এবিএম মুসা’র প্রতি রাষ্ট্রের অবহেলার তীব্র সমালোচনা সুশীল সমাজের
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ গণমাধ্যমের অভিভাবক বরেন্য সাংবাদিক এবিএম মুসা’র মৃত্যুর পর রাষ্ট্রিয় মর্যাদায় সমাহিত করাসহ তাঁর প্রাপ্য সম্মান না দেওয়া নিয়ে তিব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে সরকার। দেশের সুশীল সমাজের পাশাপাশি খোদ সরকারের কয়েকজন মন্ত্রীও এতে বিব্রত বোধ করেছেন।
বরেন্য এই সাংবাদিক মহন মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন ছাড়া জাতীয় সংসদের সদস্য ছিলেন। রাষ্ট্রের বিধান অনুযায়ী তাঁর মৃত্যুর পর জাতীয় সংসদের দক্ষিন প্লাজায় জানাজাসহ রাষ্ট্রীয় মর্যদায় সমাহিত করার কথা থাকলেও তিনি প্রাপ্য এই সম্মান থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে সুশীল সমাজের পাশাপাশি তাঁর এক সময়ের সহকর্মীরও তীব্র সমালোচনা করেছেন। ‘কেন এবিএম মুসাকে তাঁর প্রাপ্ত এই সম্মান থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে’ সে সম্পর্কে অনেক চেষ্টা করেও বক্তব্র পাওয়া যায়নি জাতীয় সংসদের স্পিকার ও মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের কোন কর্তাব্যাক্তির। তবে সরকারের অত্যন্ত ক্ষমতাধর বানিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বিষয়টিতে বিব্রত হয়েছেন। কেন এই প্রাপ্য সম্মানটুকু তাঁকে দেওয়া হল না, তা তাদের জানা নেই বলেও মন্তব্য করেছেন।
বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিষ্ট ড. মাহফুজ উল্ল্যাহ এবিসি নিউজ বিডির এই প্রতিবেদককে বলেন,
‘শুধু আমরা জানি তা নয়, রাষ্ট্র জ্ঞাত, শ্রদ্ধেয় মুসা ভাই মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহন করেছিলেন। তিনি জাতীয় সংসদের সদস্যও ছিলেন। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ন এ দুটি বিষয় কারো অজানা নয়। তবে কেন মৃত্যুর পর তাঁকে তাঁর প্রাপ্য সম্মানটুকু দেওয়া হল না। এই লজ্জ্যা প্রকাশের ভাষা আমার জানা নেই।’
জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, ‘শ্রদ্ধেয় মুসা ভাইকে তো আর যুদ্ধাপরাধী বানানো যাবে না। তিনি মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। সংসদ সদস্য ছিলেন, এটা কারোই অজানা নয়। কেন তাঁর প্রতি রাষ্ট্রের এই অবহেলা? আমি জানি না, সরকার এর কি জবাবে দেবে।’
বিশিষ্ট সাংবাদিক আবেদ খান এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, মুসা ভাই মক্তিযোদ্ধা এবং সংসদ সদস্য ছিলেন। এটা আসলে সবারই জানা। তবু কেন তাঁকে পাপ্য সম্মান থেকে বঞ্চিত করা হল, সে বিষয়টি বুঝে উঠতে পারছি না।
নাগরিক ফোরামের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘মুসা ভাইকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে না’ তা হলে কে পাবেন এই মর্যাদা? তিনি সংসদ সদস্য ছিলেন, তা না হয় নাইবা বললাম, কিন্তু একজন মহান মুক্তিযোদ্ধা তাঁর প্রাপ্য সম্মান পাবেন না, এটা স্বাধীন বাংলাদেশের কোন নাগরিকেরই কাম্য নয়।’
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এবিএম মুসার জানাজা শেষে বানিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ কয়েকটি বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেলকে বলেন, ‘আমার জানা মতে শ্রদ্ধেয় মুসা ভাই মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, সংসদ সদস্য ছিলেন। তবুও কেন তাঁকে রাষ্ট্রীয় সম্মান দাফন বা জাতীয় সংসদের দক্ষিন প্লাজায় জানাজা দেওয়া হবে না তা আমার বোধগম্য নয়। বিষয়টি সত্যি আমি বুঝতে পারছি না।’
জাতীয় প্রেসক্লাবে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু জানাজা শেষে বলেন, ‘জাতীয় সংসদের দক্ষিন প্লাজায় জানাজা এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন’ এ সম্মান তাঁর প্রাপ্য। সতরাং তাঁর প্রাপ্য সম্মান কেন তাকে দেওয়া হবে না, তা আমার জানা নেই।’