বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্কে ভাড়া রুমে অনৈতিক কর্মকান্ড
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, কক্সবাজারঃ পর্যটন সমাগম এলাকা ও দেশের প্রথম চকরিয়া ডুলাহাজার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্কের সুনাম বিনষ্ট হতে চলেছে। সাফারী পার্ক ঘেঁষেই গড়ে উঠা হোটেল ও কটেজে ঘণ্টা হিসেবে রুম ভাড়া নিয়ে প্রকাশ্যে চলছে অনৈতিক ব্যবসা।
এলাকাবাসী ও বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত অভিযোগে জানা গেছে, ডুলাহাজার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্কে পর্যটকসহ দর্শনার্থী স্থানীয় লোকজনের আগমনকে পুঁজি করে পার্ক গেইটস্থ বেশ কয়েকটি আবাসিক হোটেল ও কটেজ গড়ে তোলা হয়। আবাসিক হোটেল ও কটেজ ব্যবসার আড়ালে সেখানে ওপেন সিক্রেটে নারী ব্যবসাসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ড চলে আসছিল। এই সব আবাসিক হোটেল ও কটেজে গ্রাহক স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসার ছাত্রী, প্রবাসীর স্ত্রী ও সরাসরি দেহ ব্যবসায় জড়িত নারীরা। এসব হোটেল ও কটেজের রুম ভাড়া দেয়া হয় প্রতি ঘন্টা হিসেবে। ঘন্টায় রুম ভাড়া দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে হোটেল ও কটেজ মালিকরা।
দেশী ও বিদেশী পর্যটক সমাগমের উন্মুক্ত স্থান হিসেবে পরিচিত একমাত্র সাফারী পার্কের পাশে প্রকাশ্যে এ ধরনের নীতি নৈতিকতা বির্বজিত কাজের কারণে এলাকাবাসী ফুঁসে উঠার পাশাপাশি প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগও দায়ের করে এ ধরনের কাজ দমাতে পারেনি।
অভিযোগ ছিল এসব কাজে স্থানীয় সরকার দলীয় কতিপয় নেতাকর্মী সহযোগীতা দিয়ে আসছিল।
এদিকে, চকরিয়া থানার উপ-পরির্দশক (এসআই) কল্লোল বড়ুয়ার নেতৃত্বে একদল পুলিশ সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে সাফারী পার্ক গেইটস্থ মেরিডিয়ান গেস্ট হাউস, সাফারী টু স্টার, ফোর ব্রাদার্স এন্ড টু ব্রাদ্রার্স কটেজ, মাসুমা ভিলাসহ কয়েকটি কটেজে ঝটিকা অভিযান চালায়।
এসময় কটেজ গুলোর বিভিন্ন কক্ষ থেকে অনৈতিক কাজ করাকালীণ আটক করা হয় কলেজছাত্রীসহ আটজন নারী ও পুরুষকে। আটককৃতদের মধ্যে ঈদগাঁও ফরিদ আহম্মদ কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী, খুটাখালী মেধাকচ্ছপিয়া, বরইতলি, মহেশখালী, লোহাগাড়া এলাকার কলেজ, মাদ্রাসা, স্কুলছাত্রী ও গৃহবধূ রয়েছে। এদের মধ্যে ঈদগাঁওয়ের দুই জন, চকরিয়ার চারজন, নাইক্ষ্যংছড়ির একজন ও লোহাগাড়ার একজন। তবে সংগত কারণে নাম ও পরিচয় গোপন রাখে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, আটককৃত খদ্দেররা হচ্ছেন, চিরিংগা ২নং ওয়ার্ডের অরুর পুত্র সুজিত, লোহাগাড়া বড় হাতিয়ার আবদুল মালেকের পুত্র এহেসান, সদরের ঈদগাঁও পূর্ব ফরাজীপাড়া এলাকার নুরুল ইসলামের পুত্র শামীম, ঈদগাঁও ভাদিতলা এলাকার মো. হোছনের পুত্র রবিউল হাসান, মহেশখালী গোরকঘাটা এলাকার আবদু সালামের পুত্র আবদুল্লাহ, মহেশখালী কালামারছড়া এলাকার নুরুল ইসলামের পুত্র মীর কাশেম, চট্টগ্রাম গাংগিয়া এলাকার ফয়েজ আহমদের পুত্র সাহাব উদ্দিন রাসেল ও পেকুয়া ছিরাদিয়া এলাকার ফরিদ আহম্মদের পুত্র রোবেল।
অপরদিকে, এই সব হোটেল ও কটেজে অভিযান চালিয়ে ছাত্রীসহ ১৬ জনকে আটক করা হলেও ঘণ্টা হিসেবে এসব কটেজের রুম ভাড়া দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া মালিক-কর্মচারীদের কাউকেই রহস্যজনক কারণে আটক কিংবা এদের বিরুদ্ধে কোন ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ।
চকরিয়া থানার অফিসার ইনজার্চ (ওসি) মোহাম্মদ ফরহাদ জানান, স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া ছাত্রীদের তাদের অভিভাবকদের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হবে এবং অন্যান্যদের ভ্রাম্যমাণ আদালতে মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।