সকল পরিবহনকে সড়কে চলতে টোল দিতে হবে
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ দেশের সব সড়ককে টোলের আওতায় আনার লক্ষ্যে ‘টোল নীতিমালা ২০১৪’র চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এর ফলে সব ধরণের পরিবহনকে মহাসড়ক, আঞ্চলিক সড়ক ও জেলা সড়কে চলতে টোল দিতে হবে।
সর্বনিম্ন পাঁচ টাকা ও সর্বোচ্চ এক হাজার টাকা টোলের বিধান রেখে এ নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়। যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সড়ক বিভাগ শিগগিরই এই নীতিমালা অনুযায়ী টোল আদায়ের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবে।
সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রিসভার এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আমাদের একটি বিশাল সড়ক নেটওয়ার্ক আছে। এর রক্ষণাবেক্ষণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সড়ক ব্যবস্থার উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণে তহবিল গঠনের লক্ষ্যে সরকার এর আগে একটি আইনও করেছে। মন্ত্রিসভায় উপস্থাপনের জন্য যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সড়ক বিভাগের পাঠানো ‘টোল নীতিমালা-২০১৪’র খসড়া আজ মন্ত্রিসভায় উপস্থাপনের পর তা মন্ত্রিসভা চুড়ান্ত অনুমোদন করে।’
মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা বলেন, ‘দেশের সব সড়ক টোলের আওতায় আনাই সরকারের লক্ষ্য। এ জন্য মন্ত্রিসভা সর্বনিম্ন পাঁচ টাকা ও সর্বোচ্চ এক হাজার টাকা টোলের বিধান রেখে ‘টোল নীতিমালা ২০১৪’র’ চুড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এর ফলে সব ধরনের পরিবহনকে মহাসড়ক, আঞ্চলিক সড়ক ও জেলা সড়কে চলতে টোল দিতে হবে।’
আদায়কৃত টোলের অর্থ সড়ক ব্যবস্থার উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণে গঠিত তহবিল জমা দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘মহাসড়ক, আঞ্চলিক সড়ক ও জেলা সড়কে সব ধরনের পরিবহন চলতে ৪শ’ টাকা বেইজ টোল ধার্য করা হয়েছে। এ অনুযায়ী ট্রেইলার- বেইট টোলের আড়াইগুন অর্থাৎ এক হাজার টাকা, বড় ট্রাক- বেইজ টোলের দ্বিগুন অর্থাৎ ৮শ’ টাকা ও ছোট ট্রাক বা মিডিয়াম ট্রাক- বেইজ টোলের সমপরিমান অর্থাৎ ৪শ’ টাকা টোল ধার্য করা হয়েছে। এছাড়া বড় বাস ২শ’ টাকা, ছোট বাস বা মিনি বাস ১শ’ টাকা ও মাইক্রোবাস বা প্রাইভেট কার ২৫ টাকা হিসেবে টোল ধার্য করা হয়েছে। রিকশাকেও সর্ব নিম্ন টোল ধার্য করা হয়েছে পাঁচ টাকা হিসেবে।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব টোল আদায়ে ১০টি পলিসির কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘কোন কোন স্থাপনায় সড়ক বা ব্রিজে টোল আদায় করা যাবে তা নীতিমালায় বলা হয়েছে। টোল আদায়ের পদ্ধতি কি হবে তা বলা হয়েছে। আদয় করা টোল কিভাবে কোথায় জমা হবে তাও বলা হয়েছে। কি পদ্ধতিতে টোল আদায় করা হবে তা বলা হয়েছে। টোল কিভাবে বাড়ানো বা যৌক্তিকভাবে সম্বনয় করা হবে তা উল্লেখ করা হয়েছে। নীতিমালা সংশোধনের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। বিশেষ করে টোল আদায় পদ্ধতি স্বচ্ছ করার জন্য নীতিমালা অনুমোদন করা হয়েছে। মনিটরিংয়ের কথা বলা হয়েছে নীতিমালায়।’
যেসব স্থাপনায় টোল আদায় করা হবে এর মধ্যে মহাসড়ক, আঞ্চলিক মহাসড়ক ও জেলা মহাসড়ক রয়েছে। এ সড়কগুলো ছাড়াও গুররুত্বপূর্ণ সড়ক হিসেবে কিছু সড়ক গণ্য করা হবে। ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ককের কথা উল্লেখ করেন সচিব।
এছাড়া ফ্লাইওভার, ফেরি, ব্রিজ রয়েছে সেগুলো টোলের আওতায় থাকবে। এ সমস্ত সড়কে ওভারপাস সেতুগুলোও টোলের আওতায় পড়বে। পিপিপির আওতায় সির্মাণ করা হলে টোল আদায়যোগ্য হবে।
তিনি আরো বলেন, সেতুর ক্ষেত্রে ২শ’ মিটারের নিচে থাকা সেতু থেকে টোল আদায় করা হবে না। তবে ফেরি চলাচলের জায়গায় স্থায়ী সেতু হলে টোল আদায়যোগ্য হবে। ২০০ থেকে ৫০০ মিটার, ৫০১ থেকে ৭০০ মিটির, ৭০১ মিটার থেকে ১০০০ মিটার এবং ১০০১ মিটার থেকে তদুর্ধ্ব সেতু টোল আদায়যোগ্য হবে।