বাংলাদেশের স্পিন ফাঁদে উইন্ডিজ দমনের ছক
স্পোর্টস ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ ক্রিকেট ইজ আ ফানি গেম! বিশ্বাস না হলে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ টি-টোয়েন্টির রেকর্ডটা দেখুন। যখন এ ফরম্যাটের কিছুই বুঝত না বাংলাদেশ, সেই ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে প্রথম সাক্ষাতেই হারিয়েছিল ক্যারিবীয়দের। পরের বিশ্বকাপে ঘরের মাঠে সে জ্বালা জুড়ানো ওয়েস্ট ইন্ডিজকে মিরপুরে হারিয়ে অধিনায়কত্বের অভিষেক উদযাপণ করেছিলেন মুশফিক। ১৪ মাস পর একই মাঠে জিতে সমতা আনে ক্যারিবীয়রা। প্রকৃতি বাধা হয়ে না দাঁড়ালে সেই ২-২ সমতা ঘুচে তৈরি হবে ব্যবধান। তার আগ পর্যন্ত পরিসংখ্যানে একই সমতায় বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ইন্টারেস্টিং তো বটেই!
তারপরও হংকংয়ের কাছে হেরে ওঠা দল পরের ম্যাচেই বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের হম্বিতম্বি করাটা কৌতুককরও হতো। তাই আজ সুপার টেন পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের লক্ষ্য ওয়েস্ট ইন্ডিজকে কঠিন লড়াইয়ে দেওয়া। এরপর যদি ‘সুর-তাল-লয়’ মিলে যায়, তাহলে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে ৩-২ ব্যবধানে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।
এ ফরম্যাটে ব্যাকরণশুদ্ধ ব্যাটিংয়ে ফায়দা নেই, স্কিলের সঙ্গে চাই বক্সারের পাওয়ারও। দুর্ভাগ্যজনকভাবে শক্তিটা যে দলে নেই, সেটি অকাতরে স্বীকারও করেন মুশফিক, ‘ওদের মতো পাওয়ার আমাদের নেই।’ সেই ‘ওদের’ মানে ওয়েস্ট ইন্ডিজ আবার পাওয়ারের আধার! বিশালাকৃতি দিয়ে উইকেটের প্রায় এক বর্গগজ জায়গাকে হিটিং জোন বানিয়ে ফেলেন ক্রিস গেইল, যেখানে বল পেলেই দর্শককে ক্যাচিং প্র্যাকটিস করান তিনি। মারলন স্যামুয়েলস, ডোয়াইন ব্রাভো এমনকি, সরু কাঁধের লেন্ডল সিমন্সও ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিংটা জানেন। সেই শক্তিটাই বাংলাদেশের নেই।
নেই বলেই আজন্ম বেশি স্ট্রোক খেলার দুর্নাম মাথায় নিয়ে খেলা দলটি পিছিয়ে টি-টোয়েন্টিতেও, যেখানে বলে বলে মারার দক্ষতারই জয়জয়কার! ঠিক একই কারণে সবশেষ সাক্ষাতে ক্যারিবীয়দের ১৯৭ রানের জবাবে ৯ উইকেট হাতে রেখেও ১৭৯ রানে থেমে পড়েছিল বাংলাদেশ।
আজও টপ অর্ডারের কাছ থেকে এমন নৈপুণ্যই আশা করছেন মুশফিক, ‘আমাদের লোয়ার অর্ডারে বিগ হিটার নেই। তবে খেয়াল করে দেখবেন টি-টোয়েন্টির ভাগ্য গড়ে দেয় টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরাই। আমি চাই আমাদের টপ ফোরও যেন দায়িত্ব নিয়ে কাজটা করে।’
গেইল-বধের পরিকল্পনার পথ ধরে দলে ফেরা অফস্পিনার সোহাগ গাজী বিগ হিটিংও জানেন। রুবেল হোসেনের পরিবর্তে স্কোয়াডে ঢোকা জিয়াউর রহমানের কাছেও একই দাবি অধিনায়কের। কিছুদিন আগেও লোয়ার মিডল অর্ডারে যে দুজনের কাছে দাবিটা জানাতেন, ফর্মহীনতার কারণে সেই দাবি থেকে নিষ্কৃতি মিলেছে নাসির হোসেন ও মাহমুদ উল্লাহর! প্রথমজন তো ঝরেও পড়তে পারেন আজকের ম্যাচের একাদশ থেকে।
মাহমুদ উল্লাহ খেলছেন অফস্পিন সামর্থ্যর গুণে। ভারতীয় স্পিনের বিপক্ষে ক্যারিবীয়দের হাঁসফাঁস করতে দেখে বাংলাদেশের গেম প্ল্যান আরও বেশি স্পিননির্ভর। বর্তমান ফর্মের অফস্পিনার মাহমুদ উল্লাহ এবং একাদশে ফেরা সোহাগের কাছে অনেক প্রত্যাশা মুশফিকের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানরা সিঙ্গেলস বেশি খেলে না, বাউন্ডারির পেছনে ছোটে। ওদের বিপক্ষে তাই আমাদেরও বিশেষ পরিকল্পনা আছে।’
সেই পরিকল্পনায় ভালোমতোই আছেন সোহাগ এবং অবশ্যই সাকিব আল হাসান, যিনি মনে করেন, ‘আমাদের ভালো খেলার পাশাপাশি ওদেরও (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) খারাপ খেলতে হবে।’ এ দুটি শর্তেই কেবল সুপার টেনের ম্যাচ জেতা সম্ভব বলে মনে করেন সাকিব।