৭৩ উপজেলায় ভোট শুরু
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ উপজেলা নির্বাচনের প্রথম দফায় অনেকটা শান্তিপূর্ণ ভোটের পর ধাপে ধাপে সহিংসতা বাড়ার প্রেক্ষাপটে একই ধরনের শঙ্কা নিয়ে পঞ্চম পর্বে ৩৪ জেলার ৭৩টি উপজেলায় শুরু হয়েছে ভোট।
সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে ভোট দেবেন ভোটাররা।
পঞ্চম পর্বে ৩৫ জেলার ৭৪ উপজেলায় ভোট কথা ছিল। কিন্তু আদালতের আদেশের কারণে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ভোট স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন।
এসব উপজেলার ১ কোটি ৩৮ লাখ ৯১ হাজার ৭৫১ ভোটারের জন্য রয়েছে ৫ হাজার ৫৩৪টি ভোটকেন্দ্র।
আগের চার পর্বে সহিংসতা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকায় ভোটারদের শঙ্কা ভর করলেও নির্বাচন কমিশনের আশা পঞ্চম ধাপের ভোট শান্তিপূর্ণ হবে; যদিও বিএনপি ব্যাপক কারচুপির আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।
উপজেলা নির্বাচনে সহিংসতার জন্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ সব দলের নিজেদের সমর্থিত প্রার্থীদের বিজয়ের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠাকে দায়ী করেছে আবদুল মোবারক।
“মানুষ অনেক বেশি ডেসপারেট হয়ে গেছে। এত ঠিক নয়। আমি এখনো অনুরোধ করব, আপনারা নিজ দলের সমর্থকদের সহিংসতা থেকে বিরত থাকতে বলুন।”
আগের ধাপগুলোর মতো এবারও ভোট শান্তিপূর্ণ করতে কমিশনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বরাবরের মতো মাঠে রয়েছেন সশস্ত্র ও অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা।
বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর বয়কটের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠা স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনের তৃতীয় পর্ব থেকে দেশে নেই সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ।
তার যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে সমালোচনার মধ্যে চতুর্থ ধাপের ভোটের সময় তিনি বিশেষ নির্দেশনাও দিয়েছিলেন। এরপর ভোট তদারকির দায়িত্বে থাকা নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক সহিংসতা রোধে কঠোর হওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন।
তারপর সবশেষ ধাপে সহিংসতার মাত্রা ছিল আগের তিন ধাপের চেয়ে বেশি। ২৩ মার্চের ওই ভোটে সংঘাততে মুন্সীগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা ও ঝালকাঠীতে চারজন নিহত হন। এছাড়া কেন্দ্র দখল, ব্যালট ছিনতাই ও বিচ্ছিন্ন সহিংসতার ঘটনা তো ছিলই।
প্রথম থেকে তিন পর্ব পর্যন্ত চেয়ারম্যান প্রার্থীর জয়ের হিসাবে বিএনপি এগিয়ে থাকলেও চতুর্থ পর্বে এসে তাদের ছাড়িয়ে যায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তবে জোটের হিসাবে এগিয়ে আছে বিএনপি।
ছয় পর্বের মধ্যে চার পর্ব মিলিয়ে পৌনে চারশ উপজেলার মধ্যে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যানের সংখ্যা ১৭৭ জন। বিএনপির চেয়ারম্যানের সংখ্যা ১৫০ জন। তবে জামায়াতে ইসলামী ও এলডিপি মিলিয়ে ১৯ দলের চেয়ারম্যানের সংখ্যা ১৮৩ জন।
এছাড়া জাতীয় পার্টি ৩, জেএসএস ৬, ইউপিডিএফ ৩, নির্দলীয় ৫ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে জয়ী হয়েছে।
পঞ্চম ধাপের ৭৩ উপজেলায় ১ কোটি ৩৮ লাখ ৯১ হাজার ৭৫১ জন ভোটার রয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬৯ লাখ ৩০ হাজার ২৬৯ জন, নারী ৬৯ লাখ ৬১ হাজার ৪৮২ জন।
মোট ৫ হাজার ৫৩৪টি ভোটকেন্দ্রে ভোট কক্ষের সংখ্যা ৩৪ হাজার ৮৮৫টি।
এ পর্বে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী চেয়ারম্যান পদে ১ হাজার ৫৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৩৬২ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪১৮ জন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৭৬ জন।
এ দফায় আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে ৩৬০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং ৯০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
দেশের ৪৮৭ উপজেলার মধ্যে প্রথম ধাপে ১৯ ফেব্রুয়ারি ৯৭ উপজেলা, দ্বিতীয় ধাপে ২৭ ফেব্রুয়ারি ১১৫ উপজেলা, তৃতীয় ধাপে ৮১ উপজেলায় ১৫ মার্চ ও চতুর্ধ ধাপে ৮১ উপজেলায় ২৩ মার্চ ভোট হয়। বাকি কিছু উপজেলায় মে মাসে ভোট হবে শেষ ধাপে।