ইসলামী ব্যাংকের অনুদান ফিরিয়ে দিচ্ছে সরকার
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠেয় ‘লাখো কণ্ঠে সোনার বাংলা’কর্মসূচিতে ইসলামী ব্যাংকের তিন কোটি টাকার অনুদান নিচ্ছে না সরকার।
রোববার দুপুরে অর্থমন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম সচিব অরিজিৎ চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড লাখো কণ্ঠে সোনার বাংলা অনুষ্ঠানের জন্য তিন কোটি টাকা প্রদান করেছে। এই পর্যায়ে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড প্রদত্ত সহায়তা গ্রহণে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করে। সে অনুযায়ী, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড প্রদত্ত আর্থিক সহায়তা আমরা গ্রহণ করছি না।’
ইসলামী ব্যাংকের সহায়তা আইসিসি ওয়ার্ল্ড টোয়েন্টি-২০ বাংলাদেশ ২০১৪ তে দিতে পারে অথবা কোথাও নাও দিতে পারে- উল্লেখ করে বিৃবতিতে আরো বলা হয়েছে, ‘ইসলামী ব্যাংক আইনগতভাবে একটি নিবন্ধিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং তারা এদেশে তাদের কার্যক্রম আইনগতভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের সমন্ধে কারো কারো তেমন ভালো ধারণা নেই এবং তাদের সহায়তা গ্রহণে আগেও অনেক প্রতিষ্ঠান অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তাই দ্ব্যর্থহীনভাবে বলা যেতে পারে যে, লাখো কণ্ঠে সোনার বাংলা অনুষ্ঠানে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের সহায়তা গ্রহণ করা হচ্ছে না।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমাদের সরকার যেমন গত মেয়াদে তেমনি বর্তমান মেয়াদে অনেকগুলো জাতীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এবং করবে। এসব উদ্যোগে আমাদের চিরাচরিত পদ্ধতি অনুযায়ী সারাজাতি অংশগ্রহণ করে এবং আমাদের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন শিল্প ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এসব উদ্যোগে অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গে অংশগ্রহণ করে। সরকারও এসব বিষয়ে সহযোগিতা এবং উৎসাহ প্রদান করে।’
এতে বলা হয়েছে, ‘এই কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় বর্তমান মেয়াদের শুরুতেই দুটি বড় ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা এবার আইসিসি ওয়ার্ল্ড টোয়েন্টি-২০ বাংলাদেশ ২০১৪ এর সমস্ত খেলা আমাদের দেশে অনুষ্ঠান করছি। এজন্য সরকারের তরফ থেকে অবকাঠামো খাতে কয়েকশ’ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। এই গুরুত্বপূর্ণ খেলাটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য আমরা আমাদের তরফ থেকে বিভিন্ন আয়োজন করেছি এবং সেসবে আমাদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সহায়তা কামনা করেছি এবং পেয়েছিও।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমাদের দ্বিতীয় উদ্যোগ হচ্ছে আগামী স্বাধীনতা দিবসে লাখো কণ্ঠে সোনার বাংলা গানটি উপস্থাপন করা। এক্ষেত্রেও আমাদের ব্যক্তি মালিকানা খাত অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গে অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করতে এগিয়ে এসেছে। আমাদের অর্থনীতিতে ব্যক্তি মালিকানা খাতই দেশটাকে দ্রুতগতিতে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা তাদের এজন্য সব রকমের সহায়তা প্রদান করে থাকি এবং তারা তাদের সামাজিক দায়িত্ব পালন করে জাতীয় উদ্যোগে নানাভাবে অংশগ্রহণ করে।’
‘এদুটি উদ্যোগ কাছাকাছি সময়ে নেয়া হয়েছে এবং সেজন্য সরকারের তরফ থেকে আমরা আমাদের ব্যক্তি মালিকানা খাতকে এ বিষয়ে তাদের অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী এ দুটি উদ্যোগে এগিয়ে আসার আহ্বান করি। তদনুযায়ী তারা দুটি উদ্যোগের জন্য তাদের সহায়তার হাত এগিয়ে দেন। এ বিষয়ে আমরা তাদের অবহিত করি যে, এ দুটি উদ্যোগের জন্য আমাদের প্রয়োজন প্রায় ৯০ কোটি টাকা। এবং তারা তাদের ইচ্ছামতো একটি বা দুটি উদ্যোগে অংশ নিতে পারে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের ইচ্ছামতো এই দুটি উদ্যোগে সহায়তা প্রদান করেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাদের প্রদত্ত চেকগুলো গ্রহণ করে এবং সেখানে মাননীয় অর্থমন্ত্রী, সংস্কৃতিমন্ত্রী, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী, ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী, ক্রীড়া উপমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন।’