জিয়াই দেশের নেতৃত্ব দিয়েছেন: রফিকুল
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ একাত্তরে স্বাধীনতা ঘোষণার পর থেকে মুজিবনগর সরকার গঠনের আগ পর্যন্ত ‘বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণ’ জিয়াউর রহমানের হাতেই ছিল বলে দাবি করেছেন বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম মিয়া।
শুক্রবার এক মানববন্ধনে দলটির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, “২৫ মার্চ পাকিস্তান বাহিনীর হত্যাযজ্ঞ শুরু হলে চট্টগ্রামে মেজর জিয়াউর রহমান নিজে প্রথমে ‘আই রিভোল্ট’ বলে বিদ্রোহ করে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। ওই সময় থেকে স্বাধীন দেশের প্রবাসী সরকার গঠনের আগ পর্যন্ত কার সরকার দেশ পরিচালনা করেছে?
“ওই সময়ে জিয়াউর রহমানের কনট্রোলে দেশ ছিল। তিনিই কার্যত এদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্বে ছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া এই কথাটি বলেছেন। এটাই সত্য।”
বিএনপি চেয়াপারসনের বড় ছেলে ও দলের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি তারেক রহমান গত ২৬ মার্চ লন্ডনে এক অনুষ্ঠানে বলেন, জিয়াউর রহমানই ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি। এর একদিন পর ঢাকায় জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের এক অনুষ্ঠানে তার মা খালেদা জিয়াও একই দাবি তোলেন।
খালেদার বক্তব্যের ব্যাখ্যায় বিএনপির রফিকুল বলেন, “২৫ মার্চ থেকে ১৭ এপ্রিল স্বাধীন দেশের প্রবাসী সরকার গঠনের পূর্ব পর্যন্ত সময়কালটি আপনারা বিবেচনা করে দেখুন।”
বৃহস্পতিবার দেয়া প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের জবাবে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনে রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, “গতকাল প্রধানমন্ত্রী এক আলোচনা সভায় বলেছেন, জিয়াউর রহমান নাকি মুক্তিযোদ্ধাই ছিলেন না। বঙ্গবন্ধু জেলে থাকাকালীন সময়ে জিয়াই দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তার অবদানের কারণে বঙ্গবন্ধু তাকে বীর উত্তম উপাধি দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী যদি এরকম মিথ্যা ও ভুল বক্তব্য দেন- তা দুঃখজনক।
“দেশের মানুষ জানে- ২৫ মার্চ শেখ মুজিবুর রহমান গ্রেপ্তার হয়ে পাকিস্তান চলে গেলেন। ওই সময়ে গোটা জাতি দিশেহারা।তখন জিয়াউর রহমান নিজেই স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তার স্বাধীনতার ঘোষনায় গোটা জাতি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।”
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ বার বার বলে যে, বিএনপি ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে ভুল করেছে। কিন্তু আমরা বলতে চাই বিএনপি ভুল করেনি। তার প্রমাণ তৃতীয় ও চতুর্থ দফার উপজেলা নির্বাচনের সহিংসতা, ভোট ডাকাতি, ভ্যালট বাক্স ছিনতাই ও অগ্নিসংযোগের নজিরবিহীন ঘটনাগুলো।
তিনি বলেন, ৭১ সালের ২৫ মার্চের পর থেকে প্রতিবেশি একটি রাষ্ট্র বাংলাদেশকে দখলে নেওয়ার চেষ্টা করছে। সে অপচেষ্টা এখনও অব্যাহত রেখেছে তারা।
বিএনপির এ নেতা বলেন, বর্তমান সংবিধানের ৬২’র ২ ধারা মোতাবেক এ সংসদের সকল সদস্যই অবৈধ। জনগণের ভোটবিহীন এসব সংসদ সদস্যের দেশ পরিচালনার কোনো অধিকার নেই। তারা জোরপূর্বক জনগণের উপর হস্তক্ষেপ করছে।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনসহ দলের নেতৃবৃন্দের মুক্তির দাবিতে ঢাকাস্থ দাউদকান্দি উপজেলা জাতীয়তাবাদী ফোরাম জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।
সংগঠনের সভাপতি শাহজাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, বিএনপির সহ দপ্তর সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রফিক শিকদার, খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ছেলে কুমিল্লা জেলা ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার খন্দকার মারুফ হোসেন এই মানববন্ধনে বক্তব্য দেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা দলের উপদেষ্টা ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল ও খন্দকার মাহবুব হোসেনও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।