জাতিসংঘ সনদে গুম মানবতাবিরোধী অপরাধ : ফখরুল
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ জাতিসংঘ সনদে গুম করাকে ভয়াবহ মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সেই অপরাধে সরকারকে তিনি দায়ী করেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলীর গুম হওয়ার দ্বিতীয় বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, পরিস্কার ভাবে জানতে চাই প্রধান নির্বাহী রিজওয়ানার স্বামী কোথায়? যে পুলিশ অতিদ্রুত সব বের করতে পারে তারা কেন এখনো বের করতে পারেনি। দুই বছর হয়ে গেলেও ইলিয়াস আলীকে বের করা যায়নি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকেও বাদ দিয়ে দেয়া হয়েছে।
ফখরুল বলেন, পুলিশকে বিরোধী দল ঠেকাতে ব্যবহার করা হচ্ছে। তাদের ক্রাইম ঠেকানোর সময় নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি অভিযোগ করেন, সরকার দেশটাকে পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। পুলিশের মধ্যে এখন উৎসব চলছে। বাণিজ্যের উৎসব। অজ্ঞাতনামা আসামি করে ধরে নিয়ে টাকা দিলেই ছেড়ে দেয়া হচ্ছে।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আলীর গুম হওয়ার দু বছর পুর্তি উপলক্ষে বিএনপি এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন খুঁজে বের করা হবে। দুই বছরেও তার কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। অথচ সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা সহানুভুতিমূলক কথা না বলে অনেকেই উস্কানিমূলক কথাও বলেছেন।
তিনি বলেন, এই দু বছরে অসংখ্য মানুষ হারিয়ে গেছে। গত তিন মাসে ঢাকায় ২২ জন এবং সারাদেশে ৬১জন গুম হয়ে গেছে। তাদের কোনো হদিস নেই।
তিনি বলেন, ক্রসফায়ারে কেউ নিহত হলে লাশ পাওয়া যায়, দোয়া করা যায়। কিন্তু যারা গুম হয়ে যায় তারা সেই সান্তনাটুকুও তারা পান না।
তিনি বলেন, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের গাড়ি বহরে হামালার ঘটনায় যাদের আসামি করা হয়েছিল তাদের গুম করে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাদের লাশ পাওয়া যায়। গোট দেশটাকে হত্যাজজ্ঞের রাষ্ট্রে পরিণত করেছে সরকার।
সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, ইলিয়াস আলী, চৌধূরী আলম, রেজওয়ানার স্বামীকে তুলে নিয়ে গেছে সাদা পোশাকধারীরা। এরা যে কোনো মুহূর্তে যে কাউকে ভয়াবহ ভীতিকর সাদা মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যাবে আর বলবে সরকারের লোক।
তিনি বলেন, গুন খুম ও হত্যাকে রোধ এবং জনগণকে জাগ্রত করতে না পারলে আমরা এখানে বসবাস করতে পারবো না। কারণ দেশটা তো আমাদের। এই দেশে তাদের কেউ নেই। তাই এই দেশকে বাসযোগ্য করতে হলে এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
অতিদ্রুত নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে এই সরকারকে বাধ্য করা হবে।
তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, কোনো স্বৈরাচারী একনায়ক ও ফ্যাসিবাদী সরকার কখনো টিকে থাকতে পারেনি। স্বৈরনায়ক ও একনায়কদের যে পরিণতি হয়েছে সেই পরিণতি আপনাদেরও হবে।
আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা, যুগ্ম, মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, মিজানুর রহমান মিনু, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিমউদ্দিন আলম, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন, যুব বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী ও মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবদুস সালাম ।