হেফাজত ধরাশায়ী

Hefajot e Islam হেফাজতে ইসলামসিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ ১৩ দফা দাবি আদায়ে সরকার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে মাঠে থাকতে পারেনি হেফাজতে ইসলাম। তবে আন্দোলনে নেমে তারা যেমন ধরাশায়ী হয় তেমনি সরকার তাদের নিয়ে পড়ে চরম বেকায়দায়। আবারও মুখোমুখি হলে উভয় পক্ষই সঙ্কটে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।তাই সরকারের ক্ষমতা রক্ষা ও হেফাজতের দাবি আদায়ের কৌশল হিসেবে দু পক্ষেই হার্ডলাইন থেকে সরে এসেছে বলে মনে করছেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা।

তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের আন্দোলনে যখন সরকারের টালমাটাল অবস্থা তখন হেফাজতের আন্দোলন ও তাদের প্রতি বিএনপি জোটের সমর্থন আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ করে। হেফাজতের অবরোধকে ঘিরে পরস্পরের বেপরোয়া অবস্থানের কারণে ঢাকায় ব্যাপক ধ্বংসলীলা সাধিত হয়। রাজধানীর বিভিন্ন স্থাপনায় যেমন ভাঙচুরসহ অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে তেমনি সরকারি বাহিনীর হামলায় ব্যাপক আহত নিহতের অভিযোগও রয়েছে। এসব ঘটনায় সারাদেশে সরকারবিরোধী সেন্টিমেন্ট তীব্র হয়। বিএনপি এই ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে সরকার পতনের ছক আটে।

বিশ্লেষকদের দাবি, বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট আবারও সরকার পতন আন্দেলনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ প্রস্তুতির অংশ হিসেবে জোটের পাশাপাশি হেফাজতকেও তাদের মাঠে নামানোর পরিকল্পনায় রয়েছে। হেফাজত মাঠে নামলে পরিস্থিতি সামাল দেয়া সরকারের জন্য কঠিন হয়ে পড়তে পারে। তাই হেফাজত যাতে বিএনপি জোটের সঙ্গে গাটছড়া বাঁধতে না পারে সে জন্য সরকারের আশীর্বাদে অনেক হেফাজত নেতাই জামিনে বেরিয়ে এসেছেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিবেচনায় অনেক মামলা প্রত্যাহারের বিষয়টিও সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে বিবেচনাধীন। বিভিন্ন সময় সমাবেশ করতে না দিলেও এখন সমাবেশ করতে দিচ্ছে। আবার হেোজতও সরকার পদত্যাগের মতো কঠিন দাবি থেকে সরে এসে সরকারের সঙ্গে সখ্যতা স্থাপনের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছে।

এজন্য শুক্রবার  চট্টগ্রাম লালদীঘি ময়দানে,হেফাজত নেতা শাহ আহমদ শফী বলেছেন, হাসিনা সরকার, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ সবাই আমাদের বন্ধু। এদের সঙ্গে কোনো আদাবত (শত্রুতা) নেই। এদের কাউকে কোনো দিন আমি গালি দেইনি।

শফী বলেন, আমরা মুসলমান। আমাদের সঙ্গে কারও আদাবত নেই। একমাত্র আদাবত, যারা আল্লাহর দেশে থেকে আল্লাহর নেয়ামত খেয়ে আল্লাহকে মানে না, তারা আল্লাহর দেশে থাকতে পারবে না।

তিনি বলেন, আমরা ভালো হলে সরকার ভালো হবে। আমরা যদি খারাপ হই সরকার খারাপ হবে। আমাদের ওপর জুলুম অত্যাচার চালাবে।

হেফাজতের আমির সম্মেলনে আসা নেতা-কমীদের উদ্দেশে বলেন, আসুন আমরা আল্লাহর দরবারে তওবা করি। আমরা খারাপ হয়ে গেছি। না হয়তো আমাদের এ দেশ সোনার বাংলা হবে না কেন। আমরা আল্লাহর দরবারে দোয়া প্রার্থনা করি, বাংলাদেশকে যেন সোনার বাংলা বানাতে পারি।

সরকারের প্রতি হেফাজতের দৃষ্টিভঙ্গী পরিবর্তনে কারণ জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিকের সাধারণ সম্পাদক ড.বদিউল  আলম মজুমদার বলেন, হেফাজতের অবস্থান পরিবর্তন সন্দেহজনক। তবে বর্তমান অবস্থা সরকারের সঙ্গে সমঝোতার ইঙ্গিত।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দিন আহমেদ বলেন, হেফাজতের সকল দাবি সমর্থনযোগ্য নয়। তবে হেফাজত যাতে সরকারকে আগের মতো বেকায়দায় ফেলতে না পারে আবার হেফাজতও যাতে সরকারের রোষাণল থেকে বেরিয়ে এসে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে সেজন্য হার্ডলাইন থেকে সরে এসেছে।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ