ব্রডব্যান্ডের ন্যূনতম ব্যান্ডউইডথ হবে ১ এমবিপিএস
গ্রাহকের স্বার্থে ব্রডব্যান্ডের সংজ্ঞা পরিবর্তন করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। এখন ব্রডব্যান্ড বলা যাবে এমন সার্বক্ষণিক তথ্য বা ইন্টারনেট সেবাকে, যার ন্যূনতম ব্যান্ডউইডথ হবে ১ মেগা বিটস পার সেকেন্ড (এমবিপিএস)। ইন্টারনেটের প্রচলিত (ডায়াল-আপ) গতির চেয়ে বেশি গতিসম্পন্ন ডাটা আদান-প্রদানকে ব্রডব্যান্ড বলা হয়।
২০০৯ সালের জাতীয় ব্রডব্যান্ড নীতিমালায় বলা রয়েছে, ‘বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ব্রডব্যান্ড বলা যাবে, এমন সার্বক্ষণিক ডাটা বা ইন্টারনেট সেবাকে, যার ন্যূনতম ব্যান্ডউইডথ ১২৮ কিলো বিটস পার সেকেন্ড (কেবিপিএস)।’ ব্যান্ডউইডথ হলো তথ্য বা ডাটা চলাচলের গতি।
বিটিআরসি বলেছে, আগে ১২৮ কেবিপিএসের চেয়ে কম ব্যান্ডউইডথকে ন্যারোব্যান্ড বলা হতো, আর এখন ন্যারোব্যান্ড বলা হবে ১ এমবিপিএসের চেয়ে কম ব্যান্ডউইডথকে।
বিটিআরসির সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিস বিভাগের পরিচালক মো. রকিবুল হাসান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে ব্রডব্যান্ডের এই সংজ্ঞা পরিবর্তন করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে গত ১ এপ্রিল। এতে ব্যক্তিপর্যায়ের ব্রডব্যান্ড ব্যবহারকারীদের জন্য দুটি এবং ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপি) ও ব্রডব্যান্ড ওয়্যারলেস এক্সেস (বিডব্লিউএ) লাইসেন্সধারীদের জন্য পাঁচটি নির্দেশনা দিয়েছে বিটিআরসি।
ব্যক্তিপর্যায়ের ব্যবহারকারীদের উদ্দেশে বিটিআরসি বলেছে, ব্রডব্যান্ড সংযোগের স্থলে কেউ যেন ন্যারোব্যান্ড সংযোগ না কেনেন। এ ছাড়া কোনো ইন্টারনেট সেবা, প্যাকেজ বা অফার তাঁরা কিনবেন বা ব্যবহার করবেন নতুন সংজ্ঞা অনুযায়ী। এটি ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হয়েছে।
তবে আইএসপি ও বিডব্লিউএ লাইসেন্সধারীদের জন্য বিটিআরসি বলেছে, ব্রডব্যান্ডের নতুন সংজ্ঞা গত ১৫ জানুয়ারি থেকে কার্যকর। বলা হয়েছে, বর্তমানে চালু বিভিন্ন প্যাকেজ, অফার ও মূল্যতালিকা নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী নতুন করে সাজাতে হবে অপারেটরদের। ইন্টারনেট সংযোগ দিতে হবে গ্রাহকদের পরিচয় নিশ্চিত করে। এ ক্ষেত্রে অনুসরণ করতে হবে বিটিআরসি প্রবর্তিত ‘গ্রাহক নিবন্ধন ফরম’।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বাজারে প্রচলিত সব প্যাকেজ ও অফারের করপোরেট কমিউনিকেশন অর্থাৎ ব্র্যান্ডিং, বিপণন, বিক্রি বা জনস্বার্থে বিজ্ঞপ্তি ইত্যাদি নতুন সংজ্ঞা অনুযায়ী আগামী ৩০ এপিলের মধ্যে পরিবর্তন ও সংশোধন করতে হবে অপারেটরদের। গ্রাহক নিবন্ধনে কোনো ধরনের ভুল, অসত্য বা ক্রটিযুক্ত তথ্য থাকার পরও ডেটা বা ইন্টারনেট সংযোগ চালু হলে তার সম্পূর্ণ দায়ভার অপারেটরদের বহন করতে হবে।
নীতিমালায় ব্রডব্যান্ডের ন্যূনতম গতি ১ এমবিপিএস করা হলেও যেকোনো সময় বিটিআরসি তা পরিবর্তন করতে পারবে বলে নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে।
বিটিআরসি থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশে তিন কোটি চার লাখ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী রয়েছেন। এর মধ্যে মোবাইল অপারেটরদের কাছ থেকে ইন্টারনেট সেবা ব্যবহার করছে দুই কোটি ৮৭ লাখ মানুষ, যার গতি তুলনামূলক কম। দ্র্রুতগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা দিচ্ছে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপি) এবং ওয়াইম্যাক্স প্রতিষ্ঠানগুলো। এদের গ্রাহক ১৭ লাখের কাছাকাছি।
বিটিআরসি সূত্রে জানা গেছে, ইন্টারনেটের গতির দিক থেকে বিশ্বে শীর্ষ ১০ দেশ হচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া, নেদারল্যান্ডস, জাপান, হংকং, বেলজিয়াম, সুইজারল্যান্ড, লাটভিয়া, রোমানিয়া, চেক রিপাবলিক ও ডেনমার্ক।
ব্রডব্যান্ডের সংজ্ঞা পরিবর্তন করে ব্যান্ডউইডথের ন্যূনতম গতি নির্ধারণ করে দেওয়ার বিষয়কে স্বাগত জানিয়েছে ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (