সরকার তারেকের ফাঁদে পা দেবে না

Anisul Haque আনিসুল হকসিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পাতা ‘ফাঁদে’ সরকার পা দেবে না বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক।

বুধবার বিকেলে ধানমণ্ডির ডব্লিউভিএ মিলনায়তনে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত ‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের ৪৩তম বার্ষিকী: স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে বিরোধিতা রাষ্ট্রদ্রোহিতাতুল্য অপরাধ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা জানান।

সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে তারেক রহমান একটি আবেদন করেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, দেশে গেলে তাকে নির্যাতন-নিপীড়ন করা হবে। আবেদনের প্রেক্ষিতে যুক্তরাজ্য সরকার তারেককে বাংলাদেশ ছাড়া অন্য যেকোনো দেশে যাতায়াতের সুবিধা দিয়েছে।

আইনমন্ত্রী বলেন, এই অবস্থায় তারেক রহমান বিভিন্ন বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য দিয়ে সরকারকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করছেন, যেন সরকার তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করে। কিন্তু আমরা এ ফাঁদে পা দেবো না। তাকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার জন্য ধরবো না।

আলোচনা সভায় অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেন, আপনারা স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পড়বেন। যদি পড়েন তাহলে যারা বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে, তারা ব্যর্থ হবে, তাদের বক্তব্য কেউ গ্রহণ করবে না।

তারেক রহমানকে ইঙ্গিত করে আইনমন্ত্রী বলেন, নিহত সাবেক এক রাষ্ট্রপতিপুত্র সম্প্রতি বয়ান দেওয়া শুরু করেছেন। তার বয়ান শুনলে আমার আগের কথা মনে পড়ে যায়। তার মস্তিষ্ক পরীক্ষা করাতে হবে। তিনি যে কথাগুলো বলছেন তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তিনি দাবি করেছেন, তার পিতা (প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান) দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ও স্বাধীনতার ঘোষক। আমি বলছি, এখানে উপস্থিত কেউ যদি বলেন যে তিনি একাত্তরের আগে মেজর জিয়াউর রহমানের নাম শুনেছিলেন, তবে আমি নিঃসঙ্কোচে তারেকের কথা মেনে নেবো।

৪৩ বছর পর কেন এ বিষয় সামনে আনা হলো জানতে চেয়ে অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেন, ১৯৭৫ থেকে ৭৯ সাল পর্যন্ত কেন তার পিতা এ বিষয় উত্থাপন করেননি। তা মা (খালেদা জিয়া) ১৯৯১ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত কেন এ বিষয় উত্থাপন করেননি। এখন এটা উত্থাপন করা নিশ্চয় উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

আইনমন্ত্রী বলেন, জামায়াত নিখুঁতভাবে কাজ করছে। স্বাধীনতাযুদ্ধে যারা লড়েছেন এবং যারা সে যুদ্ধ দেখেছেন তাদের সংখ্যা ক্রমে কমে আসছে। অনেকে পরলোকগমন করেছেন, অনেকে বয়োবৃদ্ধ হয়ে পড়েছেন। এখন এ ধরনের তত্ত্ব দিয়ে তারা নতুন প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।

এই অপপ্রচার ঠেকাতে সবাইকে প্রতিবাদ করতে হবে উল্লেখ করে অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেন, কারও যদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আকাঙ্ক্ষা থাকে তবে বাংলাদেশকে মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতে হবে। বাংলাদেশের রাজনীতি করতে হলে বাহাত্তরের সংবিধান মেনে চলতে হবে।

সাংবাদিক কামাল লোহানীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির।

সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম। আলোচক ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, সাংবাদিক আবেদ খান, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান, সাংবাদিক শাহীন রেজা নূর, ব্যারিস্টার ড. তুরিন আফরোজ প্রমুখ।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ