আ’লীগ গণজাগরণ মঞ্চকে মর্যাদাহীন মনে করছে

bangladesh Aoamilegue BAL বাংলাদেশ আওয়ামীলীগসিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ সরকার গণজাগরণ মঞ্চের দাবি পূরণ করেছে। দাবি পূরণের সঙ্গে সঙ্গে আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তাও ফুরিয়ে গেছে।

এরপরও আন্দোলনের নামে তারা বাড়াবাড়ি করছে এবং স্বাধীনতা বিরোধীসহ একটি বিশেষ মহলের যোগসাজসে অপতৎপরতার কারণে গণজাগরণ মঞ্চ একটি মর্যাদাহীন প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।

আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতে আইন সংশোধনের মাধ্যমে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের সুযোগের জন্য গণজাগরণ লাগাতার আন্দোলনে যায়। জাতীয় সংসদে স্মারকলিপি দেয়। সংসদ আইন সংশোধন করে তাদের দাবি পূরণ করে। আইন সংশোধনের পর রাষ্ট্রপক্ষের আপিলে কাদের মোল্লার যাবজ্জীবনের পরিবর্তে মৃত্যদন্ডের রায় হয়। ওই রায় কার্যকরও হয়। অন্যান্য যুদ্ধাপরাধীর চূড়ান্ত রায়ও প্রক্রিয়াধীন।

নেতৃবৃন্দ বলেন, গণজাগরণের আন্দোলনে আওয়ামী লীগসহ মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের অনেক শক্তি তাদের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন দেয়। ছাত্র-শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ তাদের আন্দোলনে সামিল হয়। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে আইনি প্রতিবন্ধকতা দূর হলে আওয়ামী লীগ গণজাগরণকে আন্দোলন স্থগিতের পরামর্শ দেয়। অথচ তারা আওয়ামী লীগের কথা শুনে্নি। এ কারণে অনেকে তাদের কাছ মুখ ফিরিয়ে নেয়। আজকে তারা জনবিচ্ছিন্ন।

আওয়ামী লীগ নেতাদের অভিযোগ, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে সরকার সবরকম ব্যবস্থা নেয়ার পরও আন্দোলনের নামে গণজাগরণ মঞ্চের কর্মসূচি দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে- যা  রহস্যজনক। তারা স্বাধীনতা বিরোধীদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। তাছাড়া বাম ঘরানার কিছু লোকের স্বার্থ সিদ্ধির জন্যও গণজাগরণ মঞ্চ হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছে বলে মনে করেন আওয়ামী  লীগ নেতারা।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নূহ-উল-আলম লেনিন বলেন, একটি ঐতিহাসিক প্রয়োজনে আওয়ামী লীগসহ মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের বড় শক্তি গণজাগরণের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে। সরকার তাদের দাবি পূরণ করে। এখন আন্দোলনের নামে বাড়াবাড়ি করে তারা মর্যাদাহীন হয়ে পড়েছে।

এই আওয়ামী লীগ নেতা মনে করেন, বাম ঘরানার কিছু লোকসহ জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে গণজাগরণের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। তাই আওয়ামী লীগ গণজাগরণের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করেছে।

আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ বলেন, এখনো কোন মন্তব্য করতে চাই না। গণজাগরণের গতিবিধি আমরা আরও পর্যবেক্ষণ করছি।

উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য এডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন বলেন, গণজাগরণের ভূমিকা রহস্যজনক। তাদের সংশোধন হওয়া উচিৎ।

তবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবিতে আমরা গণজাগরণ মঞ্চ গঠন করেছিলাম।সেদিন আমরা যাদের হাতে দায়িত্ব দিয়েছিলাম  তারা দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। গণজাগরণ মঞ্চের বিরুদ্ধে এখন বিশেষ গোষ্ঠীর কাছ থেকে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। তারা এখন একটি বিশেষ মহলের স্বার্থ রক্ষা করছে।

তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম সংগঠক ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি জনার্দন দত্ত নান্টু।

তিনি বলেন, কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে গণজাগরণ মঞ্চের আত্মপ্রকাশ ঘটে। আমরা কাদের কাদের মোল্লাসহ সব যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি, তাদের সংগঠন নিষিদ্ধ করা এবং তাদের সব সম্পদ বাজেয়াপ্ত করাসহ ৬ দফা দাবিতে আন্দোলন করি। সে সময় আওয়ামী লীগ আমাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করলেও এখন তারা আমাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তারা ২৬ মার্চের অনুষ্ঠান উদযাপনে ইসলামী ব্যাঙ্ক থেকে টাকা নেয়, ইবনেসিনা  থেকে স্যালাইন নেয়। উল্টো আমাদেরকে জামায়াত-শিবিরের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা গ্রহণের অভিযোগে অভিযুক্ত করে। তাদের এ স্ববিরোধী ভূমিকা দুঃখজনক।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ