প্রধানমন্ত্রীও কথা রাখলেন না: সালেহা
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তাঁর কথা রাখলেন না। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) সাগর-রুনির এক মাত্র সন্তান মেঘের সম্পূর্ন দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ২৬ মাস পেরিয়ে গেছে, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে কেউ আমাদের মেঘের একবার খোঁজও নেয়নি। আমার মেঘের জন্য মহান আল্লাহ আছেন। তিনিই দেখবেন মা-বাবা হারানো এই এতিম শিশুকে।’
বুধবার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) প্রাঙ্গনে সাগর-রুনি হত্যার প্রকৃত আসামি গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে আয়োজিত অনশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সাগর সরওয়ারের শোকাহত মাতা সালেহা মনির এভাবেই তাঁর আক্ষেপ জানান। এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
দ্ব্যর্থহীন কন্ঠে সালেহা মনির বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে কথা দিয়েছিলেন, আমাদের মেঘের সম্পূর্ন দায়িত্ব তিনি নেবেন। সাগর-রুনির বিচারের মুখতো দেখলামই না, তার উপর ২৬ মাস পেরিয়ে গেল, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে কেউ আমাদের মেঘের একবার খোঁজও নিতে এলেন না।
সাগর সরওয়ারের শোকাহত মাতা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে আমরা আসান্বিত হয়েছিলাম। কিন্তু তিনিও তাঁর কথা রাখলেন না। আমার মেঘের জন্য মহান আল্লাহ আছেন। তিনিই দেখবেন মা-বাবা হারানো এই এতিম শিশুকে।
বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেল মাছরাঙ্গা’র বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ও এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার মেহেরুন রুনি হত্যার প্রকৃত আসামি গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে বুধবার সকাল থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি প্রাঙ্গনে সাংবাদিকরা অনশন কর্মসূচী পালন করেণ। অনশন শেষে আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষনা করা হয়। ডিআরইউ’র সভাপতি শাহেদ চৌধুরী কর্মসূচী ঘোষনা করেণ। সাগর-রুনি ২০১২’র ১১ ফেব্রুয়ারী রাজধানীর রাজাবাজারের ভাড়ার বাসায় খুন হন।
দীর্ঘ দুই বছরের বেশি সময় পার হওয়ার পরও চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার কোন কিনারা হয়নি। তদন্ত কার্যক্রমে অগ্রগতি না হওয়ায় শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশের পর ডিবি’র হাত ঘুরে দেশের জনপ্রিয় এই সাংবাদিক দম্পতি হত্যা মামলাটি র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন র্যাবের কাছে স্থানান্তর করা হয় প্রায় ২০ মাস আগে।
র্যাব এ মামলা তদন্তের দায়িত্বভার গ্রহনের পর সাগর-রুনির ডিএনএ’র আলামত সংগ্রহ করে দেড় বছর আগে পরীক্ষার জন্য আমেরিকা পাঠায়। আজও সেই ডিএনএ রিপোর্ট বাংলাদেশে ফেরৎ আসেনি। উদঘাটিতও হয়নি মামলার প্রকৃত রহস্য।
সাগর-রুনি হত্যার প্রকৃত আসামী গ্রেফতারের নামে পুলিশ, সিআইড, ডিবি ও র্যাব বিগত সময়ে কিছু নাটক উপস্থাপন করেছে বলে মনে করছেন গণমাধ্যমের কর্মীরা। দীর্ঘ দিনে এই নির্মম হত্যাকান্ডের কোনো কূল-কিনারা না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছে সাগর-রুনির পরিবারের সদস্যরা।
চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকান্ডের তদন্তের দায়িত্বে থাকা র্যাব এই পর্যন্ত আটজনকে গ্রেফতার দেখিয়েছে। যার মধ্যে নিহতদের রাজাবাজারের বাসার দারোয়ান এনামূলও রয়েছে। গ্রেফতার হওয়া অন্য সাতজন হলেন- তানভীর রহমান, বাড়ির অপর এক দারোয়ান পলাশ রুদ্র পাল, সন্দেহভাজন ডাকাত রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুণ ও সাঈদ। তবে র্যাবের এই গ্রেফতারকে অগ্রগতি হিসেবে দেখছে না নিহত সাগর-রুনির পরিবার ও গণমাধ্যম কর্মীরা।