নিরাপত্তা জোরদার করতে সিসি ক্যামেরাসহ নানা নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অর্থপ্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান জানান, ব্যাংকের শহর ও গ্রামের লভ্যাংশ এক রকম হয় না। এ কারণে গ্রামের সেবাকে সিএসআর হিসাবে করার কথা বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘ব্যাংকগুলোতে প্রযুক্তির ব্যবহার আরও বাড়াতে হবে। অনলাইন শাখা বাড়াতে হবে। জনতা ব্যাংক ইতোমধ্যে রিয়েল টাইম সিস্টেম চালু করেছে। এর ফলে আন্তঃব্যাংক লেনদেন তাৎক্ষণিক ভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে। বিশ্বের অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত বলেন, ‘রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকগুলো যদি বেসরকারি খাতে দিয়ে দেওয়া হয় তাহলে কিছু লোক এর সুবিধা পাবে। আগামি ৫ বছরের মধ্যে এসব লোক ফুলেফেপে সব ব্যাংকের মালিক হয়ে যাবে।’
সোনালী ব্যাংকের সিএসআর কার্যক্রমে টাকা অন্যখাতে চলে যাচ্ছে ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় খাতের সব চেয়ে বড় ব্যাংক হলো সোনালী ব্যাংক। অথচ ব্যাংকটির সিএসআর ব্যয় ধরা হয়েছে মাত্র ২ কোটি টাকা। আর এ ব্যয়ের একটি বড় অংশ ব্যাংকের সিবিএ নেতাদের কল্যাণে চলে যায়। জনতা ব্যাংকের ২০০৯ সালে সিএসআর ব্যয় ছিল ২৫ লাখ টাকা, ২০১৩ সালে তা করা হয়েছে ৩০ কোটি টাকা এবং ২০১৪ সালে এ ব্যয়ের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫ কোটি টাকা। এর একটি বড় অংশ মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে ব্যয় করা হচ্ছে।’
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের পরিচালক মো. ইমদাদুল হক, নাগিবুল ইসলাম দীপু, ড. আর এম দেবনাথ, সৈয়দ বজলুল করিম বিপিএম, অধ্যাপক মোহাম্মদ মঈনুদ্দীন, মো. আবু নাসের, সঙ্গীতা আহমেদ, অধ্যাপক ড.নিতাই চন্দ্র নাগ, এ কে এম কামরুল ইসলাম এফসিএ ও মো. এহাবুবুর রহমান হিরণ এবং ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ আরও অনেকে।