১২ মে কালো কাপড় বেঁধে রাজপথে নামবেন সাংবাদিকরা
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ সাংবাদিক দম্পত্তি সাগর-রুনী হত্যার প্রকৃত আসামি গ্রেফতারের দাবিতে সাংবাদিকরা সরকারকে শেষবারের মত আরও ৪০ দিনের সময় বেঁধে দিয়েছে। এর মধ্যে এই মামলার দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি না হলে আগামী ১২ মে কালো কাপড় বেঁধে রাজপথে নামবে সাংবাদিকরা।
বুধবার বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি প্রাঙ্গনে সাগর-রুনি হত্যার প্রকৃত আসামি গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে আয়োজিত অনশন শেষে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। ডিআরইউ’র সভাপতি শাহেদ চৌধুরী কর্মসূচি ঘোষণা করেণ।
অনশন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে ঢাকা ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলন, ‘দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, বাংলাদেশে গত চার দশকের মধ্যে কোনো সাংবাদিক হত্যার বিচার হয়নি। ‘সাগর-রুনী হত্যার ব্যার্থতা প্রশাসনের’ তথ্যমন্ত্রীর এমন বক্তেব্যেই প্রমাণ করে সরকার এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে মদদ যোগাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘গত চার দশকে বাংদেশে যত সরকার ক্ষমতাই এসেছে তাদের লজ্জিত হওয়া উচিৎ কারণ তারা কেউ সাংবাদিক নির্যাতনের বিচার করেনি।’
সাগরের মা সালেহা মনির বলেন, ‘সাংবাদিকদের অনশনে সরকারের টনক নড়ছে না। ৪৮ ঘণ্টার পরিবর্তে ২৬ মাস পার হয়ে গেল তবুও আমার সন্তানের খুনিদের বিচার হলো না।’
‘মুজিব হত্যার বিচার হয়েছে দীর্ঘ ৩৮ বছর পর তাই সাগর-রুনি হত্যার বিচার এত দ্রুত হওয়ার কিছু নেই’ তথ্যমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল রাজনৈতিক কারণে কিন্তু সাগর-রুনি তো কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল না। তাদের কেন খুন করা হলো।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সাগর-রুনি পরিবারসহ মেঘের দায়িত্ব নিবে বলে যে কথা বলেছিলেন, তার কোনো বাস্তব রুপ নেই। ২৬ মাস হয়ে গেল আজও পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী পরিবার তো দুরের কথা মেঘেরও খোঁজ খবর নেননি।’
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি শাহেদ চৌধুরী বলেন, ‘সাগরের মা যে ক্ষোভ নিয়ে বলেছিলেন, আমার সন্তান হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমি তাদের কবরে যাবো না- এটা শুধু তার মায়ের একার ক্ষোভ না এটা পুরো সাংবাদিক সমাজের ক্ষোভ।’
তিনি আরও বলেন, ‘সাংবাদিকদের প্রতিদিন চাকরিচ্যুত ও নির্যাতন করা হচ্ছে। কিন্তু আমরা সাংবাদিকরা তার প্রতিবাদ করতে পারছি না। সাগর-রুনি হত্যার বিচারের দাবিতে যদি কেউ না এগিয়ে আসে তাহলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি একাই আন্দোলন করবে। দরকার হলে এই বিচারের জন্য কেয়ামত পর্যন্ত অপেক্ষা করবো। তবুও সাগর-রুনি হত্যার বিচার করবো।’
সরকারকে হুঁশিয়ার করে তিনি বলেন, ‘সাগর-রুনি হত্যার বিচার নিয়ে যদি কেউ জজ মিয়া নাটক তৈরি করতে চান তাহলে আপনাদের জন্যও করুন পরিণতি অপেক্ষা করছে।’
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি শাহেদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনশনে আরও উপস্থিত ছিলেন- সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি আলতাফ মাহমুদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশ)সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব আব্দুল জলিল ভুঁইয়া প্রমুখ।