ব্যর্থ হয়ে প্রলাপ বকছে বিএনপি: আমু
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের জন্য সহিংস আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে একটি কুচক্রি মহলের(বিএনপি) মাথা নষ্ট হয়ে গেছে। তাই তারা এখন প্রলাপ বকছে। এ ব্যাপারে জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
সোমবার বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং হলে ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভার আয়োজন করে বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বাংলাদেশ ব্যাংক শাখা।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, খন্দকার মোস্তাক ও জিয়াউর রহমানের দোসররা দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করে দেশকে অচলের লক্ষ্যে নানা ধরনের সহিংসতা ছড়িয়েছে। কিন্তু এসব সহিংসতাকে পাশ কাটিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচন করতে সক্ষম হয়েছে। এবং সরকার গঠন করে দেশ চালাচ্ছে। একইসঙ্গে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে একের পর এক সাফল্য অর্জন করে যাচ্ছে। এসব দেখে একটি মহলের মাথা নষ্ট হয়ে গেছে। তাই তারা এখন প্রলাপ বকা শুরু করেছে।
তিনি বলেন, পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতাকে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশের ইতিহাসের চাকাকে পেছনের দিকে ঘুরিয়ে দেয়া হয়েছিল। রাষ্ট্র পরিচালনার চার মূল নীতিকে পরিবর্তন করে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করার সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছিল। এর পর থেকে এ পর্যন্ত স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি বার বার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করলেও মহান আল্লাহর তায়ালার ইচ্ছায় তিনি বেঁচে আছেন এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাকে বাস্তবে রূপায়নের চেষ্টা করছেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান বর্তমানে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকের তুলনা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ৪৩ বছরে অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য ও মানবসম্পদ উন্নয়ন সূচকে এক সময় অনেক এগিয়ে থাকা পাকিস্তানকে অনেক ক্ষেত্রেই আজ পেছনে ফেলে দিয়েছে বাংলাদেশ। গত অর্থবছরে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ২৭ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে, সেখানে পাকিস্তানের ২৪.৫ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ রেমিট্যান্স পেয়েছে ১৪ বিলিয়ন ডলার, পাকিস্তান পেয়েছে ৯ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশের খাদ্য উৎপাদন পাকিস্তান আমলের ৯৬ লক্ষ টন থেকে বেড়ে এখন ৩.৬ কোটি টনে দাঁড়িয়েছে।
তিনি আরো বলেন, যেখানে বাংলাদেশের পণ্য আমদানি ব্যয় ৩৪ বিলিয়ন ডলার সেখানে পাকিস্তানের ৪৫ বিলিয়ন ডলার। বৈদেশিক বাণিজ্য ঘাটতি পাকিস্তানের যেখানে ২০ বিলিয়ন ডলার, সেখানে বাংলাদেশের মাত্র ৭ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১৯.২ বি. ডলার যা পাকিস্তানের (৯.৬ বি. ডলার) রিজার্ভের দ্বিগুণ। বাংলাদেশের বর্তমান রিজার্ভ দিয়ে এ দেশের ৬ মাসের বেশি সময়ের আমদানি দায় মেটানো সম্ভব, সেখানে পাকিস্তানের রিজার্ভ দিয়ে দেশটির তিন মাসেরও আমদানি দায় মেটানো সম্ভব নয়।
বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হারও ছাড়িয়ে গেছে পাকিস্তানের প্রবৃদ্ধিকে। বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৬.২ শতাংশ, আর পাকিস্তানের ছিল ৩.৬ শতাংশ। তাছাড়া, সঞ্চয়, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মানবসম্পদ সূচকেও পাকিস্তানকে হার মানিয়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ব্যাংক শাখা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি নেছার আহাম্মদ ভূঁঞার সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য দেন, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এর উপাচার্য ড. আবদুল মান্নান চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর চৌধুরী প্রমুখ।