আমি ক্রিকেটের ঈশ্বর নই: টেন্ডুলকার
ভারতের কোটি কোটি ক্রিকেট ভক্ত শচীন টেন্ডুলকারকে ক্রিকেট ‘ঈশ্বর’ হিসেবে মনে করেন। তবে এমন ধারণের সঙ্গে একমত নয় লিটল মাস্টার নিজে। টেন্ডুলকার বলেন, ‘আমি ক্রিকেটের ঈশ্বর নই। আমার অনেক ভুল হয়। কিন্তু ঈশ্বরের তো কো ভুল হয় না।’
দীর্ঘ ২২ বছর ধরে ভক্তদের আশা-আকাঙ্ক্ষা কাঁধে নিয়ে এগিয়ে চলেছেন টেন্ডুলকার। ২২ গজে দাঁড়িয়ে ব্যাট হাতেই তিনি সবার মনোবাসনা পূরণ করেছেন। এখনো খেলে চলেছেন তার আপন ছন্দেই। হয়তো অনেক সময় ব্যর্থও হয়েছেন। কিন্তু যা করেছেন, তাই তো ক্রিকেটাতিহাসে বিরল রেকর্ড হয়েই আছে। শচীন টেন্ডুলকার যেন রেকর্ডের বরপুত্র। ক্রিকেটের খুব কম রেকর্ডই আছে তা তিনি করতে পারেননি। তাই তো টেন্ডুলকারকেই ক্রিকেট ‘ঈশ্বর’ হিসেবে মনে করেন ভারতের ক্রিকেট ভক্তরা।
কিন্তু এমন কথার সাথে মোটেও একমত নন টেন্ডুলকার। এর আগেও এমন কথার ঘোড় বিরোধিতা করেছেন তিনি। এখন আবারো দৃঢ়ভাবে টেন্ডুলকার বললেন তিনি ক্রিকেট ঈশ্বর নন।
সকল খেলোয়াড়ই শৈশবকালে তার স্বপ্নের ক্রিকেটারের খেলা অনুসরণ করে থাকেন। সেই তালিকা থেকে বাদ যাননি টেন্ডুলকার নিজেও। শৈশবকালে তার স্বদেশী সুনীল গাভাস্কারকে অনুসরণ করেছেন তিনি। আর পরিপূর্ণ খেলোয়াড় হওয়ার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের ভিভ রিচাডর্সের খেলা আকৃষ্ট করতো বলে জানালেন ওয়ানডে ও টেস্টের সর্বোচ্চ রানের মালিক টেন্ডুলকার। তিনি বলেন, ‘আমি যখন ছোট ছিলাম তখন গাভাস্কারের খেলা অনুসরন করতাম। আর যখন বড় হলাম এবং আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা শুরু করলাম তখন আমার রিচাডর্সের খেলা ভালো লাগতো। তারা আমার আদর্শ। তাই আমি চেয়েছিলাম তাদের দু’জনের খেলার ছাপ আমার খেলায় থাকুক।’
এশিয়া কাপের গত আসরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টেস্ট ও ওয়ানডে মিলিয়ে শততম সেঞ্চুরির স্বাদ পান টেন্ডুলকার। তবে এজন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে তাকে। শততম সেঞ্চুরির মুহূর্ত সম্পর্কে শচীন বলেন, ‘শততম সেঞ্চুরি করার পরও আমি লাফিয়ে তা উদযাপন করিনি। তখন আমি ক্রিজে থেকেই ঈশ্বরকে প্রশ্ন করেছিলাম -কেন এতো দেরিতে তা পেলাম আমি? আমার কি ভুল ছিল? বিলিয়ন সংখ্যক মানুষ এই সেঞ্চুরিটির জন্য অপেক্ষা করছিল, কিন্তু কেন এটি দেরিতে হলো?’
পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ দিয়ে ১৯৮৯ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় টেন্ডুলকারের। আর ওই ম্যাচের স্মৃতি রোমন্থন করে তিনি বলেন, ‘ঘরোয়া ক্রিকেট আর আন্তর্জাতিক ম্যাচের মধ্যে পার্থক্য অনেক। কারন ওই ম্যাচে খেলাটা অনেক কঠিন ছিল। বোলাররা খুব দ্রুত বল করছিল। আমি ভেবেছিলাম ওই ম্যাচই ছিল আমার প্রথম ও শেষ টেস্ট। যখন আমি ড্রেসিং রুমে আসি তখন আমার চোখে জল চলে আসে। তবে এরপর অনেকেই আমাকে সাহস যুগিয়েছে এবং বলেছে এটা নিয়ে উদ্বিগ্ন হবার কিছু নেই।’
ভারতের হয়ে ১৯৮টি টেস্ট, ৪৬৩টি ওয়ানডে ও ১টি টি-২০ ম্যাচ খেলেছেন টেন্ডুলকার। টেস্টে ১৫,৮৩৭ রান, ওয়ানডেতে ১৮,৪২৬ এবং টি-২০তে ১০ রান করেন তিনি।