ছেলে হত্যার দায়ে মায়ের ফাঁসি
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, বাঘেরহাটঃ বাঘেরহাট জেলার মোল্লাহাটে দেড় বছর বয়সের শিশু ছেলেকে পানিতে ফেলে হত্যার দায়ে মাসহ তিনজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার দুপুরে বাগেরহাটের দায়রা জজ আদালতের বিচারক এস এম সোলায়মান এ রায় ঘোষণা করেন। এসময় আদালতের কাঠগড়ায় আসামিরা উপস্থিতি ছিল।
নিহত দেড় বছরের শিশুর নাম শাহাব আলী ওরফে ডিপজল বিশ্বাস।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হচ্ছেন, বাগেরহাট জেলার মোল্লাহাট উপজেলার নগরকান্দি গ্রামের ইকু বিশ্বাসের স্ত্রী ও নিহত শিশু ডিপজলের মা লতিফা বেগম, একই গ্রামের আয়েন উদ্দিন মোল্যার ছেলে মনির মোল্যা ও লুৎফর রহমানের স্ত্রী নাজমা বেগম। দণ্ডপ্রাপ্ত তিন জনের মধ্যে মনির মোল্যা ও নাজমা বেগম সম্পর্কে ভাই-বোন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবারণে জানা গেছে, লতিফা বেগমের সঙ্গে প্রতিবেশী মনির মোল্যার পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ নিয়ে স্বামী ইকু বিশ্বাসের সঙ্গে তাঁর ঝগড়াঝাটি চলছিল। এছাড়া ইকু বিশ্বাসের বাড়িতে থাকা তার বোন মাকু বেগমের কিছু টাকা খোয়া যাওয়ায় লতিফা বেগমকে সন্দেহ করেন তার স্বামী। এ ঘটনায় ইকু বিশ্বাস তার স্ত্রী লতিফা বেগমকে মারধর করেন। এ ঘটনার জেরে আসামিরা ইকু বিশ্বাসের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। ডিপজল বাড়িতে তার মা লতিফা বেগমের কাছে ঘুমিয়ে থাকলেও ২০০৫ সালের ১২ এপ্রিল ভোর থেকে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরের দিন ১৩ এপ্রিল বাড়ির পাশের একটি পুকুর থেকে ভাসমান অবস্থায় ডিপজলের লাশ উদ্ধার করা হয়। এঘটনায় ওই দিন মোল্লাহাট থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা নথিভুক্ত করা হয়। পরে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর ইকু বিশ্বাস বাদী হয়ে ওই বছর ২৯ অক্টোবর মনির মোল্যা ও নাজমা বেগমকে আসামি করে মোল্লাহাট থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মোল্লাহাট থানার তৎকালীন এসআই মো. নজিবুল হক তদন্ত শেষে ২০০৬ সালের ১০ মে এজাহারভুক্ত ওই দুই আসামি ও শিশুটির মা লতিফা বেগমকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। শিশু হত্যা মামলার প্রায় সাড়ে আট বছর পর মামালার বিচার কাজ শেষ হলো।
বাগেরহাট জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী জানান, শিশু ছেলে ডিপজলকে হত্যার দায়ে মা ও দুই প্রতিবেশীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত মনির মোল্যার শ্যালক বাবর আলী জানান, এ রায়ের বিরুদ্ধে তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।