জামায়াতকে ৭ অভিযোগে নিষিদ্ধের সুপারিশ
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ দল হিসেবে জামায়াতকে নিষিদ্ধের সুপারিশ করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যালের তদন্তকারী সংস্থা। একাত্তরের সময় জামায়াত সাত ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলো বলে জানায় সংস্থাটি।
মঙ্গলবার বেলা ১১টায় এক সংবাদ সম্মেলন এ কথা জানায় সংস্থটির প্রধান আবদুল হান্নান খান।। জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে একাত্তরে সংগঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত চূড়ান্ত করে সংস্থাটির ধানমন্ডির সেফ হোমের কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আহ্বান করা হয়।
তদন্ত প্রতিবেদনে জামায়াতের পাশাপাশি দলটির মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত দৈনিক সংগ্রাম নিষিদ্ধ করার আবেদন করা হয়েছে। একইসঙ্গে একাত্তরে জামায়াত করেছিলো ঐ নেতৃবৃন্দের চিরকালের জন্য রাজনীতি নিষিদ্ধ করার কথা বলা হয়েছে।
৩৭৩ পৃষ্ঠা মূল প্রতিবেদনের সঙ্গে জব্দ তালিকা ও দালিলিক প্রমানপত্রসহ সাতটি খন্ডে মোট ২ হাজার ৩০৩ পৃষ্ঠা ও অনান্য ডকুমেন্টসহ ১০ খন্ডে ৩ হাজার ৭৬১ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। বিভিন্ন লেখকের বই, গবেষণা পত্র ও ম্যগাজিনসহ দুই শতাধিক বইও এতে সংযুক্ত করা হয়। তদন্তকার্যে সাক্ষী ছিলেন ৭০জন।
প্রতিবেদনে অপরাধের সময়কাল ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর উল্লেখ করা হয়। এছাড়া অপরাধে স্থান সমগ্র বাংলাদেশ, তদন্ত সময় ২০১৩ সালের ১৮ আগস্ট থেকে ২০১৪ সালের ২৫ মার্চ পর্যন্ত বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে ছিলেন মতিউর রহমান।
জামায়াতের বিরুদ্ধে এ প্রতিবেদন ও আনুষঙ্গিক নথিপত্র ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে দাখিল করা হবে বলে জানান তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক (আইজিপি) আবদুল হান্নান খান।
তিনি জানান, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে পাকিস্তানি বাহিনী দীর্ঘ নয় মাস এ দেশের মানুষের ওপর নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায়। আর পাক বাহিনীকে এ হত্যাযজ্ঞে সহযোগিতা করে জামায়াতে ইসলামী। একাত্তরে জামায়াতের অবস্থান সম্পর্কে তদন্তে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
আবদুল হান্নান খান বলেন, ১৯৭১ সালে জামায়াতে ইসলামী ও তার সহযোগী সংগঠন আল বদর, রাজাকার ও তৎকালীন দৈনিক পত্রিকা ও দলটির মুখপাত্র সংগ্রাম পত্রিকা মানবতাবিরোধী সব অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল। সাংগঠনিকভাবে এর কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল জামায়াত।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার তদন্ত প্রতিবেদনটি চিফ প্রসিকিউটরের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এরপর প্রসিকিউশন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রতিবেদনটি ট্রাইব্যুনালে দাখিল করবেন।
গত বছরের ১৮ আগস্ট জামায়াতের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। প্রায় আট মাস পর বিভিন্ন নথিপত্র, স্থান পরিদর্শন করে জামায়াতের বিরুদ্ধে তদন্ত চূড়ান্ত করা হয়েছে।