ধর্ম অবমাননা আইনে হচ্ছে না : প্রধানমন্ত্রী
ব্লাসফেমি (ধর্ম অবমাননা) আইনের আদলে নতুন কোন আইন প্রণয়নের হেফাজত ইসলামের দাবি নাকচ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে প্রধানমন্ত্রী এ কথা জানান। সাক্ষাত্কারটি আজ সোমবার বিবিসি অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিশেষ ক্ষমতা আইনসহ প্রচলিত অনেক আইনেই ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। নতুন আইন না করলেও হেফাজতে ইসলামের দাবিগুলো নিয়ে তাঁর সরকার আলোচনা করে দেখবে।
তিনি বলেন, হেফাজতে ইসলামের দাবিগুলোর মধ্যে কিছু গ্রহণযোগ্য হলে, তা গ্রহণ করবো। আর যেগুলো গ্রহণযোগ্য হবে না, সে গুলো গ্রহণ করবো না।
তিনি উল্লেখ করেছেন, ব্লগ এবং ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক নেটওয়ার্কে কে কি লিখছে, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার বিষয়ে কিছু আছে কিনা, সেসব খতিয়ে দেখতে সরকার আগেই একটি তদন্ত কমিটি করেছিল। সেই প্রক্রিয়াতেই ঐ গ্রেফতারের ঘটনা ঘটেছে। এর সাথে লংমার্চের কোন সম্পর্ক ছিল না।
প্রধানমন্ত্রী বলছিলেন,‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার মত কোন কথা যদি লেখায় থাকে ,অবশ্যই আমাদের তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এটা খুব স্বাভাবিক।আমি একজন মুসলমান। এখন নবী করিম সা: সম্পর্কে কেউ যদি আজেবাজে কথা লেখে, আমরাতো চুপ করে বসে থাকতে পারি না। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। কেউ হয়তো ধর্ম না মানতে পারে,তার মানে এই না যে তারা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে কথা বলবে। নোংরা কথা লিখবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনে করেন, ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। ধর্মনিরপেক্ষতার অর্থ হচ্ছে ,সমান অধিকার। এবং প্রত্যেক ধর্মের মর্যাদা রক্ষা করা। কেউ একটা ধর্ম সম্পর্কে যা খুশি লিখবে,এটা ধর্ম নিরপেক্ষতা নয় । সমালোচকরা সঠিক কাজ করছেন না বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেন,‘নবী করিম সা: সম্পর্কে কেউ যদি আজে বাজে কথা লেখে,তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে আমি অন্যের কথা শুনলাম,মোটেই না। আমি নিজেও ধর্মে বিশ্বাস করি। কাজেই আমার নিজেরও অনুভূতিতে আঘাত লাগে। কেউ যদি বাজে কথা লেখে।’
তবে হেফাজতে ইসলামের অন্যতম দাবি হচ্ছে, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করে ব্লাসফেমির আদলে নতুন আইন করা। তা নাকচ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দেশে আইনে অভাব নেই।
বিরোধীদলের তত্বাবধায়ক সরকারের দাবিও নাকচ করে দিয়ে তিনি বলেছেন,বর্তমান সেনাবাহিনী রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপ করবে না।
প্রধানমন্ত্রী শেখে হাসিনা বিরোধীদলীয় নেত্রীকে উদ্দেশ করে বলেছেন,‘উনি যদি আশা করে থাকেন যে কিছু মানুষ খুন করলেই। একেবারে আর্মি ঝাঁপিয়ে পড়বে। আর উনাকে ক্ষমতায় নেবে । বর্তমান আর্মি তা করবে না।’
সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অনেক মানুষ হতাহতের যে ঘটনা ঘটেছে, তাতে বিরোধীদল সরকারের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ তুলেছে।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের যে দাবিতে আন্দোলন করছে, সে ব্যাপারে বিরোধীদলের সাথে আলোচনার প্রশ্নে তিনি পুরনো অবস্থানই তুলে ধরেছেন।
বিরোধীদল সংসদে এসে দাবি তুলে ধরতে পারে। একই সাথে ঐ দাবি নাকচ করে দিয়ে তিনি বিরোধীদলের প্রতি পাল্টা প্রশ্ন করেছেন, ‘বিরোধীদলীয় নেত্রী দেশকে সেই ২০০৭ সালের পরিবেশে কেন নিতে চাইছেন। সূত্র:বিবিসি