তথ্যভান্ডারের আওতায় আসলো ৩৪৯৭টি পোশাক কারখানা
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ পোশাক শিল্পে কার্যকর ব্যবস্থাপনা ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার জন্য শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের আওতায় অন-লাইনভিত্তিক তথ্যভাার বা ডাটাবেজ চালু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এতে দেশের ৩ হাজার ৪৯৭টি তৈরি পোশাক কারখানা ও প্রতিষ্ঠানের বিস্তারিত তথ্য সংযোজন করা হয়েছে।
ফলে নতুন আঙ্গিকে এই তথ্যভান্ডার চালুর মাধ্যমে দেশের পোশাক কারখানাগুলো ডাটাবেজ সফটওয়্যারের আওতায় আসলো। যাতে করে পোশাক কারখানা ও প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় তথ্য অনলাইনে খুঁজে পাওয়া যাবে।
রবিবার দুপুরে সচিবালয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে এই তথ্যভান্ডারের উদ্বোধন করেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক চুন্নু।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্য রপ্তানিতে অগ্রাধিকারমূলক শুল্ক সুবিধা বা জিএসপি ফিরে পাওয়ার একটি অন্যতম শর্ত হিসেবে এই তথ্যভান্ডার চালু করা হয়েছে।
দেশের পোশাক কারখানার জন্য নতুন এই তথ্যভান্ডারে দেশের বিভিন্ন পোশাক কারখানা ও ফ্যাক্টরির শ্রমিক সংখ্যা, নিবন্ধন নম্বর, ঠিকানা, কারখানার নাম, টেলিফোন নম্বরসহ বিস্তারিত তথ্য সংরক্ষণ করা হয়েছে।
প্রাথমিক পর্যায়ে উৎপাদনমূলক ৩ হাজার ৪৯৭টি তৈরি পোশাক কারখানার তথ্য সংরক্ষণ করা হলেও পর্যায়ক্রমে দেশের অন্যান্য সকল প্রতিষ্ঠান ও কারখানার তথ্য সংরক্ষণ করা হবে। তবে এতে পোশাক শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ফরওয়ার্ড ও ব্যাকওয়ার্ড লিঙ্কেজ শিল্প প্রতিষ্ঠান ও কারখানার তথ্য এখনও সংযোজন করা হয়নি।
নতুন এই তথ্যভান্ডারে কারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তরের সাধারণ পরিদর্শন কার্যক্রম ও চেকলিস্ট ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে। কিছুদিন পরপর তা হালনাগাদ করা হবে বলে শ্রম মন্ত্রণালয়ে জানিয়েছে।
উদ্বোধনকালে শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক বলেন, এটি বাংলাদেশের জন্য একটি সুখবর। এর মধ্য দিয়ে দেশের তৈরি পোশাকশিল্প আরও সামনের দিকে এগিয়ে যাবে বলে আমার বিশ্বাস।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত যেসব কারখানা ও প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন করেনি, তাদেরকে আমরা নির্দেশনা দিয়েছি শিগগিরই নিবন্ধন করে নেয়ার। এটা চলমান একটা প্রক্রিয়া। নিবন্ধন করা বাধ্যতামূলক। ব্যবসা করতে হলে সবাইকেই নিবন্ধনের আওতায় আসতে হবে।
২০০১ সালের তথ্য অনুযায়ী, দেশে শিল্প প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২ লাখ ৪২ হাজার ৮১৮। এছাড়া অন্যান্য প্রতিষ্ঠান রয়েছে ২ লাখ ১৫ হাজার ১১৭টি। গত বছরে এ সংখ্যা আরও বেড়েছে। আর এর পরিপ্রেক্ষিে দেশের সকল পোশাক কারখানা ও প্রতিষ্ঠানের তথ্য সংরক্ষণের জন্য ডাটাবেজ চালুর প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রানাপ্লাজা ভবন ধসে ১১৩৭ জন পোশাক কারখানা শ্রমিক নিহতের পর ২৭ জুন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য শুল্কমুক্ত পণ্য রপ্তানি সুবিধা জিএসপি বাতিল করে দেয়। এর আগে ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর তাজরীন ফ্যাশন্সে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ১১২ জনের মৃত্যুর পর থেকে বাংলাদেশের পোশাকশিল্প নিয়ে সারাবিশ্বে তোলপাড় শুরু হয়।
আর এরই ফলশ্রুততেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি অ্যাকশন প্ল্যানের মধ্যে কিছু শর্ত আরোপ করে দেয়। ১৬ শর্তের মধ্যে বাকি কয়েকটি হচ্ছে- ইপিজেডে ট্রেড ইউনিয়ন চালু, পোশাক কারখানায় ডাটবেজ চালু, বিল্ডিং কোড অনুযায়ী ভবন নিরাপত্তা ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা জোরদার এবং ২ কারখানা পরিদর্শক নিয়োগ।