সংগঠন হিসেবে জামায়াতের বিচার হয়েছে: তুরিন আফরোজ

Turin afron তুরিন আফরোজসিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ রাজনৈতিক দল হিসেবে নয়, ৭১’এ মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতা বিরোধীসহ বিভিন্ন সাংগঠনিক অপরাধে জামায়াতের বিচার করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ।

তিনি বলেন, জামায়াতের বিচার করার মাধ্যমে পৃথিবীর ইতিহাসে আমরা দ্বিতীয় নজির সৃষ্টি করতে যাচ্ছি। কারণ, নুরেমবার্গ ট্রাইব্যুনালে হিটলারের দল নাৎসীর বিচারের পর বাংলাদেশের ট্রাইব্যুনালে প্রথমবারের মতো কোন সংগঠনের বিচার হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে তদন্ত সংস্থা থেকে প্রসিকিউশনের কাছে জামায়াতের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন হস্তান্তরের পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি এ কথা বলেন।

তুরিন বলেন, জামায়াতে ইসলামী একটি বড় দল। তাই এ সংগঠনের মুখপত্র হিসেবে দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকাটিও বন্ধের কথা আবেদনে বলা হবে।

এ বিচারের মাধ্যমে আমাদের দাবি কি হবে তা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের পর জানা যাবে বলেও জানান এ প্রসিকিউটর।

সম্মেলনে চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনে যা পাওয়া গেছে তাতে আমরা সন্তুষ্ট। এখন এ প্রতিবেদনগুলো যাচাই-বাছাই করে ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হবে।

প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম বলেন, ৩৭৩ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনসহ ৯ হাজার ৫৫৭ পৃষ্ঠার মোট দালিলিক প্রমানপত্র প্রসিকিউশনের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। জাতির আশানুসারে আমরা আমাদের দেশপ্রেম, মেধা, শ্রম কাজে লাগিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদনটি ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হবে বলেও জানান তিনি।

জেয়াদ আল মালুম বলেন, এ বিচার পরিচালনার জন্য ইতিমধ্যেই প্রসিকিউশন পক্ষ বিভিন্ন ট্রাইব্যুনালের ৩৮টি রায় পর্যবেক্ষণ করেছি। জামায়াতের বিচার পরিচালনার জন্য তুরিন আফরোজকে প্রসিকিউটর করা হয়েছে।

ব্রিফিং’র আগে মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সংগঠন হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন চিফ প্রসিকিউশন পক্ষের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।

দুপুর ১টার দিকে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন পক্ষের নিকটে এ তদন্ত প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা মতিউর রহমান।

এ সময় প্রসিকিউটর জিয়াদ আল মালুম, সুলতান মাহমুদ সিমন, সাইফুল ইসলাম, তুরিন আফরোজ, তাপস বল ও রিজিয়া সুলতানা চমন প্রমুখ ছিলেন। এ টিমের সমন্বয়ক হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করবেন তুরিন আফরোজ।

এর আগে গত ২৫ মার্চ মঙ্গলবার ধানমন্ডিতে তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ক আবদুল হান্নান খান জামায়াতের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেন।

তদন্ত প্রতিবেদনে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ও গণহত্যাসহ ৭ ধরনের অপরাধের অভিযোগ আনা হয়।

৩৭৩ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনের সঙ্গে বিভিন্ন জব্দ তালিকা ও দালিলিক প্রমাণপত্র আছে মোট ২৩০৩ পৃষ্ঠার।

এক্ই সঙ্গে দলিল ১০ খণ্ডে ৩৭৬১ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন এর সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে- জামায়াত নেতাদের লেখা বই, বিভিন্ন লেখকের বই, গবেষণাপত্র ও ম্যাগাজিনসহ দুই শতাধিক বইও। এ মামলায় গবেষক, বুদ্ধিজীবীসহ ৭০ জনকে স্বাক্ষী করা হয়েছে।

তদন্তকারী কর্মকর্তা মতিউর রহমানের নেতৃত্বে একটি দল ২০১২ সালের ১৮ আগস্ট থেকে প্রায় ৮ মাস তদন্ত করে এ প্রতিবেদন প্রস্তুত করেন।

তদন্ত প্রতিবেদনে জামায়াতের অঙ্গ সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘসহ অন্যান্য সংগঠন এবং দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকা বন্ধ করার দাবি জানানো হয়।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ