যা বলেছি, কাগজ দেখেই বলেছি: কেবিনেট সচিব

cabinetসিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ ‘টোল নীতিমালা ২০১৪’ নিয়ে সৃষ্ট বিতর্কের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘মহা-সড়ক, আঞ্চিলিক সড়ক ও জেলা সড়কে চলতে টোল দেওয়ার বিষয়টি গত ২৪ মার্চ মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদিত ‘টোল নীতিমালা ২০১৪’এ উল্লেখ ছিল। গণমাধ্যমে প্রকাশের লক্ষে আমি যা বলেছি- তা কাগজ দেখেই বলেছি। যোগাযোগ মন্ত্রী কি বলেছেন বা কোন প্রেক্ষিতে বলেছেন, তা আমার জানা নেই।’
সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে এবিসি নিউজ বিডির এই প্রতিবেদকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
২৪ মার্চ মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানিয়েছিলেন, দেশের সকল সড়ককে টোলের আওতায় আনতে ‘টোল নীতিমালা ২০১৪’র অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এই নীতিমালা অনুমোদনের পর দেশে সব ধরণের পরিবহনকে মহ-সড়ক, আঞ্চিলিক সড়ক ও জেলা সড়কে চলতে টোল দিতে হবে।
এর একদিন পর ২৫ মার্চ যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, মহ-সড়ক, আঞ্চিলিক সড়ক ও জেলা সড়কে চলতে টোল দিতে হবে, এমন বিষয় টোল নীতিমালায় নেই। এই প্রেক্ষিতে এক প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা বলেন, ‘সেদিন আমি যা বলেছি তা কাগজ দেখেই বলেছি। মহ-সড়ক, আঞ্চিলিক সড়ক ও জেলা সড়কে চলতে টোল দেওয়ার বিষয়টি গত ২৪ মার্চ মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদিত ‘টোল নীতিমালা ২০১৪’এ উল্লেখ ছিল। গণমাধ্যমে প্রকাশের লক্ষে আমি যা বলেছি- তা কাগজ দেখেই বলেছি। আমি নিজ উদ্যোগে কিছুই বলিনি।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, যোগাযোগ মন্ত্রী আসলে কোন প্রেক্ষিতে বলেছেন, কি বলেছেন তা আমার জানা নেই। তিনি অবশ্য বলেন, সময় সুযোগ মত সড়ক বিভাগ এ বিষয়টি ইমপ্লিমেন্ট করবে।
২৪ মার্চ মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানিয়েছিলেন- দেশের সকল সড়ককে টোলের আওতায় আনার বিষয়টি লক্ষে সর্ব নিন্ম ৫ টাকা ও সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকা টোলের বিধান রেখে ‘টোল নীতিমালা ২০১৪’র’ চুড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এর ফলে সব ধরণের পরিবহনকে মহ-সড়ক, আঞ্চিলিক সড়ক ও জেলা সড়কে চলতে টোল দিতে হবে। যোগযোগ মন্ত্রনালয়ের সড়ক বিভাগ শিগগিরই এই নীতিমালা অনুযায়ী টোল আদায়ের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরো বলেন, ‘আমাদের একটি বিশাল সড়ক নেটওয়ার্ক আছে। এর রক্ষনা-বেক্ষন খুবই গুরুত্বপূর্ন। সড়ক ব্যবস্থার উন্নয়ন ও রক্ষনা-বেক্ষনে তহবিল গঠনের লক্ষে সরকার এর আগে একটি আইনও করেছে। মন্ত্রিসভায় উপস্থাপনের জন্য যোগাযোগ মন্ত্রনালয়ের সড়ক বিভাগের পাঠানো ‘টোল নীতিমালা ২০১৪’র খসড়া’ আজ মন্ত্রিসভায় উপস্থাপনের পর তা মন্ত্রিসভা চুড়ান্ত অনুমোদন করে।
মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা সাংবাদিকদের বলেন, দেশের সকল সড়ককে টোলের আওতায় আনাই সরকারের লক্ষ। এ জন্য মন্ত্রিসভা সর্ব নিন্ম ৫ টাকা ও সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকা টোলের বিধান রেখে ‘টোল নীতিমালা ২০১৪’র’ চুড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। তিনি বলেন, এর ফলে সব ধরণের পরিবহনকে মহা-সড়ক, আঞ্চিলিক সড়ক ও জেলা সড়কে চলতে টোল দিতে হবে। আদায়কৃত টোলের অর্থ সড়ক ব্যবস্থার উন্নয়ন ও রক্ষনা-বেক্ষনে গঠিত তহবিল জমা দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মহা-সড়ক, আঞ্চলিক সড়ক ও জেলা সড়কে সকল ধরণের পরিবহন চলতে ৪শত টাকা বেইজ টোল ধার্য করা হয়েছে। এ অনুযায়ী ট্রেইলার- বেইট টোলের আড়াইগুন অর্থাৎ ১০০০ টাকা, বড় ট্রাক- বেইজ টোলের দ্বিগুন অর্থাৎ ৮০০ টাকা ও ছোট ট্রাক বা মিডিয়াম ট্রাক- বেইজ টোলের সমপরিমান অর্থাৎ ৪০০ টাকা টোল ধার্য করা হয়েছে। এছাড়া বড় বাস- ২০০ টাকা, ছোট বাস বা মিনি বাস- ১০০ টাকা ও মাইক্রোবাস বা প্রাইভেট কার- ২৫ টাকা হিসেবে টোল ধার্য করা হয়েছে। রিক্সাকেও সর্ব নি¤œ টোল ধার্য করা হয়েছে ৫ টাকা হিসেবে।
বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা সাংবাদিকদের বলেন, ‘সড়ক-মহাসড়ক উন্নয়ন ও রক্ষানাবেক্ষণের জন্য ‘টোল আদায় নীতিমালা -২০১৪’ -এর খসড়া
মন্ত্রিপরিষদ সচিব টোল আদায়ে ১০টি পলিসির কথা উল্লেখ করে বলেন, কোন কোন স্থাপনায় সড়ক বা ব্রিজে টোল আদায় করা যাবে তা নীতিমালায় বলা হয়েছে। টোল আদায়ের পদ্ধতি কি হবে তা বলা হয়েছে। আদয় করা টোল কিভাবে কোথায় জমা হবে তা বলা হয়েছে। কি পদ্ধতিতে টোল আদায় করা হবে তা বলা হয়েছে। টোল কিভাবে বাড়ানো বা যৌক্তিকভাবে সম্বনয় করা হবে তা উল্লেখ করা হয়েছে। নীতিমালা সংশোধনের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। বিশেষ করে টোল আদায় পদ্ধতি স্বচ্ছ করার জন্য নীতিমালা অনুমোদন করা হয়েছে । মনিটরিংয়ের কথা বলা হয়েছে নীতিমালায়।
যেসব স্থাপনায় টোল আদায় করা হবে এর মধ্যে মহাসড়ক, আঞ্চলিক মহাসড়ক ও জেলা মহাসড়ক রয়েছে। এ সড়কগুলো ছাড়াও গুররুত্বপূর্ণ সড়ক হিসেবে কিছু সড়ক গণ্য করা হবে। ঢাকা চট্্রগ্রাম মহাসড়ককের কথা উল্লেখ করেন সচিব। এছাড়া ফ্লাইওভার, ফেরি, ব্রিজ রয়েছে সেগুলো টোলের আওতায় থাকবে। এ সমস্ত সড়কে ওভারপাস সেতুগুলোও টোলের আওতায় পড়বে। পিপিপির আওতায় সির্মাণ করা হলে টোল আদায় যোগ্য হবে।
তিনি আরো বলেন, সেতুর ক্ষেত্রে ২০০ মিটারের নিচে থাকা সেতু থেকে টোল আদায় করা হবে না। তবে ফেরি চলাচলের জায়গায় স্থায়ী সেতু হলে টোল আদায়যোগ্য হবে। ২০০ থেকে ৫০০ মিটার, ৫০০১ থেকে ৭০০ মিটির, ৭০১ ,টিার থেকে ১০০০ মিটার এবং ১০০১ মিটার থেকে তদুর্ধ সেতু টোল আদায়যোগ্য হবে।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ