শহীদ ক্যাপ্টেন আনোয়ারের কবর স্থানান্তর

BAGERHAT Captain Anowar বাগেরহাট ক্যাপ্টেন আনোয়াররিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, বাগেরহাটঃ একাত্তরে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে বাগেরহাটের শরণখোলায় পাকিস্তান সেনা বাহিনী ও দেশীয় রাজাকারদের সম্মুখ সমরে শহীদ ক্যাপ্টেন আনোয়ার হোসেনের কবরটি অবশেষে স্থানান্তর করা হয়েছে। শহীদ এ মুক্তিযোদ্ধার কবর বলেশ্বর নদীর ভাঙনের কবলে পড়ায় স্বাধীনতার ৪৩ বছর পর সরিয়ে নেওয়া হলো। শরণখোলা উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগীতায় বৃহস্পতিবার বিকেলে শহীদের দেহবাশেষ উত্তোলন করে রায়েন্দা শহীদ মিনার চত্ত্বরে মুক্তিযোদ্ধা কবরস্থানে যথাযথ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়েছে। শহীদের পরিবার তার কবরস্থান রক্ষা করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিলেন।

জানা গেছে, আনোয়ার হোসেন ১৯৬৭ সালে পাকিস্তান সেনা বাহিনীতে ক্যাপ্টেন হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাসনের পর তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামে উদ্দীপ্ত হন। ছুটি নিয়ে ১১ মার্চ দেশে চলে আসেন এবং ৯ নম্বর সেক্টরের সুন্দরবন সাব সেক্টরের অধীনে আঞ্চলিক কমান্ডার হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের অংশগ্রহণ করেন। ১২ জুন পাক সেনা ও রাজাকারেরা শরণখোলা থানা ভবন দখলে নিয়ে রাজাকার ক্যাম্প তৈরি করে এলাকায় লুটতরাজ, অগ্নিসংযোগ, নারী ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ড চালায়। যুদ্ধের ২৯ দিনের মাথায় ১১ জুলাই ভোরে ক্যাপ্টেন আনোয়ারের নেতৃত্বে ৪৭ জন সশস্ত্র যোদ্ধা রাজাকার ক্যাম্পে আক্রমণ করেন। সকাল সাড়ে ৭টায় এই সম্মুখ যুদ্ধে ক্যাপ্টেন আনোয়ার শহীদ হন। এই যুদ্ধে আরও শহীদ হন বিমান বাহিনীর সদস্য ইসমাইল হোসেন ও আসমত আলী। গুরুতর আহত হন যুদ্ধকালীন কমান্ডার আব্দুল গাফফার সুবেদার ও ডা. হাবিবুর রহমান খাঁন নামের দুই বীর যোদ্ধা।

সুন্দরবন মুক্তিযুদ্ধ গবেষনা কেন্দ্রের আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর জব্বার জানান,  বাগেরহাট জেলার শরণখোলা উপজেলার উত্তর সাউথখালী গ্রামের মৃত আলেপ খান ও মাতা জমিনা বেগমের পাঁচ ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে আনোয়ার হোসেন ছিলেন সর্ব কনিষ্ট। ১৯৭১ সালের ১২ জুন সম্মুখ সমরে ক্যাপ্টেন আনোয়ার হোসেন শহীদ হন। পরে তার গ্রামের বাড়ি উত্তর সাউথখালীর পারিবারিক কবরস্থানে তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কেএম মামুন উজ্জামান জানান, বলেশ্বর নদীর ভাঙনের কবল থেকে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন আনোয়ার হোসেনের কবরটি স্থানান্তর করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তার পরিবার কবর রক্ষা করার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। ওই কবর থেকে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন আানোয়ার হোসেনের দেহাবশেষ উত্তোলন করে মুক্তিযোদ্ধা কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়েছে।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ