৭৩ উপজেলায় প্রচার বন্ধ শনিবার মধ্যরাত থেকে
সিনিয়র রিপোর্টার, মনির হোসেন মিন্টু, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পঞ্চম পর্বে ৭৩ উপজেলায ভোটের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন(ইসি)।সংশ্লিষ্ট উপজেলায় নির্বাচনী সব মালামাল পাঠিয়েছে ইসি।
শনিবার মধ্যরাতেই (রাত ১২টা) শেষ হচ্ছে মিছিল-মিটিংসহ সব ধরনের প্রচার। একই সঙ্গে বন্ধ হচ্ছে সব ধরনের যান চলাচল।
উল্লেখ্য, নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা অনুযায়ী চলতি মাসের ৩১ তারিখ পঞ্চম দফায় ৭৪ উপজেলায় ভোট হওয়ার কথা থাকলেও ঐ দিন ভোট হবে ৩৬ জেলার ৭৩ উপজেলায়।
ইসি প্রাপ্ততথ্যানুসারে ভোটের দিন টাঙ্গাইল-৮ আসনে উপ-নির্বাচনের ভোট তাই বাসাইল উপজেলার নির্বাচন স্থগিত করেছে ইসি। পরবর্তী ধাপে এ নির্বাচন হবে। এ ছাড়া তৃতীয় দফায় স্থগিত গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা নির্বাচনের ভোট হবে একই দিন।
এদিকে বিগত চারটি নির্বাচনে সহিংসতা, গুলি, ছিনতাই, কেন্দ্র দখলসহ নানা ঘটনায় আতঙ্ক বিরাজ করছে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায়।
স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে শনিবার মধ্যরাত থেকে ৭৩ উপজেলায় মাঠে নামছে সেনাবাহিনী। প্রতি উপজেলায় এক প্ল্যাটুন করে সেনা মোতায়েন করা হচ্ছে। প্রতি প্ল্যাটুনে ৩৪ জন করে মোট ২ হাজার ৪৮২ সেনা সদস্য টহলে থাকবে। এছাড়া তাদের সঙ্গে থাকছে পর্যাপ্ত সংখ্যক র্যাব, বিজিবি, পুলিশ, এপিবিএন ও আনসার ব্যাটেলিয়ান সদস্য।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন উপজেলা পরিষদের এ নির্বাচন দলীয় ব্যানারে না হলেও দলীয় প্রভাব রয়েছে সবখানেই। আওয়ামী লীগ-বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের পছন্দ মতো প্রার্থী দিয়েছে। রয়েছে প্রধান দুটি দলেরই অসংখ্য বিদ্রোহী প্রার্থী। নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক বিরাজ করছে। নির্বাচনী এলাকায় প্রার্থীদের অনেক অভিযোগ জমা হলেও কমিশন এ বিষয়ে একেবারেই নিশ্চুপ রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
নির্বাচনী এলাকায় ভোটগ্রহণ উপলক্ষে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে ইসি। সোমবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে টানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে ভোট।
এ বিষয়ে ইসি সচিবালয়ের সহকারী সচিব আশফাকুর রহমান জানান, নির্বাচনের ৩২ ঘণ্টা পূর্বে সব প্রচার বন্ধ থাকবে। তা অব্যাহত থাকবে নির্বাচনের পর ৬৪ ঘণ্টা পর্যন্ত। কেউ আইন ভঙ্গ করলে কারাদণ্ড ও আর্থিক দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এমনকি প্রার্থিতাও বাতিল হতে পারে।
এ নির্বাচনে মোবাইল ফোর্স হিসেবে পর্যাপ্ত সংখ্যক র্যাব, বিজিবি, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকছে। এ ছাড়া প্রতি কেন্দ্রে একজন পুলিশ (অস্ত্রসহ), অঙ্গীভূত আনসার একজন (অস্ত্রসহ), অঙ্গীভূত আনসার ১০ জন (নারী-৪, পুরুষ-৬ জন) এবং আনসার একজন (লাঠিসহ) ও গ্রাম পুলিশ একজন করে আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকবে।
দুর্গম এলাকাগুলোতে এ সংখ্যা শুধু পুলিশের ক্ষেত্রে দু’জন হবে। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে ২৯৮ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ৭৪ জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে।
৭৪টি উপজেলায় মোট ১ হাজার ৬৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন ৩৬৪ জন। ভাইস-চেয়ারম্যান (পুরুষ) প্রার্থীর সংখ্যা ৪২০ জন। ভাইস-চেয়ারম্যান (মহিলা) প্রার্থীর সংখ্যা-২৭৯ জন।
এ সব এলাকায় মোট ভোটার ১ কোটি ৪২ লাখ ৬০ হাজার ৬৬৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭১ লাখ ১৫ হাজার ৩৮০ জন, নারী ভোটার ৭১ লাখ ৪৫ হাজার ২৮৩ জন।
ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৫ হাজার ৭০৩টি, ভোটকক্ষ ৩৫ হাজার ৯৪১টি।
প্রিজাইডিং অফিসার প্রতি ভোটকেন্দ্রে একজন করে ৫ হাজার ৭০৩ জন। সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার প্রতি ভোটকক্ষের জন্য একজন করে মোট ৩৫ হাজার ৯৪১ জন। পোলিং অফিসার সংখ্যা ৭১ হাজার ৮৮২ জন ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে ১ লাখ ১৩ হাজার ৫২৬ জন দায়িত্ব পালন করবেন।