জাতীয়তাবাদী শক্তি ঐতিহাসিক প্রতিশোধ নেবে
সিনিয়র রিপোর্টার, মনির হোসেন মিন্টু, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ এই নিপীড়ক ফ্যাসিস্ট অবৈধ সরকার যদি হত্যা, গুম না থামায় তাহলে গুপ্তঘাতক ও চক্রান্তকারীদের উচ্ছেদ করতে ঐতিহাসিক প্রতিশোধ নেবে জাতীয়তাবাদী শক্তি। বৃহস্পতিবার দুপুরে দলের নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির দপ্তরের দায়িত্ব প্রাপ্ত যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ঢালাও দমন পীড়ন মোকাবেলা করতে একমাত্র ধারালো অস্ত্র হচ্ছে- সংগঠিত জনগণের সম্মিলিত বুলন্দ আওয়াজ। স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের নেতৃত্বদানকারী জাতীয়তাবাদী শক্তি প্রধান ও শ্রেষ্ঠযোদ্ধা হিসেবে লড়াই করে যাচ্ছে।
রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বুলি আউড়িয়ে এরা জনগণের কাছে বিভ্রান্তি ছড়ায়।
তিনি বলেন, যাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি সন্ত্রাস, গুম, খুন ও অধিপত্য বিস্তার- তারা কখনোই স্বাধীন স্বার্বভৌম দেশ চায় না।
এদের ক্ষমতার ভিত্তি হচ্ছে বন্দুক। এরা এখন দস্যুবৃত্তির মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে আছে। জনগণের সমর্থনকে এরা আর জরুরি মনে করছে না।
তিনি আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্যে বলেন, এরা নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেয়নি, বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায়, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দেয়া আইনি ক্ষমতাকে তারা নিজেদের ইচ্ছা মত ব্যবহার করে।
রিজভী বলেন, সংবিধানে নির্বাচন কমিশনকে নিবার্হী বিভাগের প্রভাবমুক্ত হয়ে নির্বাচন পরিচালনা করার জন্য যথেষ্ট ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। অথচ নির্বাচন কমিশন মুখে তর্জন, গর্জন করলেও বাস্তবে ভোট ডাকাতি ঠেকাতে কোনো কার্যকর ব্যবস্থাগ্রহণ করেনি। নির্বাচন কমিশন সরকারি প্রার্থীর পক্ষে পক্ষপাতিত্ব না করতে প্রশাসনযন্ত্রকে নিরপেক্ষ রাখতে পারেনি। বিরোধী দল সমর্থিত প্রার্থীর এজেন্টও নির্বাচন কেন্দ্রের বুথে নিরাপত্তা দিতে পারেনি। ব্যালট বাক্সে চাল ভোট ভরা ও বাক্স ছিনতাই করা বন্ধ করতে পারেনি।
উপজেলা নির্বাচনে কারচুপি ও শক্তি প্রয়োগের ক্রমোন্নতি ধাপে ধাপে চরম মাত্রা লাভ করছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, বলপ্রয়োগের মাধ্যমে ভোটকেন্দ্র দখলসহ সারাদেশে রক্তাক্ত ভোট ডাকাতি করে তারা উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যানের অধিকাংশ পদগুলো ছিনিয়ে নেয়। উপজেলা নির্বাচন এবং সহিংসতা এখন সার্বক্ষণিক সঙ্গী। ফলাফল ছিনিয়ে নিতে তারা বিরোধী নেতা-কর্মীদের হত্যা, অমানবিক হয়রানি এবং নির্বিচারে গ্রেফতার করে কারাগার ভরে ফেলেছে।
তিনি বলেন, প্রথম দফা উপজেলা নির্বাচনে এরা ভোটকেন্দ্র থেকে বিএনপি সমর্থিত এজেন্টদের বের করে দিয়ে ব্যালট পেপারে সিল মারা, ব্যালট বাক্স পুড়িয়ে ফেলা, ভোটারদের ভয়-ভীতি প্রদর্শনসহ দেদারসে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে যায়। এরপরে প্রতি দফায় তাদের সহিংস তৎপরতা ক্রমবর্ধমান হারে বৃদ্ধি পায়। ভয়ংকর দুঃশাসনে জনগণ চরমভাবে বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়ায় সরকারি দল উপজেলা নির্বাচনে জনগণকেই শত্রু হিসেবে বিবেচনা করছে। সুতরাং প্রতি দফায় সর্বান্তকরণে সহিংস সন্ত্রাসের দ্বারা যে চেষ্টাটি তারা চালিয়েছে সেটি হচ্ছে-ভোটারদের মনে ভোটকেন্দ্রে আসতে একধরণের ভীতির সৃষ্টি করা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সহ দপ্তর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি, আসাদুল করিম শাহিন প্রমুখ।